চেঁচিয়ে বাঘ ভাগালেন চিনা গ্রামবাসী

হাতে গুলি-বন্দুক তো দূর, একটা লাঠিও ছিল না। তবু হার মানেননি। ঘাবড়েও যাননি। ঠান্ডা মাথায় শুধু চেঁচিয়ে বাজিমাত করেছেন উত্তর চিনের জিলিন প্রদেশের বাসিন্দা কাও বিঙ্গুয়াং।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

বেজিং শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৬ ২২:২২
Share:

হাতে গুলি-বন্দুক তো দূর, একটা লাঠিও ছিল না। তবু হার মানেননি। ঘাবড়েও যাননি। ঠান্ডা মাথায় শুধু চেঁচিয়ে বাজিমাত করেছেন উত্তর চিনের জিলিন প্রদেশের বাসিন্দা কাও বিঙ্গুয়াং।

Advertisement

গ্রামের লোকজন এখন তাই ধন্য ধন্য করছে কাওকে। ভাগ্যিস অমন বাজখাঁই গলা ছিল! নইলে কি প্রাণে বাঁচত লোকটা। খোদ বাঘের মুখের গ্রাস হতে হতে ফিরে আসা! এ কি চাট্টিখানি কথা। কোনও অস্ত্র নয়, হাতাহাতি নয়, স্রেফ চেঁচিয়ে বাঘ ভাগানো! শুনতে অবাক লাগলেও তেমনটাই ঘটেছে কাওয়ের সঙ্গে।

দিন পাঁচেক আগের কথা। জিলিন প্রদেশের চুনহুয়া শহর ছাড়িয়ে হুনচুনে থাকেন কাও। বন্ধু শিয়াং লাওকির সঙ্গে কাছাকাছি জঙ্গলে গিয়েছিলেন কিছু শাকসব্জি জোগাড় করতে। জঙ্গলে ঢুকে দু’জনে ছড়িয়ে পড়েন দু’দিকে। জঙ্গলে আতিপাতি করে সব্জি খুঁজতে খুঁজতে হঠাৎ যেন কার পায়ের শব্দ। কাও ভাবলেন শিয়াং এল বুঝি। কিন্তু পিছন ফিরতেই চক্ষু ছানাবড়া। জনমনিষ্যির চিহ্ন নেই। দাঁড়িয়ে সাক্ষাৎ মৃত্যু! বাঘ বাহাদুরের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব মাত্র ২০ মিটার।

Advertisement

কাওয়ের কথায়, ‘‘মনে হচ্ছিল সব শেষ।’’ আগে কখনও এত কাছ থেকে বাঘ দেখেননি। স্থির চোখে তাকিয়ে তাঁর দিকে। ঘোর বিপদেও কাওয়ের মনে পড়ে গেল একটা কথা। গ্রামে এসে মাঝে মাঝেই বন দফতরের লোকজন বলে যায়, ‘বাঘ দেখে দৌড়বেন না। সব চেয়ে ভাল হল, চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকা। তার পরে ওর চোখের দিকে স্থির ভাবে তাকিয়ে চেঁচাতে থাকবেন। তাতে বাঘ ভয় পেয়ে যেতে পারে। বাঘের সামনে মাথা নোয়ানো কখনও উচিত নয়। ও সব করলেই বাঘের মনে হবে হাতের কাছেই ওর শিকার।’ এই পরামর্শ মনে পড়তেই আর কিছু না ভেবে শিয়াংয়ের নাম ধরে প্রাণপণ চেঁচাতে শুরু করেন কাও। তার পরেই কেল্লাফতে। কাও অবাক হয়ে দেখলেন, বাঘবাবাজি তার দিকে কয়েক সেকেন্ড তাকাল। তার পরে মুখ ঘুরিয়ে লাফ দিয়ে সে সেঁধিয়ে গেল জঙ্গলের ভেতরে।

বাঘ পালাতেই কাও আর এক মুহূর্ত সময় নষ্ট করেননি। দৌড়ে চলে যান নিজের মোটরসাইকেল খুঁজতে। তার পর সোজা চুনহুয়ার পথে। এক বারও আর থামেননি। কাও পরে জানান, ছুটতে গিয়ে বেশ কয়েক বার পড়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু বাঘের উপস্থিতি ভুলিয়ে দিয়েছিল সবই। গ্রামে পৌঁছে পুলিশকে সব জানান কাও। পরে তারা জঙ্গলে গিয়ে খুঁজে বের করে কাওয়ের বন্ধু শিয়াংকে। বাঘের দেখা মেলেনি।

চুনহুয়া শহরটা রুশ সীমান্ত ঘেঁষা। হুনচুনে ন্যাশনাল সাইবেরিয়ান টাইগার নেচার রিজার্ভ-ও রয়েছে। এখানে তাই মাঝেমধ্যেই বাঘের হাতে জখম হয় বাড়ির পোষ্যরা। তার কোনও একটির সঙ্গেই হয়তো মোলাকাত হয়েছিল কাওয়ের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন