(বাঁ দিকে) আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
আমেরিকা থেকে কি সয়াবিন কেনা পুরোপুরি বন্ধ করে দিচ্ছে চিন? পাকাপাকি ভাবে তেমন কোনও সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়নি। তবে বেজিঙের একাধিক পদক্ষেপে তেমন ইঙ্গিত মিলেছে। আমেরিকার সয়াবিনের বরাত অনেক কমিয়ে দিয়েছে চিন। পরিবর্তে অন্য একটি দেশ থেকে সয়াবিন আমদানি বেড়েছে। ঘটনাচক্রে, সেই দেশের সঙ্গে চিনের পাশাপাশি ভারতের সম্পর্কও বন্ধুত্বপূর্ণ। কয়েকটি রিপোর্টে দাবি, সয়াবিন আমদানির জন্য চিন বিকল্প হিসাবে বেছে নিয়েছে দক্ষিণ আমেরিকার ব্রাজ়িলকে।
আমেরিকার বিপরীতে গড়ে ওঠা আন্তর্জাতিক জোট ব্রিক্স-এর সদস্য ভারত, চিন এবং ব্রাজ়িল। এর আগে এই দেশগুলির পণ্যে বাড়তি শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চিনের উপর এখনও আমেরিকা তেমন কোনও শুল্ক আরোপ করেনি। তবে ভারতকে ৫০ শতাংশ শুল্কের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। ব্রাজ়িলের উপরেও ৫০ শতাংশ হারে শুল্ক চাপিয়েছেন ট্রাম্প। এই পরিস্থিতিতে ব্রিক্স-এর সদস্য দেশগুলি আমেরিকার বিরুদ্ধে একজোট হচ্ছে বলে মনে করছেন কেউ কেউ। ভারতীয় পণ্যের জন্য রাশিয়া এবং চিন আগেই দরজা খুলে দিয়েছে। এ বার সয়াবিন আমদানিতে ব্রাজ়িলের দিকে ঝুঁকতে শুরু করেছে বেজিং।
চিন বিশ্বের বৃহত্তম সয়াবিন আমদানিকারক দেশ। প্রতি বছর আমেরিকা থেকে প্রচুর পরিমাণে সয়াবিন তারা আমদানি করে। কিন্তু সম্প্রতি আমদানি কমেছে। এমনকি, আগামী সেপ্টেম্বর এবং অক্টোবর মাসের জন্য এক টন সয়াবিনের বরাতও দেওয়া হয়নি বলে দাবি। পরিবর্তে সয়াবিনের বরাত যাচ্ছে ব্রাজ়িলের রাজধানী ব্রাসিলিয়ায়। এই পরিস্থিতিতে মার্কিন কৃষকেরা সিঁদুরে মেঘ দেখছেন। ব্লুমবার্গের রিপোর্ট অনুযায়ী, আমেরিকার সয়াবিন উৎপাদনকারী কৃষকদের তরফে সমস্যার কথা জানিয়ে ট্রাম্পকে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ‘‘আমাদের সবচেয়ে বড় গ্রাহকের সঙ্গে এ ভাবে বাণিজ্য বিরোধ চলতে থাকলে আমরা টিকতে পারব না।’’
চিনের শুল্ক দফতরের পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছরে জুলাই পর্যন্ত আমেরিকা থেকে ৪.২ লক্ষ টন সয়াবিন আমদানি করা হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ১১.৪৭ শতাংশ কম। ব্রাজ়িলে শুধু গত মাসেই চিনের সয়াবিন আমদানি প্রায় ১৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। চিনের সয়াবিনের ৯০ শতাংশ এখন ব্রাজ়িল থেকে যাচ্ছে। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের রিপোর্ট অনুযায়ী, সয়াবিনের প্রধান জোগানদার হিসাবে যদি ব্রাজ়িলকে বেছে নেয় চিন, তবে আমেরিকার কৃষকেরা বিপুল ক্ষতির মুখোমুখি হবেন। কিছু দিন আগে এ নিয়ে মুখ খুলেছিলেন ট্রাম্প নিজেও। চিনকে আমেরিকা থেকে আরও বেশি করে সয়াবিন আমদানি করতে বলেছিলেন তিনি। জানিয়েছিলেন, দুই দেশের বাণিজ্য ঘাটতি পূরণ করার অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠতে পারে সয়াবিন। কিন্তু তার পরেও ব্রাজ়িলে সয়াবিনের বরাত বাড়ছে।