(বাঁ দিকে) পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির। ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
নিজের দেশকে ‘নুড়িবোঝাই ট্রাক’ আর ভারতকে ‘মার্সিডিজ়’ গাড়ির সঙ্গে তুলনা করেছিলেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির। পরমাণু হামলার হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন। এ বার তার পাল্টা দিলেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। জানালেন, মুনিরের কথা ব্যঙ্গ করার মতো নয়। কারণ, সেটা আসলে স্বীকারোক্তি। পাকিস্তান কতটা দুর্বল, ওই মন্তব্যের মাধ্যমে জেনে বা না-জেনে তা স্বীকার করে নিয়েছেন পাক সেনাপ্রধান!
কিছু দিন আগে আমেরিকার মাটিতে দাঁড়িয়ে ভারতকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মুনির। বলেছিলেন, ‘‘ভারত ঝাঁ- চকচকে মার্সিডিজ় গাড়ির মতো। পাকিস্তান হল বড় নুড়িবোঝাই ট্রাক। দুইয়ের সংঘর্ষে কী পরিণতি হবে, তা সকলের জানা।’’ রাজনাথ ওই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বলেন, ‘‘যদি পাশাপাশি দু’টি দেশ একসঙ্গে স্বাধীনতা পেয়ে থাকে, একটি দেশ পরিশ্রম, সঠিক নীতি এবং দূরদৃষ্টির মাধ্যমে ঝাঁ-চকচকে গাড়ির মতো অর্থনীতি তৈরি করে থাকে এবং অপর দেশটি ব্যর্থতাতেই আটকে থাকে, তবে এটা তাদের কৃতকর্মের ফল। এটা তো ব্যঙ্গাত্মক কিছু নয়। এটাই তো স্বীকারোক্তি।’’
আমেরিকা থেকে পরমাণু হামলার হুমকি দিয়ে মুনির জানিয়েছিলেন, পাকিস্তান যদি ধ্বংস হয়, তবে অর্ধেক পৃথিবীকে নিয়ে ধ্বংস হবে। সেই ক্ষমতা পাকিস্তানের আছে। এ প্রসঙ্গে রাজনাথ বলেন, ‘‘আমাদের সঙ্কল্প ইতিমধ্যে দেখিয়ে দিয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’। ভারতের শক্তি নিয়ে আমরা পাকিস্তানের মনে কোনও ভ্রান্ত ধারণা গড়ে উঠতে দেব না।’’ ভারতের প্রতিরক্ষার অগ্রগতির কথা বলতে গিয়ে রাজনাথ তেজস যুদ্ধবিমানের প্রসঙ্গ তুলেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের দেশীয় প্রতিরক্ষা সক্ষমতার অসাধারণ একটা উদাহরণ হতে চলেছে তেজস। এ ছাড়া পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান এবং ইঞ্জিন গড়ার ক্ষেত্রেও আমরা পদক্ষেপ করেছি।’’
উল্লেখ্য, এর আগে মুনিরের মন্তব্য নিয়ে বিবৃতি দিয়েছিল ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। ‘বন্ধুত্বপূর্ণ’ দেশ আমেরিকার মাটিতে দাঁড়িয়ে এমন মন্তব্য দুর্ভাগ্যজনক বলেও উল্লেখ করেছিল নয়াদিল্লি। এ বার প্রতিরক্ষামন্ত্রীও সেই মন্তব্য নিয়ে খোঁচা দিলেন পাকিস্তানকে। গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার ঘটনার পর থেকে ভারত এবং পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক তলানিতে। ওই হামলার ঘটনায় পাকিস্তানকে দায়ী করে একাধিক পদক্ষেপ করেছিল ভারত। পাকিস্তানের মাটিতে সেনা অভিযান চালানো হয় ৬ মে মধ্যরাতে। ধ্বংস করে দেওয়া হয় একাধিক পাক জঙ্গিঘাঁটি। তার পর টানা চার দিন দুই দেশের মধ্যে সেনা সংঘর্ষ চলেছে। ১০ মে হয়েছে সংঘর্ষবিরতি।