একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে ফের কূটনৈতিক সংঘাতে জড়াল পাকিস্তান ও বাংলাদেশ। বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রক আজ ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তানের ভারপ্রাপ্ত হাই কমিশনার আহমেদ হোসাইন দায়োকে ডেকে পাঠিয়ে জানিয়ে দিল, তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে ইসলামাবাদের কোনও মন্তব্য বা টিপ্পনি বরদাস্ত করা হবে না।
ঘটনার সূত্রপাত দিন কয়েক আগে। একাত্তরে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ে পাক সেনাদের সহায়তার জন্য আল বদর নামে খুনি বাহিনী গড়ে গণহত্যা চালানোর দায়ে জামাতে ইসলামির আমির মতিউর রহমান নিজামিকে ফাঁসির আদেশ দেয় আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ আদালত। এই রায়ে বাংলাদেশে উৎসব শুরু হলেও পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চৌধুরি নিসার আলি খান বিচার প্রক্রিয়ার তীব্র সমালোচনা করেন। বিবৃতি দিয়ে পাকিস্তানের মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সরকার যুদ্ধাপরাধের বিচারের নামে রাজনীতির খেলা খেলছে। অতীতের কবর খুঁড়ে পুরনো ক্ষত উন্মোচনে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এর ফল মারাত্মক হতে পারে বলেও হুঁশিয়ারি দেন চৌধুরি নিসার আলি খান। বিবৃতিতে বলা হয়, যা ঘটছে তা বাংলাদেশের নিজস্ব বিষয় হলেও পাকিস্তান তা থেকে দূরে থাকতে পারে না।
পাক মন্ত্রীর এই বিবৃতির পরে নিন্দার ঝড় ওঠে ঢাকায়। আওয়ামি লিগের এক নেতা বলেন, পাকিস্তান যে আজও নিজামিদের কত বড় বন্ধু, তাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ঘোষণায় তা প্রমাণ হয়েছে। বিদেশ প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম তখনই পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, ইসলামাবাদ নিজের চরকায় তেল দিক।
বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের ভারপ্রাপ্ত হাই কমিশনার দায়োকে মন্ত্রকে ডেকে পাঠিয়ে অতিরিক্ত বিদেশসচিব মিজানুর রহমান জানিয়ে দেন, চৌধুরি নিসার আলি খানের বিবৃতিকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বলে মনে করছে। আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া চলছে। এ নিয়ে পাকিস্তানের কোনও কথাই বলার থাকতে পারে না। বাংলাদেশ আশা করে, ভবিষ্যতে পাকিস্তান সরকারের কোনও দায়িত্বশীল ব্যক্তি আর এই আচরণ করবে না। হাই কমিশনারের হাতে একটি প্রতিবাদ পত্রও তুলে দেওয়া হয়।