লিউ ইয়ংবিয়ায়ো
খুন করেছিল চার জনকে। কিন্তু ধরা পড়েনি বহু বছর। উল্টে সেই খুনের অভিজ্ঞতা ভাঙিয়ে লিখেছে একাধিক ক্রাইম থ্রিলার। লেখক হিসেবে জনপ্রিয় হয়েছিল। জিতেছিল পুরস্কারও। সম্প্রতি সেই চিনা লেখক, ৫৩ বছর বয়সি লিউ ইয়ংবিয়ায়ো এবং তার সহকারী ওয়াং মৌমিংকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত।
১৯৯৫-এর ২৯ নভেম্বর পূর্ব চিনের হুজ়ু শহরের গেস্ট হাউসে হামলা চালিয়েছিল লিউরা। লুটপাঠ করে খুন করে সেই গেস্ট হাউসের এক বাসিন্দাকে। তার পর প্রমাণ লোপাট করতে গেস্ট হাউসের মালিক এক বৃদ্ধ দম্পতি ও তাঁদের কিশোর নাতিকেও খুন করেছিল। বহু দিন তদন্ত চালিয়েও অপরাধী কে, বুঝতে পারেনি পুলিশ।
ইতিমধ্যে গোয়েন্দা কাহিনি লিখতে শুরু করেছে লিউ। বাস্তবধর্মী সেই সব গল্প-উপন্যাস লিউকেখ্যাতির চুড়োয় পৌঁছেও দিয়েছে। দেশ-বিদেশে বেশ কয়েকটি খেতাবও জিতে নিয়েছে সে।
ছবিটা পাল্টায় গত বছর। নতুন কিছু সূত্র গোয়েন্দা-পুলিশের হাতে আসে। ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া সিগারেটের টুকরোর ডিএনএ পরীক্ষায় খোলে রহস্যের জট। দু’দশক আগে তামাদি হয়ে যাওয়া তদন্ত ফের শুরু হয়। খুনের ২২ বছর পরে, ২০১৭-র অগস্টে পুলিশ যখন নানলিং-এ লিউয়ের বাড়িতে কড়া নাড়ে তখন লেখক নিজেই দরজা খুলে বলেছিল, ‘‘আপনাদের জন্যই এত দিন অপেক্ষা করছিলাম!’’ প্রথমেই দোষ কবুল করে সে। জানায় সেই খুনে তার সহকারী ওয়াংয়ের কথাও। তাকে ধরা হয় তার সাংহাইয়ের বাড়ি থেকে। গ্রেফতারের পরে এক সাক্ষাৎকারে লিউ বলেছিল, ‘‘অত্যন্ত বীভৎস ভাবে খুনগুলো করেছিলাম। আমার অন্তত ১০০ বার প্রাণদণ্ড হওয়া উচিত।’’ জানায়, তার বেস্টসেলার উপন্যাসগুলোয় খুনের যে পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ আছে, তা নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই পাওয়া।