অবিচল: হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার। রয়টার্স
আদালতে ফের অস্বস্তি ডোনাল্ড ট্রাম্পের। আজ ওয়াশিংটনে ফেডারেল ডিস্ট্রিক্ট কোর্টের বিচারপতি টিমোথি জে কেলি হোয়াইট হাউসকে নির্দেশ দিয়েছেন, সিএনএনের সংবাদদাতা জিম অ্যাকোস্টার হোয়াইট হাউসে খবর সংগ্রহের প্রয়োজনীয় অনুমতিপত্র ফিরিয়ে দিতে হবে। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, আদালতের নির্দেশ মোতাবেক আপাতত সেই অনুমতিপত্র ফিরিয়ে দিচ্ছে তারা।
সম্প্রতি জিম প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে কড়া প্রশ্ন করার পর তাঁর হোয়াইট হাউসে প্রবেশের অনুমতিপত্র বা ‘প্রেস ব্যাজ’ কেড়ে নেওয়া হয়। দাবি করা হয়েছিল, জিম হোয়াইট হাউসের এক ইন্টার্নের সঙ্গে অশালীন ব্যবহার করেছেন। সিএনএন আদালতে সওয়াল করে, জিমের বাক্স্বাধীনতার অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। কোন সাংবাদিক হোয়াইট হাউসের খবর দেবেন, তা এক জন প্রেসিডেন্ট ঠিক করতে পারেন না। আদালত সিএনএনের যুক্তি আংশিক ভাবে মেনে নিয়েছে।
নিজের পর্যবেক্ষণে বিচারপতি কেলি স্পষ্ট বলেছেন, ‘‘কারও ‘প্রেস ব্যাজ’ কেড়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে আইন মাফিক যে সমস্ত পদক্ষেপ করা উচিত ছিল, জিমের ক্ষেত্রে তা হয়নি। রহস্যজনক ভাবে তাঁকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।’’ এমনকি সেই নির্দেশ ঠিক কে দিয়েছিলেন, আদালতকে তা-ও বলতে পারেনি বিচার মন্ত্রক। সিএনএনের দাবি, জিমের বিরুদ্ধে অশালীন আচরণের অভিযোগকেও ‘‘সম্ভবত অসত্য’’ বলেছেন বিচারপতি। এ-ও বলেছেন, যে প্রমাণের ভিত্তিতে ওই অভিযোগ আনা হয়েছিল, তা প্রশ্নের ঊর্ধ্বে নয়।
অনেকেই বলছেন, শুধু আমেরিকা নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শাসকের দমন নীতির বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের লড়াইয়ে এই রায় বিরাট অনুপ্রেরণা। হোয়াইট হাউস বনাম সাংবাদিকের এই লড়াইয়ে সিএনএন আরও কয়েকটি সংবাদ সংস্থা ও চ্যানেলকে পাশে পেয়েছিল। সংবাদমাধ্যমের যুক্তি ছিল, অপ্রীতিকর প্রশ্ন করায় জিমের সঙ্গে ট্রাম্পের বিরোধ আগেও হয়েছে। এ বার ক্ষমতায় এসে তাই জিমকে শায়েস্তা করতে চেয়েছেন ট্রাম্প। সাংবাদিকদের প্রশ্ন পছন্দ না হলেই ট্রাম্প তাঁদের অবজ্ঞা করেন তাঁর সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করলেই সেই খবরকে ‘ভুয়ো খবর’ আখ্যা দেন। এ হেন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে আদালতে লড়াইয়ে নেমেছিল সিএনএন। আর তাতেই এসেছে এই জয়।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব সারা স্যান্ডার্স বলেছেন, ‘‘শৃঙ্খলা বজায় রাখাটাই আমাদের উদ্দেশ্য। এ নিয়ে ভবিষ্যতে আইন করা হবে।’’ তাঁর দাবি, প্রেস ব্যাজ ফেরালেও সাংবাদিক বৈঠকে জিমকে ডাকতে বাধ্য নয় হোয়াইট হাউস। আর জিম বলেছেন, ‘‘সবাইকে ধন্যবাদ। চলুন, কাজে ফেরা যাক।’’