আদালতে ধাক্কার উপর ধাক্কা খেয়েই চলেছেন ডোলান্ড ট্রাম্প। ‘নিষিদ্ধ’ সাতটি মুসলিম দেশ থেকে অভিবাসীদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকায় নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্তকে দ্রুত পুনর্বহাল করার আবেদনও খারিজ হয়ে গেল আজ। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের আইন দফতর সিয়াটেল ফেডেরাল কোর্টের রায়ের উপর জরুরি স্থগিতাদেশ চেয়ে শনিবার আপিল আদালতে আবেদন করেছিল। এদিন সকালে সেই আবেদন খারিজ করে দিল আপিল আদালত।
শুক্রবার সিয়াটেলের এক ফেডেরাল বিচারপতি জেমস রবার্ট, ‘নিষিদ্ধ’ সাতটি মুসলিম দেশ থেকে অভিবাসীদের ঢুকতে দেওয়ার ব্যাপারে ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করে দিয়েছিলেন। এই স্থগিতাদেশ জারি করা হয় গোটা আমেরিকা জুড়েই। এই রায় শোনার পরেই আদালতের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছিলেন ট্রাম্প। স্থগিতাদেশকে হাস্যকর বলে উড়িয়ে দিয়ে বিচারপতি জেমস রবার্টের বিরুদ্ধেও তোপ দেগেছিলেন নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। টুইটারে ট্রাম্প লেখেন, ‘‘তথাকথিত এই বিচারপতির নির্দেশ অর্থহীন। এতে দেশের আইন-শৃঙ্খলা ভেঙে পড়বে। হাস্যকর এই নির্দেশ বদলাতে বাধ্য।’’কোনও বিচারপতির উপরে প্রেসিডেন্টের এমন আক্রমণের নজির কমই আছে বলে জানাচ্ছেন মার্কিন রাজনীতিকরা। এরই সঙ্গে আদালতকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে রায়কে বদলে দেবেন বলেও জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বলেন, ‘‘কার্যকর হবে ভিসা নিষেধাজ্ঞা।’’
ডোনাল্ড ট্রাম্পের টুইট।
একই সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, জেমস রবার্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করা হবে। সেই মতো উচ্চতর আদালতে আর্জিও জানানো হয়। আবেদন করা হয়, জরুরি ভিত্তিতে জেমস রবার্টের স্থগিতাদেশ রদ করে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হোক। কিন্তু আপিল আদালতের দুই বিচারপতি এতে সাড়া দেননি। দুই প্যারাগ্রাফের নির্দেশনামায় ট্রাম্প প্রশাসনের আর্জি খারিজ করে দিলেও এই নির্দেশের কোনও কারণ ব্যাখ্যা করেননি তাঁরা।
আরও পড়ুন: বিচারপতিকে ট্রাম্পের তোপ, আদালতের নির্দেশে খুলল ভিসার দরজা
ট্রাম্পের জারি করা নিষেধাজ্ঞা বাতিলের আর্জি নিয়ে আদালতে গিয়েছিল ওয়াশিংটন এবং মিনেসোটা স্টেট। এই দুই স্টেটকেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, কেন তারা এই নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করছে তা নথিপত্র সহ আজকের মধ্যেই পেশ করতে। অন্য দিকে ট্রাম্পের বিচার বিভাগকে কাল, সোমবার, বিকেল তিনটে পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে নিজেদের অবস্থানের স্বপক্ষে আরও নথিপত্র জমা দেওয়ার জন্য।
মিলেছে ছাড়পত্র। রবিবারই কুইন্সের জেএফকে বিমানবন্দরে পৌঁছলেন ইয়েমেনের বাসিন্দা আবদুল্লাহ আলঘাজালি ও তাঁর ছেলে। ছবি: রয়টার্স।
তবে, সিয়াটেল আদালতের রায়ের পর মার্কিন বিদেশ দফতর সাতটি ‘নিষিদ্ধ’ মুসলিম দেশের নাগরিকদের ষাট হাজার ভিসায় বৈধতার সিলমোহর দেওয়ার কাজ শুরু করতে বাধ্য হয়েছে। ইরাক-ইরান-লিবিয়া-সোমালিয়া-সুদান-সিরিয়া-ইয়েমেনের নাগরিকদের আমেরিকাগামী বিমানে ওঠার অনুমতিও দেওয়া হয়েছে। ট্রাম্পের আর্জি খারিজের খবরে খুশিতে আপাতত স্বস্তিতে ‘নিষিদ্ধ’ সাত দেশের অভিবাসীরা। আমেরিকার উদ্দেশ্যে রওনাও হয়ে গিয়েছেন অনেকেই। আবার অনেকেই ছাড়পত্র হাতে পেয়ে ইতিমদ্যেই আমেরিকা পৌঁছে গিয়েছেন।