গাড়ি-বোমা বিস্ফোরণ দামাস্কাসে
একসঙ্গে তিন-তিনটে গাড়ি নিয়ে বড়সড় হামলার ছক ছিল আত্মঘাতী জঙ্গিদের। ধাওয়া করে দু’টো গাড়িকে পুলিশ ধরে ফেললেও শেষরক্ষা হল না। পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে এক জঙ্গি গাড়ি সমেত নিজেকে উড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে। আজ সকালে সিরিয়ার রাজধানী দামাস্কাসে ওই গাড়ি বোমা বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে একুশ জনের। আহতের সংখ্যা ১২। যদিও সিরীয় পুলিশের দাবি, আজকের হামলায় মাত্র সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু সিরিয়ায় ব্রিটিশ মানবাধিকার পর্যবেক্ষণকারী সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, নিহতের সংখ্যাটা কমপক্ষে ২১। তার বেশিও হতে পারে, কারণ গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন অনেকেই।
গত ছ’বছরেরও বেশি সময় ধরে গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত সিরিয়ার একটা বড় অংশে অসংখ্য হামলা চালিয়েছে ইসলামি জঙ্গি সংগঠন আইএস। কিন্তু দামাস্কাস শহরটা এখনও প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের শাসনেই রয়েছে। ঘনঘন জঙ্গি হামলাও হয় না এ শহরে। কোনও জঙ্গি সংগঠন এখনও পর্যন্ত আজকের হামলার দায় স্বীকার করেনি। যদিও গোয়েন্দারা মনে করছেন, ইরাকের পরে গোটা সিরিয়ায় কোণঠাসা আইএস এখন যে কোনও ভাবে শেষ মারণ কামড় দেওয়ার চেষ্টা করছে। আর তার জন্যই বাছা হয়েছিল দামাস্কাসকে। তাই আজকের ঘটনার জন্য প্রাথমিক ভাবে সন্দেহ করা হচ্ছে আইএসকেই।
রমজান মাসের শেষে সিরিয়ায় আজই ছিল প্রথম কর্মব্যস্ত দিন। দামাস্কাসের ওল্ড সিটিতে তাই বড় রকমের হামলার ছক কষেছিল জঙ্গিরা। সিরীয় পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, বহু লোকের সমাগম রয়েছে, এমন জায়গাকেই নিশানা করেছিল তারা। জঙ্গিদের ছক বুঝতে পেরে গাড়িগুলোর পিছনে ধাওয়া করে পুলিশ। দু’টো গাড়িকে ধরে বোমা নিষ্ক্রিয়ও করে ফেলে তারা। কিন্তু একটি গাড়ি তাহরির স্কোয়ারে ঢুকে পড়ে। তার চালক নিজেকে উড়িয়ে দেয়। মুহূর্তের মধ্যে হাহাকার আর আর্তনাদে বদলে যায় গোটা তাহরির স্কোয়ারের ছবি। বহু গাড়ি পুড়ে খাক হয়ে গিয়েছে বিস্ফোরণের ফলে। তাহরির স্কোয়ার জুড়ে এখন রক্ত আর ধাতব ধ্বংসস্তূপের চিত্র। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ঘটনাস্থল থেকে বহু দূরের বাড়িতেও ভেঙে পড়েছে জানলার কাচ।
তেমন ভাবে জঙ্গি উপদ্রুত না হলেও গত মার্চেই দু’টো বড় হামলা হয়েছে দামাস্কাসে। ১১ মার্চ হামলা চালায় আল কায়দার শাখা সংগঠন তাহরি আল-শাম। মারা যান ৪০ জন। নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই ছিলেন ইরাক থেকে আসা শিয়া পুণ্যার্থী। চার দিনের মাথায় ওল্ড সিটির কোর্ট চত্বরে জোড়া বিস্ফোরণ ঘটায় আইএস জঙ্গিরা। সে বার মারা গিয়েছিলেন ৩১ জন।