(বাঁ দিকে) জেফ্রি এপস্টিন এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
ঘরে-বাইরে রাজনৈতিক চাপের মুখে শেষমেশ এপস্টিন ফাইলে সই করেই দিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। একই সঙ্গে হুমকিও দিয়ে রাখলেন বিরোধী ডেমোক্র্যাটদের। কুখ্যাত যৌন অপরাধী, অধুনা প্রয়াত জেফ্রি এপস্টিনের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প-সহ বহু খ্যাতনামী ব্যক্তির অন্তরঙ্গতা নিয়ে একাধিক বার ঝড় বয়েছে আমেরিকার রাজনীতিতে। সম্প্রতি এপস্টিন সংক্রান্ত সমস্ত অপ্রকাশিত ফাইল প্রকাশ্যে আনার জন্য চাপ বাড়াচ্ছিলেন ডেমোক্র্যাট, এমনকি ট্রাম্পের নিজের দল রিপাবলিকানরাও।
ট্রাম্প অবশ্য গত কয়েক মাস ধরে ‘এপস্টিন ফাইলস ট্রান্সপারেন্সি অ্যাক্ট’ শীর্ষক এই বিলটি পাশ করানোর বিষয়ে অনীহাই দেখাচ্ছিলেন। কয়েক দিন আগে মত বদল করেন তিনি। এপস্টিনের যৌন অত্যাচারের শিকার যাঁরা, মূলত তাঁদের চাপেই ট্রাম্প সিদ্ধান্ত বদল করেন বলে মনে করা হচ্ছে। বুধবার বিলে স্বাক্ষর করার পর সমাজমাধ্যমে একটি দীর্ঘ পোস্ট করেন ট্রাম্প। লেখেন, “এই সমস্ত ডেমোক্র্যাট এবং তাঁদের সঙ্গে জেফ্রি এপস্টিনের যোগাযোগের বিষয়টি শীঘ্রই ফাঁস হয়ে যাবে। কারণ আমি এই মাত্র এপস্টিন ফাইল প্রকাশ করতে বিলে স্বাক্ষর করলাম।” একই সঙ্গে ট্রাম্পের দাবি, তাঁর প্রশাসনের ভাল কাজগুলি থেকে মানুষের দৃষ্টি অন্য দিকে ঘোরানোর জন্যই বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা করছেন ডেমোক্র্যাটরা।
মার্কিন আইনসভার নিম্নকক্ষ হাউস অফ রিপ্রেজ়েন্টিটিভসে ৪২৭-১ ভোটে এপস্টিন ফাইল সংক্রান্ত বিলটি পাশ করানো হয়। উচ্চ কক্ষ সেনেটেও কার্যত বিনা বিরোধিতায় বিলটি সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদন লাভ করে। তার পরেই ট্রাম্পের সইয়ের জন্য বিলটি পাঠানো হয় হোয়াইট হাউসে। নিয়ম অনুযায়ী, ট্রাম্প বিলে স্বাক্ষর করার পর ৩০ দিনের মধ্যে এপস্টিন সংক্রান্ত সমস্ত অপ্রকাশিত নথি প্রকাশ করবে আমেরিকার বিচার দফতর। তবে ডেমোক্র্যাটদের আশঙ্কা, ট্রাম্প বিড়ম্বনায় পড়তে পারেন, এমন নথি প্রকাশ না-ও করতে পারেন আমেরিকার অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্দি। সে ক্ষেত্রে তদন্ত প্রভাবিত হওয়ার যুক্তি খাড়া করতে পারেন তিনি।
এপস্টিনের সঙ্গে একসময় ট্রাম্পের বন্ধুত্ব ছিল। দু’জনের একাধিক ছবি রয়েছে একসঙ্গে। যদিও ট্রাম্প বারবার দাবি করে এসেছেন, এপস্টিনের সঙ্গে একসময় বন্ধুত্ব থাকলেও তাঁর অপরাধের সঙ্গে কোনও যোগ নেই। গত সপ্তাহেই এপস্টিনের বিরুদ্ধে তদন্ত সংক্রান্ত নথির একাংশ প্রকাশ্যে আসে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘বিবিসি’-র প্রতিবেদন অনুসারে, ২০ হাজার পাতারও বেশি ওই নথিতে বেশ কিছু জায়গায় মার্কিন প্রেসিডেন্টের নামোল্লেখ রয়েছে। সেখানে এক জায়গায় নাকি এপস্টিন নিজের মুখেই বলেছেন, “আমি জানি ডোনাল্ড (ট্রাম্প) কতটা নোংরা।”