গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে ৯৭ জন ভারতীয় শরণার্থী আটক রয়েছেন আমেরিকায়। তাঁদের বেশির ভাগই পঞ্জাবের মানুষ। অন্তত ৪০/৪৫ জন ভারতীয় নাগরিক আটক রয়েছেন দক্ষিণ আমেরিকার নিউ মেক্সিকোয়। যাঁদের মধ্যে কম করে ২৫ জন এক মাসেরও বেশি আটক রয়েছেন। বাকিরা আটক হয়েছেন সপ্তাহখানেক আগে। ৫২ জন ভারতীয় আটক রয়েছেন ওরেগনে। যাঁদের বেশির ভাগই শিখ ও খ্রিস্টান। মার্কিন অভিবাসন দফতরের কাছ থেকে খবর পেয়ে ওয়াশিংটনের ভারতীয় দূতাবাস ওই আটক ভারতীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।
ভারতীয় দূতাবাসের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘ওরেগনের যে ডিটেনশন সেন্টারে ওঁরা (ভারতীয় অনুপ্রবেশকারীরা) আটক রয়েছেন, কনস্যুলার অফিসের কর্তারা ইতিমধ্যেই সেখানে গিয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন। আরেকটি দলও যাচ্ছে দক্ষিণ আমেরিকার নিউ মেক্সিকোর ডিটেনশন সেন্টারে। পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা হচ্ছে।’’
মার্কিন অভিবাসন দফতরের এক কর্তার বক্তব্য, ভারতীয় অনুপ্রবেশকারীদের বেশির ভাগই আমেরিকায় আশ্রয় চেয়েছেন। ভারতীয় অনুপ্রবেশকারীদের অভিযোগ, তাঁরা নিজের দেশে (ভারত) ‘হিংসা ও বিদ্বেষের শিকার’ হয়েছেন।
নর্থ আমেরিকান পাঞ্জাবি অ্যাসোসিয়েশন (এনএপিএ)-এর তরফে সতনাম সিংহ চাহালের অভিযোগ, হাজার হাজার ভারতীয় অনুপ্রবেশের অভিযোগে আটক রয়েছেন আমেরিকার জেলগুলিতে। যাঁদের বেশির ভাগই পঞ্জাবের মানুষ। ২০১৩, ২০১৪ এবং ২০১৫ সালে ২৭ হাজারেরও বেশি ভারতীয়কে অনুপ্রবেশের দায়ে আটক করা হয় মার্কিন মুলুকে। যাঁদের মধ্যে ৪ হাজার মহিলা ও সাড়ে তিনশো শিশুও রয়েছেন। এঁদের অনেকেই এখনও আমেরিকায় জেল খাটছেন। শুধু ২০১৫ সালেই অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে ৯০০ জন ভারতীয়ের জেল হয়।
আরও পড়ুন- পিছু হঠলেন ট্রাম্প, শরণার্থী শিশুরা ফিরবে মা, বাবার কাছে
আরও পড়ুন- অমাবস্যার কারা
চাহালের কথায়, ‘‘পঞ্জাবের এক শ্রেণির রাজনীতিক, কিছু আমলা আর পাচারকারীদের যোগসাজশেই এই ধরনের ঘটে চলেছে। ওঁরা মার্কিন মুলুকে থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে মাথাপিছু ৩৫ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা নিয়ে পঞ্জাব থেকে নিয়মিত ভাবে ওই মানবপাচার চালিয়ে যাচ্ছেন।’’ এই প্রথায় রাশ টানার জন্য চাহাল পঞ্জাব সরকারের কাছে পাচার আইন আরও কঠোর করার আর্জি জানিয়েছেন।
অভিবাসন সংক্রান্ত আইনজীবী আকাঙ্খা কালরা বলেছেন, ‘‘মূলত পঞ্জাব ও গুজরাত থেকেই এই পাচার চলছে।’’