আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা। কেউ কেউ তাই বলছেন ‘বি-ডে’। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়ার আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া (ব্রেক্সিট) শুরু হওয়ার মুখে। আগামিকাল ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্টকে চিঠি লিখে যা শুরু করবেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে। এ সবই নির্ধারিত। তবু শঙ্কার মেঘ ফিরে এসেছে ব্রিটেনবাসীর মনে। কী হবে এর পর?
এই প্রক্রিয়া শেষ হতে অন্তত দু’বছর। ২৯ মার্চ, ২০১৯ হল মেয়াদ। তবে দু’পক্ষ সম্মত হলে এই সময়সীমা প্রয়োজনে আরও বাড়তে পারে।
প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে এখন ত্রিমুখী সঙ্কটের মুখে। এক দিকে দেশের মানুষের চিন্তা দূর করে ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া মসৃণ ভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চ্যালেঞ্জ। অন্য দিকে স্কটল্যান্ডের ব্রিটেন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার চোখরাঙানি। বেঁকে বসেছে নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডও। তারাও চাইছে, ব্রিটেন থেকে বেরিয়ে গিয়ে রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ডের অংশ হিসেবে ইইউ-এ যোগ দিতে।
সঙ্গে রয়েছে দেশের অর্থনীতি নিয়ে চাপ। ইইউ-এর ‘অভিন্ন বাজার’ থেকে বেরিয়ে গেলে শিল্প ক্ষেত্র ও ব্যবসা-বাণিজ্য কতটা ধাক্কা খাবে তা নিয়ে ভাবিত গোটা ব্রিটেন। সঙ্গে পাউন্ডের দাম পড়ে যাওয়ার ভাবনাও আছে। ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়া শুরু হতেই চাপ পড়বে অভিবাসীদের উপরে। কর্মীর অভাব একটা বড় চিন্তা অনেক শিল্পপতির। রেস্তোরাঁ, নির্মাণ শিল্প এবং স্বাস্থ্য পরিষেবা অনেকটাই ইইউ-এর সদস্যদেশের নাগরিকদের উপরে নির্ভরশীল।
আরও পড়ুন: ফের পথে ১০৩ বছরের ভিনটেজ গাড়ি! সৌজন্যে ৩-ডি প্রিন্টার
এ গেল অন্দরের লড়াই। বেরিয়ে যাওয়ার মীমাংসায় ইইউ-এর সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি করতে যদি ব্যর্থ হন টেরেসা, তা হলে অভিন্ন বাজারের সুবিধা ছেড়ে ‘বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা’-র নিয়ম অনুযায়ী চলতে হবে ব্রিটেনকে। যার অর্থ, দেশের বাইরে
জিনিস কেনাবেচা দু’টোই ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়বে। চিন্তা অন্য দেশের ব্যাঙ্ক এবং বিমান সংস্থাগুলিরও। অনেকেরই প্রশ্ন, তাদেরও কি পাট চুকিয়ে ইইউ-অধীনস্থ দেশে চলে যেতে হবে? যার ফলে কাজ হারাতে হবে ব্রিটেনের মানুষকেও! আর ইইউ-এর নাগরিকরা ব্রিটেনে এ বার কতটা স্বস্তিতে থাকতে পারবেন, সেই উদ্বেগও রয়েছে। ব্রেক্সিট সচিব ডেভিড ডেভিসের আশ্বাস, অভিবাসী প্রসঙ্গ উদারতার সঙ্গেই দেখা হবে। ব্রিটেনে থাকা ইইউ-এর বাইরের ‘যোগ্যতাসম্পন্ন’ নাগরিকদেরও ভরসা দেন ডেভিস।