ছোট হচ্ছে চিনের প্রাচীর, রিপোর্ট দুষছে ইট চুরিকে

মাথার উপর ছাদ, আর স্বপ্নের চার দেওয়াল। সেই দেওয়াল তুলতে গিয়েই এ বার হাত পড়েছে চিনের প্রাচীরে। চুরি হয়ে যাচ্ছে মিং রাজবংশে তৈরি হওয়া মহাপ্রাচীরের ইট। চলছে চোরাগোপ্তা বিক্রিবাটাও। সঙ্গে দোসর প্রকৃতির খামখেয়ালিপনা। সব মিলিয়ে ক্রমশ অবলুপ্তির পথে ইউনেস্কোর এই হেরিটেজ সাইট। চিনের এক সংবাদমাধ্যম সম্প্রতি এমনই চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট পেশ করেছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

বেজিং শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৫ ০৩:১৭
Share:

ছবি: টুইটার।

মাথার উপর ছাদ, আর স্বপ্নের চার দেওয়াল। সেই দেওয়াল তুলতে গিয়েই এ বার হাত পড়েছে চিনের প্রাচীরে। চুরি হয়ে যাচ্ছে মিং রাজবংশে তৈরি হওয়া মহাপ্রাচীরের ইট। চলছে চোরাগোপ্তা বিক্রিবাটাও। সঙ্গে দোসর প্রকৃতির খামখেয়ালিপনা। সব মিলিয়ে ক্রমশ অবলুপ্তির পথে ইউনেস্কোর এই হেরিটেজ সাইট। চিনের এক সংবাদমাধ্যম সম্প্রতি এমনই চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট পেশ করেছে। রিপোর্ট মোতাবেক, ইতিমধ্যেই উধাও প্রাচীরের প্রায় ৩০ শতাংশ।

Advertisement

বেজিংয়ের হিসেব বলছে, চিনের মহাপ্রাচীর ৫ থেকে ৮ মিটার উঁচু এবং সাড়ে ৫ হাজার মাইল লম্বা। তবে দেশেরই অন্য একটি পুরাতাত্ত্বিক সংস্থার দাবি, সব শাখা মিলিয়ে এই প্রাচীরের দৈর্ঘ্য অন্তত ১৩ হাজার মাইল। তবে মানুষের হাতে তৈরি সেই আশ্চর্য প্রাচীর যে মানুষেরই কারণে ধ্বংসের মুখে, মানছেন অনেকেই।

কিন্তু প্রাচীর থেকে ইট খুলে নিচ্ছে কারা? আঙুল উঠছে লুলুং ও হেবেই প্রদেশের দরিদ্র মানুষের দিকেই। অভিযোগ, প্রাচীরের দেওয়াল কেটে ইট বের করে এনে দিব্যি নিজেদের ঘরবাড়ি বানানো চলছে এ সব এলাকায়। এরই সঙ্গে আবার এক একটা ইট ৩০ ইয়ানে (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৩০০ টাকা) পর্যটকদের বেচে দেওয়ার অভিযোগও উঠছে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে।

Advertisement

এবং সবটাই প্রশাসনকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়ে। বেজিং-এর দাবি, প্রাচীর থেকে ইট চুরির জরিমানা ৫ হাজার ইয়ান (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৫০ হাজার টাকা)। কিন্তু সেই আইন যে শুধুই খাতায়-কলমে দেদার ইট-চুরির অভিযোগেই তার প্রমাণ।

সংবাদমাধ্যমটির দাবি, দেশের গানসু ও নিংজিয়া প্রদেশ বরাবর প্রাচীরের উত্তর-পশ্চিম অংশের অবস্থাই সব চেয়ে খারাপ। আশঙ্কা, প্রাকৃতিক কারণ ও মানুষের সচেতনতার অভাবে আগামী ২০ বছরের মধ্যেই পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে এই অংশের প্রাচীর। ইতিমধ্যেই প্রাচীরের দৈর্ঘ্য প্রায় ২ হাজার কিলোমিটার কমে গিয়েছে বলে জানানো হয়েছে রিপোর্টে। চিন্তা বাড়িয়েছে ইট-চুরি।

অবশ্য এই চুরির ইতিহাস বহু দিনের। ষাট ও সত্তরের দশকের মাঝামাঝি দেশে সাংস্কৃতিক বিল্পবের সময় বহু বাড়ি ও খামার এই প্রাচীরের ইট খুলেই তৈরি হয়েছিল বলে অভিযোগ। ঝড়-বৃষ্টির কারণে এমনিতেই ইট ও পাথরের তৈরি প্রাচীরের বেশ কিছু অংশ দুর্বল হয়ে পড়েছে বলে দাবি পরিবেশবিদদের। বেশ কয়েকটি টাওয়ার অদূর ভবিষ্যতে ধসে যাওয়ার আশঙ্কাও করছেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন