বিচারে সন্তুষ্ট নিহতের ভাই

রায় বেরনোর পরেও কোনও প্রতিক্রিয়া জানাতে অস্বীকার করেন হোলি আর্টিজান বেকারির শেফ সাইফুলের পরিবার। সাইফুল পিৎজার কারিগর ছিলেন। পুলিশি অভিযানে তিনি মারা যান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঢাকা শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:৩৭
Share:

মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার পরে হাতকাটা নাসিরুল্লা। ঢাকার কোর্টে। এএফপি

হোলি আর্টিজান রেস্তরাঁয় হামলার খবর পেয়ে দৌড়ে গিয়েছিলেন জঙ্গি-বিরোধী অভিযানে দক্ষ পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি) রবিউল ইসলাম। জঙ্গিদের ছোড়া গ্রেনেডে প্রাণ হারান তিনি। এর পরে আরও পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়, ভোররাতের অভিযানে হানাদারদের মেরে রেস্তরাঁ জঙ্গিমুক্ত করে। বুধবার সেই মামলার রায় বেরনোর পরে রবিউলের ভাই শামসুজ্জামান শামস বলেন, ‘‘সে দিন যে যন্ত্রণা ছিল, আজ তিন বছর পরেও তা রয়েছে। ভাই হারানোর শোক কখনও ভুলব না। তবে এই রায়ে আমরা খুশি। এত দিনে আমরা সুবিচার পেলাম।’’ ভাইয়ের পরিবার সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে শামস বলেন, ‘‘ভাইয়ের স্ত্রীকে সরকার চাকরি দিয়েছে। বাচ্চারা বড় হচ্ছে।’’

Advertisement

তবে রায় বেরনোর পরেও কোনও প্রতিক্রিয়া জানাতে অস্বীকার করেন হোলি আর্টিজান বেকারির শেফ সাইফুলের পরিবার। সাইফুল পিৎজার কারিগর ছিলেন। পুলিশি অভিযানে তিনি মারা যান। পুলিশ সেই সময়ে সাইফুলকেও জঙ্গি বলে দাবি করে। কিন্তু তাঁর পরিবার এর প্রতিবাদ জানিয়েছিল। এ দিন সাইফুলের স্ত্রী সনিয়া বেগম জানান,

রায় শুনতে তিনি সুদূর শরিয়তপুর থেকে ঢাকায় এসেছেন। তিনি বলেন, ‘‘রায়ে আমাদের অপবাদের অবসান হল না। আমার স্বামী কখনওই জঙ্গি ছিলেন না। তিনি শেফের কাজ করতেন। তাঁর বেতনে আমাদের সংসার চলত।’’ রায়ে বিষয়টি স্পষ্ট হওয়া উচিত ছিল বলে মনে করেন সনিয়া। বহু চেষ্টা করেও শেষকৃত্যের জন্য স্বামীর দেহ পাননি তিনি। জানান, নাম-ঠিকানা থাকা সত্ত্বেও বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়েছে সাইফুলকে। সরকারের কাছে সনিয়ার আর্জি— সাইফুলকে অপরাধমুক্ত করা হোক। গোটা পরিবারের জন্য সেটা বড় প্রয়োজন।

Advertisement

আসামিদের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, এই রায়ের বিরুদ্ধে তাঁরা উচ্চ আদালতে আবেদন করবেন। রায়ে স্বভাবতই তাঁরা অখুশি। এ দিন আদালতে এসেছিলেন বৃদ্ধ আব্দুল হাকিম। তাঁর ছেলে শরিফুল ইসলাম খালেদকে প্রাণদণ্ড দিয়েছেন বিচারক। তিনি বলেন, ‘‘সুবিচারের আশায় এসেছিলাম। আমাদের সঙ্গে অন্যায় হল।’’

তবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘‘মাত্র তিন বছরের মধ্যে সুষ্ঠু বিচার করে রায় দেওয়ায় এই মামলা বিশ্বের কাছে সাধুবাদ কুড়োবে। আমরা রায়ে সন্তুষ্ট।’’ আইনমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশেই দ্রুত বিচারের জন্য মামলাটি সন্ত্রাস-বিরোধী বিশেষ আদালতে পাঠানো হয়েছিল।

ঢাকার মার্কিন দূতাবাস একটি বিবৃতিতে বলেছে, ‘‘এই রায়ে নিহতদের পরিবারের কষ্ট কিছুটা লাঘব হবে। এই বিচার বাংলাদেশের কাছে মাইলফলক হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন