এই সময়ে কেন চিনা নৌবহর ভারত মহাসাগরের পূর্বাঞ্চলে ঢুকল, তা নিয়ে চিনা সংবাদমাধ্যমে কিছু লেখা হয়নি। —প্রতীকী ছবি।
মলদ্বীপে সাংবিধানিক সঙ্কট চলাকালীনই ভারত মহাসাগরের পূর্বাঞ্চলে বড়সড় নৌবহর পাঠিয়ে দিল চিন। অন্তত ১১টি চিনা যুদ্ধজাহাজ ভারত মহাসাগরের পূর্বাংশে ঢুকেছে বলে চিনা সংবাদমাধ্যম সূত্রেই জানা গিয়েছে। এর সঙ্গে মলদ্বীপ সঙ্কটের সংযোগ রয়েছে, এমন কোনও কথা চিনা সংবাদমাধ্যমে লেখা হয়নি। কিন্তু কোনও পূর্বঘোষিত কর্মসূচি ছাড়া আচমকা ভারত মহাসাগরের ওই অঞ্চলে ১১টি চিনা যুদ্ধজাহাজের ঢুকে পড়াকে কোনও সাধারণ বিষয় হিসেবে দেখছেন না ভারতীয় বিশেষজ্ঞরা।
যে চিনা নৌবহর ভারত মহাসাগরে ঢুকেছে, তাতে ডেস্ট্রয়ার, ফ্রিগেট, অ্যাম্ফিবিয়াস (উভচর) ট্রান্সপোর্ট ডক এবং সাপোর্ট ট্যাঙ্কার রয়েছে বলে চিনা নিউজ পোর্টাল ‘সিনা ডট কম ডট সিএন’ জানিয়েছে।
মলদ্বীপের কাছাকাছি অঞ্চলে চিনা নৌবহর বেশ কয়েক দিন আগেই পৌঁছেছে বলে খবর। চিনের সশস্ত্র বাহিনী পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) গত শুক্রবার ভারত মহাসাগরে নিজেদের নৌবহরের উপস্থিতির কিছু ছবি পোস্ট করে। চিনের নিজস্ব সোশ্যাল মিডিয়া ‘ওয়েইবো’-র সেই পোস্টে পিএলএ জানায়, ভারত মহাসাগরের ওই অঞ্চলে প্রশিক্ষণ এবং উদ্ধারকাজের মহড়া দিচ্ছে তাদের নৌসেনা।
আরও পড়ুন: চাবাহারের সাফল্য কত দিন, চিন্তায় দিল্লি
ঠিক কত দিনের জন্য এই মহড়ার আয়োজন হয়েছে, চিনা নৌবহর ভারত মহাসাগরের ওই অঞ্চলে আর কত দিন থাকবে, সে বিষয়ে পিএলএ-র পোস্ট থেকে সবিস্তারে জানা যায়নি। চিনের যে নিউজ পোর্টালটি নৌবহর পাঠানোর খবর প্রকাশ করেছে, তারাও এ বিষয়ে কিছু লেখেনি। এই সময়ে হঠাৎ ভারত মহাসাগরের পূর্বাঞ্চলে নৌবহর পাঠানো হল কেন, সে সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাব দেয়নি চিনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকও।
মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট আবদুল্লা ইয়ামিনের একাধিক স্বৈরাচারী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সম্প্রতি রায় দিয়েছিল সে দেশের সুপ্রিম কোর্ট। ইয়ামিন রায় মানেননি। তিনি দেশে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে জেলে পাঠিয়ে দিয়েছেন। প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মামুন আবদুল গায়ুমকেও জেলে ভরেছেন ইয়ামিন।
আরও পড়ুন: ‘পাল্টা’ বেল্ট অ্যান্ড রোড সমুদ্রপথে, চিনকে ঘিরতে একজোট চার দেশ
ভারতীয় সীমা থেকে মাত্র ৪০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মলদ্বীপের সঙ্গে দিল্লির সম্পর্ক বরাবরই নিবিড়। প্রেসিডেন্ট ইয়ামিনের স্বৈরাচারী পদেক্ষেপে সে দেশে যে সঙ্কট তৈরি হয়েছে, তার নিরসনে ভারতীয় হস্তক্ষেপ চেয়েছেন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট তথা বিরোধী নেতা নাশিদ। মলদ্বীপে সেনা পাঠানোর জন্য ভারতকে অনুরোধ করেছেন তিনি।
নাশিদের অনুরোধ মেনে ভারত যদি সেনা পাঠায় মলদ্বীপে, তা হলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হবে। সতর্কবার্তা দিয়েছিল বেজিং। সেই বেজিং এ বার নিজেই মলদ্বীপের খুব কাছাকাছি নৌবহর পাঠিয়ে দিল।