পুরনো-নতুন: রাউল কাস্ত্রো ও মিগেল ডিয়াজ কানাল। ছবি; এএফপি।
সময়ের দাবি মেনেই এ বার বদলের পথে হাঁটতে চাইছে ‘কমিউনিস্ট’ কিউবা। ফিদেল কাস্ত্রো জমানার সংবিধান পাল্টে এখন লক্ষ্য ‘সমাজবাদ’ প্রতিষ্ঠা। তাই এত দিন যে ব্যক্তিগত সম্পত্তিকে পুঁজিবাদের নিদর্শন বলে মনে করা হত, এ বার তাকেই সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে চলেছে কাস্ত্রোর দেশ।
কাল থেকে কিউবার পার্লামেন্টে নয়া সংবিধানের খসড়া প্রস্তাবে আলোচনা শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই সমলিঙ্গ ও সমকামী বিয়ের প্রস্তাবে সমর্থন মিলেছে। অভিযোগ, ১৯৫৯-এ কিউবা বিপ্লবের পরে ক্ষমতায় আসা ফিদেল সমকামীদের শ্রম শিবিরে পাঠাতেন। পরে তিনি নিজেই কৃতকর্মের জন্য দুঃখপ্রকাশ করেছিলেন। কূটনীতিকেরা বলছেন, এ বার সংবিধান পাল্টে প্রায়শ্চিত্ত করছে তাঁর দেশ।
‘কমিউনিস্ট’ ছাতা মাথায় রেখেও চিন কিংবা ভিয়েতনাম যে ভাবে মুক্ত বাজারে ঢুকে পড়েছে, সেই পথও খোলা রাখতে চাইছে কিউবা। অর্থনীতির গতি বাড়াতে অনেক ব্যবসাই বেসরকারি হাতে ছাড়া হতে পারে। বিদেশি বিনিয়োগেও উৎসাহ দেওয়ার কথা রয়েছে খসড়ায়।
তা হলে কি এ বার বেজিং কিংবা সাংহাইয়ের মতো হাভানাতেও ফেরারি-চড়া কমিউনিস্ট নেতাদের দেখা যাবে? ফিদেলের ভাই রাউল সরে দাঁড়ানোর পরে সদ্য প্রেসিডেন্ট হয়ে আসা মিগেল ডিয়াস-কানেলের দাবি, কড়া নজর থাকবে সে দিকেও।
কিউবার জাতীয় পরিষদের প্রেসিডেন্ট এস্তোবান লাসো দাবি করেছেন, ‘‘আমরা আদর্শ থেকে বেরিয়ে আসছি, এমনটা মনে করার কারণ নেই।’’ জাতীয় পরিষদ অনুমোদন দিলে খসড়াটির বিষয়ে জনমত চাওয়া হবে। পরে চূড়ান্ত প্রস্তাবটি নিয়ে গণভোট হবে কিউবায়।
চলতি বছরের এপ্রিলে ভাবশিষ্য মিগেলের হাতে ব্যাটন দিয়ে যান রাউল। ২০২১ পর্যন্ত পার্টির প্রধান পদে অবশ্য থাকছেন তিনিই। রাউলই সংবিধান সংস্কার কমিটির প্রধান। অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে ইনিই ২০০৮ থেকে সংস্কার শুরু করেছিলেন। ২০১০ থেকে কয়েক লক্ষ নাগরিক রেস্তরাঁ, বিউটি পার্লার জাতীয় ব্যক্তিমালিকানাধীন ব্যবসায় স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করছেন বলেও খবর।
কাউন্সিল অব স্টেট ও কাউন্সিল অব মিনিস্টার্স প্রধানের পদ থেকে প্রেসিডেন্টকে সরিয়ে প্রধানমন্ত্রীর স্বাধীন পদ তৈরির কথা ভাবা হচ্ছে। যিনি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সমান দায়িত্ব ভাগ করে নেবেন। ভাবা হচ্ছে প্রেসিডেন্টের বয়স ও মেয়াদ নিয়েও। প্রথম বার প্রেসি়ডেন্ট হওয়ার ক্ষেত্রে বয়স ৬০-এর বেশি হলে চলবে না। মেয়াদ হবে দু’দফায় সর্বোচ্চ ১০ বছর।