(বাঁ দিক থেকে) রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির মধ্যে বৈঠক হওয়ার কথা। কিন্তু কবে কোথায় দুই রাষ্ট্রনেতা মুখোমুখি বসবেন, আদৌ বসবেন কি না, এখনও তা স্পষ্ট নয়। যুদ্ধবিরতি নিয়ে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের কোনও অগ্রগতিই দেখা যাচ্ছে না। এতে বিরক্ত আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সাময়িক ভাবে যুদ্ধ থামানোর চেষ্টা থেকে সরে আসার ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আরও দু’সপ্তাহ নেবেন এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসাবে দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই রাশিয়া এবং ইউক্রেনের যুদ্ধ থামাবেন বলে দাবি করছেন ট্রাম্প। কিন্তু এখনও তাতে অগ্রগতি হয়নি। এই যুদ্ধবিরতির জন্য তিনি অনেক সময় খরচ করেছেন। আলাস্কায় গিয়েছেন পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করতে। তার পর হোয়াইট হাউসে ফিরে জ়েলেনস্কি এবং ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। শেষে বল ঠেলে দিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের কোর্টে। এ বার পুতিন এবং জ়েলেনস্কির মধ্যে আলোচনায় আয়োজন করতে পারলেই কাঙ্ক্ষিত ফল মিলতে পারে। কিন্তু এখনও সেই বৈঠক চূড়ান্ত হয়নি। ওভাল অফিসে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের সামনে নিজের হতাশা গোপন করেননি ট্রাম্প। বলেছেন, ‘‘যুদ্ধের ব্যাপারটা নিয়ে আমি একেবারেই খুশি নই। একেবারে না।’’ এর পরেই তিনি জানান, আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের সংঘাতের ভবিষ্যৎ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে চলেছেন।
উল্লেখ্য, দু’সপ্তাহ সময়ের কথা ট্রাম্প আগেও বলেছেন। শুধু রাশিয়া-ইউক্রেন নয়, অন্য সমস্যাতেও তিনি দু’সপ্তাহ সময় নেওয়ার কথা জানিয়ে থাকেন। মার্কিন সাংবাদিকদের মতে, এর আক্ষরিক অর্থ ধরা উচিত নয়। এটা প্রেসিডেন্টের বহুল ব্যবহৃত একটি বাক্যাংশ। কোনও বিষয় নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হলে ট্রাম্প দু’সপ্তাহ সময়ের কথা বলে থাকেন। এ ক্ষেত্রে আপাতত তিনি অপেক্ষা করতে চাইছেন। পুতিন আদৌ জ়েলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করতে রাজি হন কি না, ট্রাম্পের কথা রাখেন কি না, এ বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেন, তা আগে দেখবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তার পর প্রয়োজনমতো সিদ্ধান্ত নেবেন। ইউক্রেনে দিনের পর দিন প্রাণহানির সংখ্যা বাড়ছে। হোয়াইট হাউস সূত্রে খবর, এতে ট্রাম্প উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
আলাস্কায় পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের পর ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বেরিয়েছিলেন ট্রাম্প। বৈঠকটিকে ‘অত্যন্ত ফলপ্রসূ’ বলে উল্লেখ করেছিলেন। সূত্রের খবর, পুতিন যে জ়েলেনস্কির মুখোমুখি হবেন, তা একপ্রকার নিশ্চিত করে এসেছিলেন ট্রাম্প। প্রয়োজনে সেই বৈঠকে তিনি নিজে উপস্থিত থাকবেন বলেছিলেন। কিন্তু ক্রেমলিনের তরফে লাগাতার এই সংক্রান্ত সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, জ়েলেনস্কির সঙ্গে পুতিনের সাক্ষাতের অর্থ ইউক্রেনীয়দের স্বাধীন জাতির স্বীকৃতি দিয়ে ফেলা, মস্কো প্রথম থেকে যার বিরোধী। এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। তিনি আর কত দিন ধৈর্য ধরে থাকবেন, সে দিকে নজর সকলের।