নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স।
এখন থেকে রূপান্তরকামী খেলোয়াড়েরা আর অংশগ্রহণ করতে পারবেন না মেয়েদের খেলায়! এ বার এমনটাই জানিয়ে দিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বুধবার এ সংক্রান্ত একটি নির্বাহী আদেশে সাক্ষরও করে ফেলেছেন তিনি।
বুধবার হোয়াইট হাউসে নয়া ওই নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন ট্রাম্প। সঙ্গে ছিলেন বেশ কয়েক জন শিশু ও মহিলা ক্রীড়াবিদ। ছিলেন মার্কিন হাউস স্পিকার মাইক জনসন, কংগ্রেসওম্যান মার্জোরি গ্রিন-সহ শীর্ষস্থানীয় রিপাবলিকান নেতারাও। নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষরের পর বিজয়ের হাসি হেসে ট্রাম্প বলেন, ‘‘আজ থেকে মেয়েদের খেলাধুলার বিরুদ্ধে দীর্ঘ যুদ্ধের অবসান হল!’’
প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার পরেই ট্রাম্প স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন যে, আমেরিকায় এ বার থেকে সরকারি খাতায় দু’টিই লিঙ্গ থাকবে— পুরুষ এবং স্ত্রী। এর বাইরে আর কোনও লিঙ্গপরিচয়কে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না তাঁর জমানায়! চলতি বছরের জানুয়ারিতে দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর ট্রাম্প জানিয়ে দেন, শীঘ্রই তিনি এ বিষয়ে একটি নির্বাহী আদেশও জারি করবেন। নানা সূত্রে জল্পনা শুরু হয়, এখন থেকে পাসপোর্ট, ভিসা এবং অন্য সব সরকারি নথিপত্রে পুরুষ এবং মহিলা— এই দু’টি লিঙ্গেরই উল্লেখ থাকবে। নির্দেশ অনুসারে, শারীরিক গঠনগত দিক থেকে যে মানুষ যে লিঙ্গের, শুধু মাত্র সেটিরই উল্লেখ থাকবে সরকারি নীতিতে।
রূপান্তরকামীদের জন্য এর আগে সরকারি নথিতে পৃথক লিঙ্গের ব্যবস্থা নিয়ে নীতি চালু করেছিলেন আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। চার বছর আগে ওভাল অফিসের দায়িত্ব নিয়ে প্রথম দিনেই বাইডেন এই নীতি চালু করেছিলেন। ট্রাম্প দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসতেই ওই নীতি বদলে ফেলতে উদ্যোগী হন। এমনকি, ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারের প্রায় ৫০ শতাংশ জুড়েই ছিল সমকামী ও রূপান্তরকামীদের বিরুদ্ধে প্রচার। প্রেসিডেন্টের শপথগ্রহণের দিন ওয়াশিংটনের বিশপ ম্যারিয়ান এগডার বাড সমাজে সমকামী-রূপান্তরকামী মানুষদের অস্তিত্ব স্বীকার করতে সরাসরি ট্রাম্পকে অনুরোধ করেন। কিন্তু তাতে চিঁড়ে ভেজেনি। ট্রাম্প রয়ে গেছেন ট্রাম্পেই। সেই আবহে এ বার এই নির্দেশকে ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
বুধবার ট্রাম্প বলেন, ‘‘আমরা মেয়েদের খেলাধুলার ঐতিহ্যকে রক্ষা করতে চাই। আমরা পুরুষদের মেয়েদেরকে মারধর কিংবা জখম করতে দেব না। এখন থেকে মেয়েদের খেলা শুধু মেয়েদেরই।’’ ট্রাম্প আরও জানিয়েছেন, ২০২৮ সালে আমেরিকার লস অ্যাঞ্জেলেসে অলিম্পিক্স হওয়ার আগেই এ সংক্রান্ত নিয়ম বদলের জন্য আন্তর্জাতিক অলিম্পিক্স সংস্থা (আইওসি)-র উপর চাপ সৃষ্টি করবেন তিনি।