COVID19

Coronavirus: কোভিড বিধি শিথিল ব্রিটেনে, উদ্বিগ্ন একাংশ

করোনা টিকার বুস্টার ডোজ়, অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ আর ওমিক্রন-আক্রান্তদের মধ্যে গুরুতর অসুস্থ বা মৃতের সংখ্যা এ বার সে ভাবে বাড়েনি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

লন্ডন শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২২ ০৬:৫২
Share:

ফাইল চিত্র।

ব্রিটেনে বাড়ি থেকে কাজের নির্দেশিকা উঠিয়ে নেওয়া হয়েছিল গত সপ্তাহেই। আজ থেকে মাস্ক পরা, কোভিড পাসের ব্যবহার-সহ একগুচ্ছ বিধি-নিষেধও তুলে নিল বরিস জনসনের সরকার।

Advertisement

ওমিক্রনের বাড়বাড়ন্তের কারণে গত ডিসেম্বরে যে কড়া কোভিড বিধি বা ‘প্ল্যান বি’ জারি করা হয়েছিল, তা তুলে নিচ্ছে বরিসের সরকার। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, পরিবর্তে গত বছর জুলাইয়ে চালু হওয়া ‘প্ল্যান এ’ বা তুলনামূলক নরম কোভিড নীতিতে ফিরতে চায় তারা। আগামী দিনে কোভিড-১৯-কে সঙ্গে নিয়েই বাঁচার বার্তা দিচ্ছে সরকার।

করোনা টিকার বুস্টার ডোজ়, অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ আর ওমিক্রন-আক্রান্তদের মধ্যে গুরুতর অসুস্থ বা মৃতের সংখ্যা এ বার সে ভাবে বাড়েনি। আর এই তিনের ভরসাতেই বরিসের সরকার কোভিড বিধি রদের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। আগামী দিনে সরকারের কোভিড-নীতি কী হতে চলেছে, তার খসড়া তৈরি করেছে ব্রিটেনের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা সংস্থা। তাতে বলা হয়েছে, দেশ জুড়ে লকডাউন বা সকলের জন্যে কড়া নিয়ম জারির বদলে নজর দেওয়া হবে বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে। করোনা সংক্রমণের ফলে যাঁদের ঝুঁকি বেশি তাঁদের আলাদা করে নজরে রাখা হবে।

Advertisement

প্রধানমন্ত্রী জনসনের এই সিদ্ধান্তে ব্রিটেনের রাজনৈতিক মহলেও আলোড়ন শুরু হয়েছে। গত বছর ব্রিটেনে লকডাউন চলাকালীন নিয়ম ভেঙে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে একাধিক পার্টির খবর সম্প্রতি প্রকাশ্যে আসায় হইচই পড়ে গিয়েছে। এ হেন আচরণের প্রেক্ষিতে বরিসের পদত্যাগের দাবি তুলেছেন বিরোধীরা। বিষয়টি নিয়ে দলের মধ্যেও অসন্তোষের সুর শোনা গিয়েছে। আসলে কোভিড বিধির কড়াকড়ি নিয়ে ব্রিটেনবাসীর একাংশ ক্ষুব্ধ। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, এই অবস্থায় নিয়মের ফাঁস তুলে নিয়ে, জীবনকে কিছুটা স্বাভাবিকের কাছাকাছি এনে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ প্রশমিত করতে চাইছেন বরিস।

শাসক দল কনজারভেটিভ পার্টির নেতা অ্যান্ডু ব্রিজেন বলেছেন, ‘‘কোভিড বিধি চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার আর প্রয়োজন নেই। রাজনৈতিক ভাবেও তা অসম্ভব।’’ সরকারের কোভিড মডেলিং দলের শীর্ষ কর্তা গ্রাহাম মেডলি বলেছেন, ‘‘দেশে ১১ বছরের উপরে ৮৩ শতাংশের টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। ৬৩ শতাংশ বুস্টার ডোজ় পেয়েছেন। আমার আশা এ বারের তুলনায় আগামী বছর জানুয়ারির পরিস্থিতি অনেকটা ভাল হবে।’’

গত সপ্তাহে কোভিড-নীতি রদ নিয়ে এক বৈঠকে বরিস নিজেও বলেন, ‘‘অতিমারি থেকে মহামারির পর্যায়ে নেমে আসছে কোভিড।’’ তিনি জানান, মার্চের পরে বাধ্যতামূলক বিচ্ছিন্নবাসের নিয়মও তুলে নেওয়ার ভাবনা রয়েছে। প্রয়োজনে সেই দিন আরও এগিয়ে আনা যাবে।

তবে সরকারের এই সিদ্ধান্তে আরও চিন্তা-ভাবনার প্রয়োজন আছে বলে মনে করছেন চিকিৎসক-বিজ্ঞানীদের একাংশ। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজিস্ট অরিস কাটজ়োরাকিসের মতে, আগামী দিনে ম্যালেরিয়া বা পোলিয়োর মতো কোভিড অতিমারিতে পরিণত হতে পারে। তবে তার ক্ষতিকর প্রভাব যে কমে যাবে সে কথা এখনই নিশ্চিত করে বলা যায় না। তিনি বলেছেন, ‘‘নীতি নির্ধারকেরা যখন অতিমারির নাম করে নিজেদের দায়িত্ব ঝেড়ে ফেলতে চান তখন খুব হতাশ লাগে।’’ লিভারপুলের চিকিৎসক ম্যাথু অ্যাশটনের মতে, ‘‘করোনাকে সঙ্গে নিয়ে বাঁচা নয়, করোনার সঙ্গে নিরাপদে, সাবধানে বাঁচতে হবে।’’

জাপানের ‘কিয়োটো প্রিফেকচারাল ইউনিভার্সিটি অব মেডিসিন’-এর একটি গবেষণায় জানা গিয়েছে, মানবত্বকে করোনাভাইরাসের ওমিক্রন স্ট্রেনটি ২১ ঘণ্টারও বেশি সজীব অবস্থায় থাকতে পারে। আগের আলফা, বিটা, ডেল্টা বা গামা স্ট্রেনের তুলনায় যা অনেকটাই দীর্ঘ। সেই কারণে ওমিক্রন এত বেশি সংক্রামক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন