লাইভ খুন! নীতিই বদলাবে ফেসবুক

ফেসবুক লাইভ! এই দু’টি শব্দেই এখন মজে রয়েছে গোটা দুনিয়া। প্রচার থেকে শুরু করে দুর্নীতি সামনে আনা অথবা বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ বা ফেসবুকে বন্ধুদের মনোরঞ্জন— এই সবই টিকে রয়েছে ফেসবুক লাইভের দৌলতে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

সান ফ্রান্সিসকো শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:১৯
Share:

ফেসবুক লাইভ! এই দু’টি শব্দেই এখন মজে রয়েছে গোটা দুনিয়া। প্রচার থেকে শুরু করে দুর্নীতি সামনে আনা অথবা বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ বা ফেসবুকে বন্ধুদের মনোরঞ্জন— এই সবই টিকে রয়েছে ফেসবুক লাইভের দৌলতে। কিন্তু এই লাইভের ব্যাপারটাই মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠবে, তা হয়তো ভাবতেও পারেননি ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। কারণ, শুধু প্রচার বা ভাল কাজের জন্য ফেসবুক লাইভের ব্যবহার হচ্ছে, ঠিক তেমনটা নয়। কেউ কেউ গোটা দুনিয়াকে সাক্ষী রেখে আত্মহত্যাও করছেন ফেসবুক লাইভ-এ! তবে রবিবার ফেসবুক লাইভে খুন দেখানোর পরে বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসেছেন ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

ফেসবুক লাইভে আত্মহত্যা দেখা গেলেও খুনের ঘটনা এই প্রথম!

গত রবিবার ৭৪ বছরের এক বৃদ্ধকে গুলি করে খুন করার ছবি ফেসবুকে লাইভ দেখানোর অভিযোগ ওঠে ক্লিভল্যান্ডের স্টিভ স্টিফেন নামে ৩৭ বছরের এক যুবকের বিরুদ্ধে। শুধু তা-ই নয়, ফেসবুক লাইভে আলাদা আলাদা ভিডিও-য় স্টিভ দাবি করে, ইস্টারের সময় সে আরও অনেককে খুন করেছে। এবং এই কাজ সে চালিয়ে যাবে। তার পর থেকেই আমেরিকার ওহাইয়োর প্রদেশের পুলিশ থেকে এফবিআই হন্যে হয়ে খুঁজতে থাকে তাঁকে। ক্লিভল্যান্ডের পুলিশ-প্রধান সোমবার এক সাংবাদিক বৈঠকে সরাসরি স্টিভের উদ্দেশেই বার্তা দেন, ‘‘আর কাউকে মেরো না। ধরা দাও। আমরা যতটা সম্ভব রক্তপাতহীন ভাবে বিষয়টি মেটাতে চাইছি।’’

Advertisement

শেষটা অবশ্য রক্তপাতহীন ভাবে হল না। পুলিশের তাড়া খেয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ার পরে পেনসিলভানিয়া রাজ্যের এরি শহরে গাড়ির ভিতরে বসে স্টিভ নিজেকে গুলি করে। ‘‘স্টিভ আত্মহত্যা করেছে মঙ্গলবার’’, স্বস্তির সঙ্গে জানায় ক্লিভল্যান্ডের পুলিশ।

কিন্তু স্বস্তিতে নেই ফেসবুক। স্টিভের মৃত্যু হলেও তার কীর্তি ‘ফেসবুক লাইভ’ নিয়েই জোরদার প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন হিংসাত্মক ভিডিও কী ভাবে পোস্ট করার ছাড়পত্র দিচ্ছে ফেসবুক, সেই প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছেন ফেসবুক ব্যবহারকারীরাই। কড়া নিন্দার মুখে পড়ে গত কালই মুখ খোলেন ফেসবুক গ্লোবাল অপারেশনস ও মিডিয়া পার্টনারশিপসের ভাইস প্রেসিডেন্ট জাস্টিন ওসোফস্কি। তিনি জানান, ওই ঘটনার পরেই নীতিতে কিছু বদল আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। কারণ তাঁর বক্তব্য, সারা বিশ্বের মানুষকে নিরাপদে রাখাই ফেসবুকের লক্ষ্য। কী বদল, তা অবশ্য ভাঙেননি তিনি।

আরও পড়ুন:জুনেই ভোট চাইছেন মে, অবাক ব্রিটেন

স্টিভের ভিডিও প্রসঙ্গে জাস্টিন বলেন, প্রথম ভিডিও অর্থাৎ যেখানে আততায়ী খুন করার কথা জানাচ্ছে, সেটি পোস্ট হওয়ার পরে আপত্তি জানিয়ে কোনও রকম রিপোর্ট আসেনি। দ্বিতীয় ভিডিওটি অর্থাৎ যেটায় খুনের ঘটনা দেখানো হয়েছে, সেটি পোস্ট করার প্রায় পৌনে দু’ঘণ্টা পরে আপত্তি জানিয়ে রিপোর্ট আসতে শুরু করে। তৃতীয় ভিডিওটিতে যেখানে খুনের কথা কবুল করেছে স্টিভ, সেই ভিডিওটি পোস্ট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রবল আপত্তি জানিয়ে রিপোর্ট আসতে শুরু করে। ফেসবুক কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, ‘‘যাঁরা ওই ভিডিও ও অন্যান্য আপত্তিকর পোস্ট রিপোর্ট করেছেন, তাঁদের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। যাঁরা ফেসবুককে নিরাপদে রাখতে প্রতি দিন আমাদের সাহায্য করছেন, ধন্যবাদ তাঁদেরও।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন