আমেরিকায় নিষিদ্ধ করা হোক মুসলিমদের প্রবেশ। এই এক মন্তব্যেই বিশ্বজুড়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে ছিলেন আমেরিকার রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু সবাইকে অবাক করে সেই মন্তব্যই ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট পদের ইঁদুরদৌড়ে একেবারে প্রথম সারিতে নিয়ে চলে এল। দু’দিন আগেই যে ট্রাম্পকে হাসির খোরাক হিসাবে গণ্য করা হচ্ছিল, আজ গোটা মার্কিন মুলুকে তাঁর জনপ্রিয়তা চড়চড় করে বেশ কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সমীক্ষা জানাচ্ছে, আমেরিকার মাল্টি বিলিওনিয়াররা এখন বাজি ধরছেন ট্রাম্পের উপর। পরিস্থিতি এতটাই জটিল যে খোদ হিলারি ক্লিন্টনকে বলতে হচ্ছে, ‘‘ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্য লজ্জাজনক, ভয়াবহ। এখন আর হাসির পাত্র নয়, বরং ট্রাম্প দিনদিন ভয়ানক হয়ে উঠছে।’’ প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী এই ডেমোক্রাটের আশঙ্কা ট্রাম্পের মন্তব্য আমেরিকায় বিভেদ বাড়াবে।
তবে এই প্রথম নয়, এর আগেও সরাসরি মুসলিম বিরোধী বহু বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন ট্রাম্প। মধ্যপ্রাচ্য বোমারু বিমান হানায় গুঁড়িয়ে দেওয়ার দাবি তুলেছিলেন তিনি। দাবি তুলে ছিলেন গোটা আমেরিকা জুড়ে মসজিদগুলোয় বিশেষ নজরদারি বসানোর। এমনকী প্রশ্ন তুলে ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার নাগরিকত্ব নিয়েও। বিতর্ক তৈরি হলেও এই মন্তব্যগুলো আলাদা করে কখনওই ট্রাম্পের জনপ্রিয়তার কারণ হয়নি। কিন্তু হঠাত্ কী এমন হল যে মাত্র কয়েক দিনেই এ ভাবে বিরোধীদের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে উঠলেন ট্রাম্প?
আরও পড়ুন
বিশেষজ্ঞদের মতে ইসলামোফোবিয়া বেশ কয়েক দিন ধরেই আমেরিকানদের মধ্যে চোরাস্রোতের মত বইছিল। প্যারিস এবং ক্যালিফোর্নিয়ায় জঙ্গি হানার পর সেই চাপা আতঙ্ক বড় বেশি প্রকট হয়ে উঠেছে। এক মাস আগে মাত্র ৪% মার্কিনি মনে করতেন সন্ত্রাসবাদই দেশের মূল সমস্যা। মাত্র এক মাসেই আমূল বদলে গেছে ছবিটা। এখন দেশের ১৯%-ই মনে করেন আসল সমস্যা আসলে সন্ত্রাসবাদই। রিপাবলিকান ভোটারদের ৩৫% এখন ট্রাম্পকে সমর্থন করছে। প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৬ জন রিপাবলিকান বিশ্বাস করেন, দেশে বাড়তে থাকা সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলার ক্ষমতা রয়েছে একমাত্র ট্রাম্পেরই রয়েছে।