দু’সপ্তাহ সময় কংগ্রেসকে

শরণার্থী তাড়াও অভিযানে পিছু হটলেন ট্রাম্প 

টুইটারে প্রেসিডেন্ট জানালেন, বিরোধী ডেমোক্র্যাটদের ‘অনুরোধ’ মেনেই তাঁর এই সিদ্ধান্ত।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৯ ০৫:১২
Share:

ছবি এএফপি।

শহরে-শহরে প্রবল আপত্তি। শেষ মুহূর্তে পিছু হটলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর নির্দেশ ছিল, অবৈধ অভিবাসীদের এ বার সপরিবার ‘ঘাড়ধাক্কা’ দিতে হবে। প্রয়োজনে জোর খাটিয়ে ছড়িয়ে থাকা অভিবাসীদের এক জায়গায় আনতে হবে। সেইমতো আজ দিনের শুরুতে মার্কিন অভিবাসন এবং শুল্ক বিভাগ (ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট, সংক্ষেপে আইসিই) জানিয়ে দেয়, রবিবার ভোর রাত থেকে শুরু হবে তল্লাশি অভিযান। এক দিনেই অন্তত ২০০০ পরিবারকে চিহ্নিত করে তাদের নিজেদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে। হিউস্টন, লস অ্যাঞ্জেলেস, শিকাগো, বাল্টিমোর, সান ফ্রান্সিসকো, মায়ামির মতো ১০টি শহরে এক সপ্তাহ ধরে চলবে তল্লাশি অভিযান। চলবে দেদার ধরপাকড়ও।

Advertisement

কিন্তু প্রেসিডেন্ট নিজেই সেই অভিযান আপাতত দু’সপ্তাহের জন্য স্থগিত রাখার কথা ঘোষণা করলেন প্রায় শেষ প্রহরে। টুইটারে প্রেসিডেন্ট জানালেন, বিরোধী ডেমোক্র্যাটদের ‘অনুরোধ’ মেনেই তাঁর এই সিদ্ধান্ত। বললেন, ‘‘দক্ষিণ সীমান্তে নিরাপত্তা এবং শরণার্থীদের আশ্রয়, অধিকার ইত্যাদি নিয়ে যে সব জটিলতা আছে, আশা করব ডোমোক্র্যাট-রিপাবলিকানরা তা দু’সপ্তাহের মধ্যেই আলোচনায় মিটিয়ে ফেলবেন।’’

না হলে? ট্রাম্পের স্পষ্ট হুঁশিয়ারি, ‘‘ওদের তাড়াতেই হবে।’’

Advertisement

আজ অবশ্য আইসিই-র অভিযান ঘোষণার পরেই এ নিয়ে ঝড় বয়ে যায় মার্কিন মুলুকে। বেঁকে বসেন দেশের বেশির ভাগ শহরের মেয়র। শিকাগোর মেয়র যেমন শহরের পুলিশকে স্পষ্ট বলে দেন, আইসিই-কে কোনও রকম সহযোগিতা নয়। তল্লাশি অভিযানে নারাজ নিউ ইয়র্ক, আটলান্টা, সান ফ্রান্সিসকোর মেয়রেরাও। এই অবস্থায় হোমল্যাল্ড সিকিয়োরিটির সঙ্গে বিভিন্ন মার্কিন শহরের প্রশাসনিক স্তরে বড়সড় দ্বন্দ্বের আশঙ্কা করেছিলেন অনেকে। হাউসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসিও অভিযান বাতিলের অনুরোধ করেছিলেন প্রেসিডেন্টকে। কিন্তু শেষমেশ ট্রাম্প নিজেই তা স্থগিত রাখায়, আপাতত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বলেই মনে করা হচ্ছে।

দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকার বিভিন্ন দেশ থেকে হাজার হাজার মানুষ সীমান্ত পেরিয়ে অবৈধ ভাবে আমেরিকায় ঢুকেছেন বলে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই অভিযোগ করে এসেছেন ট্রাম্প। প্রেসিডেন্টের গদিতে বসার পর পরই ট্রাম্প ‘জ়িরো টলারেন্স’ নীতি প্রয়োগের নির্দেশ দেওয়ায় ধরপাকড়ে প্রচুর শিশু তাদের বাবা-মায়ের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ট্রাম্পের নীতি নিয়ে গোটা বিশ্বে সামলোচনার ঝড় ওঠে।

এ বার যাতে সেই রকম কিছু না ঘটে তার জন্য আগাম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন হোমল্যান্ড সিকিয়োরিটি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব কেভিন ম্যাকঅ্যালিনান। তাঁর বক্তব্য, পরিবারগুলি চিহ্নিত করে তাঁদের আগে হোটেলে রাখা হবে। শিশুরা যাতে তাদের মায়েদের থেকে আলাদা না হয়, বা পরিবারের কোনও সদস্য যাতে একে অপরের থেকে বিচ্ছিন্ন না হয় তাই এই ব্যবস্থা।

কেভিন আরও জানান, তাঁদের কাছে ১৫০টি শরণার্থী পরিবারের তালিকা রয়েছে, যারা প্রথমে আইনি সহায়তা পাচ্ছিল। কিন্তু মাঝপথে তারা অন্যত্র গা ঢাকা দিয়েছে। এই সব পরিবারের প্রত্যেককে আটক করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল হোমল্যান্ড সিকিয়োরিটির উপরে।

আপাতত অভিযান স্থগিত রাখলেও, ট্রাম্প এ দিন একহাত নেন গররাজি শহরগুলিকেও। বলেন, ‘‘শিকাগোর মতো কিছু শহর এই অভিযান নিয়ে আপত্তি করছে বটে, কিন্তু এই সব শহরেই তো অপরাধের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। এবং সেটার একটা বড় কারণ অভিবাসীদের বাড়বাড়ন্ত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন