US Tariff War

এ বার ওষুধের উপরেও ‘বড়সড়’ শুল্ক চাপাচ্ছে আমেরিকা! ট্রাম্পের ঘোষণায় উদ্বেগে ভারত, কী প্রভাব পড়বে ওষুধশিল্পে?

এর আগে ওষুধ এবং সেমিকন্ডাক্টরকে পারস্পরিক শুল্কনীতির আওতা থেকে দূরে রেখেছিল ট্রাম্প প্রশাসন। কিন্তু দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এই দুইয়ের উপরেও শুল্ক চাপাতে উঠেপড়ে লেগেছেন ট্রাম্প। এর আগে গত সপ্তাহেও ওষুধের উপর শুল্ক চাপানোর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২৫ ১৫:১৩
Share:

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। — ফাইল চিত্র।

এ বার ওষুধের উপরেও ‘বড়সড়’ শুল্ক চাপাতে চলেছে আমেরিকা। মঙ্গলবার এমনটাই জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যার জেরে শঙ্কার মেঘ দেখছে ভারতের ওষুধ উৎপাদন শিল্প। কারণ আমেরিকাই ভারতের ওষুধজাত পণ্যের বৃহত্তম রফতানির বাজার।

Advertisement

মঙ্গলবার ন্যাশনাল রিপাবলিকান কংগ্রেসনাল কমিটির এক সমাবেশে বক্তৃতা দিতে গিয়ে নয়া শুল্ক চাপানোর বিষয়ে হুঁশিয়ারি দেন ট্রাম্প। জানান, অদূর ভবিষ্যতে আমেরিকায় আমদানিকৃত ওষুধের উপরেও ‘বড়সড়’ শুল্ক আরোপ করার পরিকল্পনা করছে ওয়াশিংটন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘‘এই শুল্ক আরোপের ফলে ওষুধ কোম্পানিগুলি তাদের ব্যবসা আমেরিকায় স্থানান্তরিত করতে উৎসাহিত হবে।’’

এর আগে ওষুধ এবং সেমিকন্ডাক্টরকে পারস্পরিক শুল্কনীতির আওতা থেকে দূরে রেখেছিল ট্রাম্প প্রশাসন। কিন্তু দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এই দুইয়ের উপরেও শুল্ক চাপাতে উঠেপড়ে লেগেছেন ট্রাম্প। এর আগে গত সপ্তাহেও ওষুধের উপর শুল্ক চাপানোর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। মঙ্গলবারের ঘোষণার পর মনে করা হচ্ছে, সে দিন বেশি দূরে নেই!

Advertisement

উল্লেখ্য, ভারতের দেশীয় শিল্পগুলির মধ্যে ওষুধ উৎপাদন শিল্প আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্যসম্পর্কের উপর সবচেয়ে বেশি নির্ভরশীল। আমেরিকাই ভারতের ওষুধজাত পণ্যের বৃহত্তম রফতানির বাজার। ফলে ওয়াশিংটনের এই পদক্ষেপের জেরে সরাসরি প্রভাব পড়তে পারে সেই শিল্পে। শিল্প সংস্থা ‘ফার্মাসিউটিক্যালস এক্সপোর্ট প্রোমোশন কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া’র মতে, গত অর্থবর্ষে প্রায় ২৭.৯ বিলিয়ন ডলার মূল্যের ওষুধ রফতানি করেছিল ভারত, যার মধ্যে ৩১ শতাংশই রফতানি হয়েছিল আমেরিকায়, যার বাজারমূল্য প্রায় ৮.৭ বিলিয়ন ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় ৭৫ হাজার কোটি টাকা)।

পরিসংখ্যান বলছে, গোটা বিশ্বে জেনেরিক ওষুধ রফতানিতে প্রথম সারিতে রয়েছে ভারত। বিশ্বের মোট জেনেরিক ওষুধের ২০ শতাংশ ভারত রফতানি করে। প্রায় ২০০টি দেশে ওষুধ রফতানি করে ভারতের বিভিন্ন ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা। অন্য দিকে, জেনেরিক ওষুধের ৭০ শতাংশই বিদেশ থেকে আমদানি করে ট্রাম্পের দেশ। এর মধ্যে ভারত থেকেই যায় প্রায় ৪৫ শতাংশ। আমেরিকায় ব্যবহৃত বায়োসিমিলার ওষুধগুলিরও অন্তত ১৫ শতাংশ সরবরাহ করে ভারত। ডক্টর রেড্ডি’স, অরবিন্দ ফার্মা, জ়াইডাস লাইফসায়েন্সেস, সান ফার্মা, গ্ল্যান্ড ফার্মার মতো ওষুধপ্রস্তুতকারক সংস্থাগুলির মোট আয়ের ৩০ থেকে ৫০ শতাংশই আসে আমেরিকার বাজার থেকে।

তবে বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, বাইরে থেকে আমেরিকায় আমদানি করা ওষুধের উপর উচ্চ শুল্ক চাপালে তা ওয়াশিংটন ও নয়াদিল্লি উভয়ের উপরেই দ্বিমুখী প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ, এর ফলে এক দিকে যেমন উৎপাদন খরচ বাড়বে, তেমনই পাল্লা দিয়ে বাড়বে বিক্রয়মূল্যও। আমেরিকায় ওষুধের ঘাটতিও দেখা দিতে পারে। ট্রাম্পের ঘোষণার পর থেকেই বিভিন্ন ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থার শেয়ারের দাম এক ধাক্কায় অনেকটা পড়ে গিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement