dhaka

জেল হত্যার আসামিকে হাতে পেল না ঢাকা

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় ৪ নেতাকে হত্যা মামলার অন্যতম আসামি এম খায়রুজ্জামান আমেরিকায় চলে গিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৬:৫৯
Share:

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার।

মালয়েশিয়ায় গ্রেফতার হওয়ার পরেও আইনি জটে বাংলাদেশ হাতে পেল না ১৯৭৫-এ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় ৪ নেতাকে হত্যা মামলার অন্যতম আসামি এম খায়রুজ্জামানকে। পুত্রাজায়ার আদালত বুধবার তাঁর প্রত্যর্পণে স্থগিতাদেশ দেওয়ার পরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রাক্তন এই মেজরকে মুক্তি দিয়েছে মালয়েশিয়া আদালত। বৃহস্পতিবার তিনি আমেরিকায় চলে গিয়েছেন।

Advertisement

বাংলাদেশে ১৯৭৫-এর ১৫ অগস্ট রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করে ক্ষমতা দখলের পরে সেনাবাহিনী মুজিব সরকারের চার গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে কারাবন্দি করে। এঁরা দেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ, মন্ত্রিসভার সদস্য ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলি ও রাজশাহির এমপি এ এইচ এম কামারুজ্জামান। শেখ মুজিব পাকিস্তানে কারাবন্দি থাকায় বাংলাদেশের স্বাধীনতার লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এই চার জন। গ্রেফতারের পরে ৩ নভেম্বর গভীর রাতে সেনাদের একটি দল ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারের ঢুকে চার নেতাকে এলোপাথাড়ি গুলি করে হত্যা করে। এই বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন শেখ মুজিবকে গুলি করে মারা রিসেলদার মোসলেউদ্দিন। পরবর্তী জিয়াউর রহমানের সরকার খুনিদের সরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে বসায়। খায়রুজ্জামানকে বিদেশ মন্ত্রকে নিয়োগ করা হয়। আওয়ামি লিগ সরকার ১৯৯৬-এ ক্ষমতায় এসে তাঁকে ফিলিপিন্স থেকে ডেকে পাঠিয়ে পদচ্যুত এবং গ্রেফতার করে। আবার ২০০১-এ খালেদা জিয়ার সরকার ফিরে তাঁকে জেল হত্যা মামলা থেকে রেহাই দিয়ে বিদেশ মন্ত্রকের ডিজি পদে নিয়োগ করে। এর পরে রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানে ক্ষমতা দখলকারী তত্ত্বাবধায়ক সরকার খায়রুজ্জামানকে মালয়েশিয়ায় হাই কমিশনার নিযুক্ত করে।

আওয়ামি লিগ সরকার ফের ২০০৯-এ ক্ষমতায় এসে তাঁকে ডেকে পাঠালে তিনি আর ফেরেননি। তার বদলে রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার শাখায় আবেদন করে শরণার্থী কার্ড বানিয়ে নেন। তাঁর পরিবার আমেরিকায় থাকলেও খায়রুজ্জামান মালয়েশিয়ায় বসবাস করছেন জেনে বাংলাদেশ সরকার তাঁকে প্রত্যর্পণের আবেদন জানায়।

Advertisement

পাঁচ দিন আগে অভিবাসন আইন ভাঙার দায়ে খায়রুজ্জামানকে গ্রেফতার করে মালয়েশিয়ার পুলিশ। কিন্তু তাঁর পরিবার আদালতে জানায়, জেল হত্যা মামলা থেকে খায়রুজ্জামান রেহাই পাওয়া সত্ত্বেও রাজনৈতিক কারণে তাঁকে ফেরাতে চাইছে বাংলাদেশ সরকার। সে দেশে তাঁর প্রাণ বিপন্ন হতে পারে। তা ছাড়া, রাষ্ট্রপুঞ্জের শরণার্থীর কার্ড পাওয়ার পরে তিনি আর বাংলাদেশের নাগরিক নন। আদালত তাঁর প্রত্যর্পণে স্থগিতাদেশ দেওয়ায় মালয়েশিয়া সরকার খায়রুজ্জামানকে ছেড়ে দেয়। মুক্তি পেয়ে তিনি দাবি করেন, মিথ্যা মামলায় তাঁকে ফাঁসানো হয়েছিল। কোনও হত্যাকাণ্ডে তিনি যুক্ত নন। তার পরে এ দিন তিনি আমেরিকা ফিরে গিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন