International News

করোনা আতঙ্কেও মার্কিনিরা তাঁদের নিয়মানুবর্তিতায় অবিচল

রেস্তরাঁর মালিকরা নিজেরাই রেস্তরাঁ বন্ধ করে দিয়েছেন। স্কুল, কলেজ তো বন্ধই। তবে সব ক্লাস অনলাইনে হচ্ছে। পরীক্ষাও হচ্ছে  অনলাইনে।

Advertisement

রুমি বাগচী

লস অ্যাঞ্জেলেস শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২০ ১২:৩৫
Share:

করোনা সংক্রমণ রুখতে জোর প্রয়াস আমেরিকায়। ছবি- রয়টার্স।

লস অ্যাঞ্জেলেসের বিভিন্ন দোকান ঘুরে এলাম। না, খাবার কিনতে নয়। প্রচুর খাবার বাড়িতে রয়েছে। যা শুনেছিলাম সেটা নিজে চোখে দেখতে গিয়েছিলাম।

Advertisement

এই বিপন্ন সময়ে অনেকেই জন্য নানা রকম উপযোগী তথ্য শেয়ার করছেন। খুব ভাল সেটা। তবু দেখছি, কিছু কিছু দেশে অনেক মানুষ নিয়ম মানছেন না। ‘লক ডাউন’-এর মানে বুঝতেই চাইছেন না। প্রকাশ্যে বিনা কারণে জমায়েত করছে্ন।

তাই এই নিয়ম মানার ব্যাপারটায় খানিক উপলব্ধি আনার জন্যই এই লেখা। ঠিক যেমন, বাবা-মায়েরা বলেন, “দ্যাখ, আশু কেমন টিভি না দেখে, আড্ডা না মেরে মন দিয়ে পড়াশুনো করে। তুই-ও একটু কর।“

Advertisement

লস অ্যাঞ্জেলেসের বাড়িতেই ছিলাম গত কয়েক দিন। খবরে রোজ শুনছিলাম, আমেরিকায় সমস্ত পাবলিক প্লেস বন্ধ হয়ে গিয়েছে। জামাকাপড়ের দোকান বন্ধ হয়ে গিয়েছে। রেস্তরাঁর মালিকরা নিজেরাই রেস্তরাঁ বন্ধ করে দিয়েছেন। স্কুল, কলেজ তো বন্ধই। তবে সব ক্লাস অনলাইনে হচ্ছে। পরীক্ষাও হচ্ছে অনলাইনে। ডাক্তারাও ফোনে পরামর্শ দিচ্ছেন।

আরও পড়ুন- করোনা প্রতিরোধী হাইড্রক্সি ক্লোরোকুইনের রফতানি নিষিদ্ধ করল কেন্দ্র

আরও পড়ুন- সরকার চাইলে ইডেনে কোয়রান্টিন কেন্দ্র, প্রস্তাব দিলেন সৌরভ​

কিন্তু মেডিকেল সেন্টারগুলো আর খাবারের দোকানগুলো সব খোলা। তবে, সেখানে কোথাও পাঁচ জন, বিশাল দোকান হলে দশ জনের বেশি এক সঙ্গে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। খাবার অঢেল আছে। সেখানে কোনও অসুবিধে নেই। কারণটা হচ্ছে, বেশি লোক এক সঙ্গে হওয়াটা নিরাপদ নয়, তাই। আর সেই জন্য বাকি মানুষ বাইরে লাইন করে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। কোনও কিছুর জন্য এই ভাবে লাইনে দাঁড়ানো এঁদের অভ্যাসে একেবারেই নেই, তবু এখন দাঁড়াচ্ছেন। শুধু তাই নয়, এই লাইনেও সবাই ডাক্তারি নিয়ম মেনে ছয় ফুট দূরত্ব রক্ষা করছেন। ভেতরের পাঁচ জন অন্য দরজা দিয়ে বেরিয়ে গেলে, তবেই অন্যরা ঢুকছেন।

করোনা সংক্রমণ রোখার জোর প্রয়াস আমেরিকায়। -নিজস্ব চিত্র।

ষাট বছর বা তার বেশি বয়স্কদের জন্য সকালবেলাটা রাখা হয়েছে। সেই সময় অন্যরা যেতে পারবেন না। কারণ, বয়স্কদের যেন অসুবিধে না হয়!

রাস্তায় গাড়ি আছে. কিন্তু কোথাও কোনও জমায়েত নেই। বয়স্করাও খাবার কিনতে দোকানে আসছেন। যদিও বহু আগে থেকেই মুদির বাজার অনলাইনে হয় তবু হয়তো নিজে কেনার শখ। কাউন্টারে স্যানিটাইজার, আলকোহোলের টিস্যু রাখা। যাঁরা কিনছেন তাঁদের হাতে গ্লাভস, মুখে মাস্ক। এমনকি গাড়িও চালাচ্ছেন গ্লাভস পরে।

সবচেয়ে বেশি এই ভাইরাস-প্রকোপে পড়েছে যে কয়েকটি দেশ, আমেরিকা তার মধ্যে অন্যতম। মানুষের মতোই আমেরিকার ঠান্ডা আবহাওয়া এই ভাইরাসটির খুব পছন্দ। তাই ছেড়ে যেতে চাইছে না। তবু করোনা আতঙ্ক আমেরিকানদের চরিত্রে এতটুকু টাল খাওয়াতে পারেনি। ওঁদের দেখে নিয়মভাঙা দেশগুলো একটু শিখবে, এটুকু তো আশা করাই যায়। মার্কিনিদের দেখে বাকি বিশ্ব ভ্যালেন্টাইনস ডে, মাদার্স ডে, ফাদার্স ডে পালন শিখেছে। ব্যাচেলর্স পার্টি দেওয়া শিখেছে। ওঁদের দেখে একটু নিয়মানুবর্তিতা শিখলে তো নিজেদেরই মঙ্গল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন