মার্কিন আদালতের বিচারপতি হতে পারেন নেওমি জাহাঙ্গির রাও।
বিদেশি তাড়াতে উঠেপড়ে লেগেছে মার্কিন সরকার। তালিকায় রয়েছেন সেখানে বসবাসকারী ভারতীয়রাও। কাগজপত্র খতিয়ে দেখা হচ্ছে সকলের। একটু এদিক ওদিক হলেই মার্কিন মুলুক তেকে বিদায়। তবে তার আগে পুরনো ভাবমূর্তি ঝেড়ে ফেলতে উদ্যত হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওয়াশিংটন ডিসি ফেডারেল আ্যাপিল কোর্টের জন্য বিচারপতি খুঁজছেন তিনি। সেখানে কোনও সংখ্যালঘুকেই বসানোর পক্ষপাতী তিনি। সেই মতো ইন্টারভিউ নিয়ে চলেছেন। সম্প্রতি ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক মহিলার ইন্টারভিউ নেন। সবকিছু ঠিকঠাক চললে ব্রেট কাভানার ছেড়ে যাওয়া পদে তাঁকে বসানো হতে পারে।
মার্কিন নিবাসী ভারতীয় বংশোদ্ভূত ওই মহিলার নাম নেওমি জাহাঙ্গির রাও। বয়স ৪৫ বছর। বর্তমানে ওয়াশিংটনের তথ্য এবং নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক দফতরের দায়িত্বে রয়েছেন। এক সময় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ক্ল্যারেন্স টমাসের হয়ে কাজ করেছেন। গত বছর জুলাই মাসে মার্কিন সেনেটে ৫৪-৪১ ভোটে জয়ী হয়ে তথ্য এবং নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক দফতরের দায়িত্ব হাতে পান। মার্কিন প্রশাসনে বেশ ডাকাবুকো হিসাবেই পরিচিত তিনি। কাভানার জায়গায় তাঁকে আনতে সম্প্রতি সুপারিশ করেন হোয়াইট হাউসের প্রাক্তন কৌঁসুলি ডন ম্যাকগান। তাতে রাজি হন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সেই মতো ইন্টারভিউ নেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন সিদ্ধান্তের পিছনে অন্য কারণও রয়েছে বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের। চলতি বছরের জুলাই মাসে অ্যাপিল কোর্টের বিচারপতি ব্রেট কাভানাকে তিনি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি পদে মনোনীত করেন। যাতে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অ্যান্টনি কেনেডির জায়গায় তাঁকে বসানো যায়। সেই নিয়ে কম ঝামেলা হয়নি। কাভানার বিরুদ্ধে একাধিক যৌন নিগ্রহের অভিযোগ জমা পড়ে। প্রতিবাদে সামিল হন হাজার হাজার মানুষ। তাসত্ত্বেও ৬ অক্টোবর মার্কিন সেনেটে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নির্বাচিত হন কাভানা। ওইদিনই সুপ্রিম কোর্টের ১১৪তম বিচারপতি হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন। ৮ অক্টোবর তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণ করান ট্রাম্প নিজে।
আরও পড়ুন: মোদীর ডাকে প্রজাতন্ত্র দিবসে আসতে নারাজ ট্রাম্প!
সেই থেকে অ্যাপিল কোর্টের বিচারপতির পদটি খালি পড়ে রয়েছে। তাই খোঁজ চলছে উপযুক্ত প্রার্থীর। ট্রাম্প নিজে ইন্টারভিউ নিয়ে চলেছেন। যদিও নেওমি জাহাঙ্গিরকে ট্রাম্পের তেমন পছন্দ হয়নি বলে হোয়াইট হাউস সূত্রে খবর। তবে এখনই নাকি তাঁকে বাতিলের খাতায় ফেলতে নারাজ মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তার অন্যতম কারণ হল নেওমি জাহাঙ্গিরের এত বছরের অভিজ্ঞতা। প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশের সহকারী কৌঁসুলি হিসাবেও একসময় কাজ করেছেন তিনি। ইয়েল এবং ইউনিভার্সিটি অফ শিকাগো থেকে পড়াশোনা করেছেন। আন্তর্জাতিক আইন নিয়ে দীর্ঘদিন প্র্যাকটিস করেছেন লন্ডনে।
নেওমি জাহাঙ্গির রাওয়ের মা জরিন রাও এবং বাবা জাহাঙ্গির নারিওশাঙ্গ রাও, দু’জনই ভারতীয়। পেশায় চিকিৎসক। তবে নেওমির বেড়ে ওঠা, পড়াশোনা সবই মার্কিন মুলুকে। তিনি দায়িত্বে এলে এই নিয়ে দ্বিতীয় ভারতীয় বংশোদ্ভূত বিচারপতি পাবে ওয়াশিংটন ফেডারেল অ্যাপিল কোর্ট। ২০১৩ সাল থেকে সেখানে বিচারক হিসাবে নিযুক্ত রয়েছেন শ্রী শ্রীনিবাসন। সুপ্রিম কোর্টের জন্য তাঁকে মনোনীত করেছিলেন বারাক ওবামা।