বাধ্য হয়েই কি ইস্তফা এফবিআই সহ-প্রধানের

দেশের একাধিক সংবাদমাধ্যম আবার বলছে, চাকরি ছাড়ার ব্যাপারে পঞ্চাশ ছুঁইছুঁই ম্যাকাবেকে ধারাবাহিক ভাবে চাপ দিচ্ছিলেন এফবিআই-প্রধান ক্রিস্টোফার রে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৫৬
Share:

অ্যান্ড্রু ম্যাকাবে

মার্চের মাঝামাঝি অবসর নেওয়ার কথা। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর প্রতি একেবারেই সন্তুষ্ট নন। তাই মেয়াদ শেষ হওয়ার মাস দেড়েক আগেই চাকরিতে ইস্তফা দিতে বাধ্য হলেন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই-এর ডেপুটি ডিরেক্টর অ্যান্ড্রু ম্যাকাবে। হোয়াইট হাউসের যদিও দাবি, এতে ট্রাম্পের কোনও হাত নেই।

Advertisement

দেশের একাধিক সংবাদমাধ্যম আবার বলছে, চাকরি ছাড়ার ব্যাপারে পঞ্চাশ ছুঁইছুঁই ম্যাকাবেকে ধারাবাহিক ভাবে চাপ দিচ্ছিলেন এফবিআই-প্রধান ক্রিস্টোফার রে। জেমস কোমিকে সরিয়ে যাঁকে ওই পদে বসিয়েছিলেন খোদ প্রেসিডেন্ট। মে মাসে পদ গিয়েছিল কোমির। আর রে এসেছিলেন অগস্টে। মাঝখানের এই সময়ে কিন্তু ম্যাকাবেই ছিলেন সর্বেসর্বা। মার্কিন ভোটে রুশ হস্তক্ষেপের তদন্ত করছিলেন।

কূটনীতিকেরা বলছেন, ‘‘এটাই ট্রাম্পের অসন্তোষের আসলে কারণ। সঙ্গে ম্যাকাবের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তো ছিলই।’’ শোনা যাচ্ছে, ম্যাকাবে রুশ তদন্ত নিয়ে যে ভাবে এগোচ্ছিলেন, তাতে তাঁকে সরানো নিয়ে রিপালিকানদের তরফে ব্যাপক চাপ আসছিল।

Advertisement

গত কাল ম্যাকাবে ইস্তফা দেওয়ার পরে এফবিআই-প্রধান জানিয়েছেন, সংস্থার কর্মপদ্ধতি এবং মানোন্নয়নের চেষ্টায় তৎপরতা এখন তুঙ্গে। এফবিআই-এর ইনস্পেক্টর জেনারেল শীঘ্রই একটি পর্যালোচনা-রিপোর্টও পেশ করতে চলেছেন। তাঁর ইঙ্গিত, এ সবের জেরেই আগাম ইস্তফা দিলেন ম্যাকাবে। যদিও কবে সেই ‘রিপোর্ট’ প্রকাশ্যে আসবে, কেউ তা বলতে পারছেন না। বরং একটি সংবাদমাধ্যমের দাবি, ম্যাকাবেকে সংস্থার মধ্যেই অপেক্ষাকৃত নিম্নপদে সরাতে তৎপর ছিলেন রে। আর তা প্রেসি়ডেন্টের নির্দেশেই।

২০১৬-র প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট শিবিরের হয়ে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন অ্যান্ড্রু ম্যাকাবের স্ত্রী জিল ম্যাকাবে। তাঁর ভোট-তহবিল ছিল প্রায় ৭ লক্ষ ডলারের। ট্রাম্পের অভিযোগ, ওটা পাইয়ে দিয়েছিলেন হিলারি ক্লিন্টনই। উদ্দেশ্য, তাঁর বিরুদ্ধে চলতে থাকা ই-মেল তদন্ত প্রভাবিত করা। ম্যাকাবের প্রতি ট্রাম্পের অসন্তোষের এটাও ‌একটা কারণ। সংবাদমাধ্যমের একাংশের দাবি— ম্যাকাবে কাকে ভোট দিয়েছিলেন, সম্প্রতি ট্রাম্প সেটাও তাঁর কাছে সরাসরি জানতে চেয়েছিলেন। ম্যাকাবে জানিয়েছিলেন, তিনি কাউকেই ভোট দেননি। উত্তরটা পছন্দ হয়নি প্রেসিডেন্টের। কূটনীতিকদের একাংশ বলছেন, এ বার হাতেনাতে তার ফলও পেয়ে গেলেন ম্যাকাবে।

তা হলে রুশ তদন্তের কী হবে? ম্যাকাবে ইস্তফা দেওয়ার পরেই টুইটারে তাঁর যোগ্যতা ও ক্ষমতা নিয়ে সওয়াল করতে দেখা গিয়েছে প্রাক্তন এফবিআই কর্তা কোমিকে। তাঁর কথায়, ‘‘ম্যাকাবের মতো লোকের আজ সত্যিই বড় প্রয়োজন।’’ ট্রাম্প শিবিরের যদিও দাবি, প্রশাসন নিজেদের মতো করেই রাশিয়াকে ‘শিক্ষা’ দিয়ে চলেছে। গত কালই রাত ১২টার ঠিক দশ মিনিট আগে ‘পুতিন লিস্ট’ প্রকাশ করেছে মার্কিন রাজস্ব বিভাগ। যাতে নাম রয়েছে রাশিয়ার ১১৪ জন রাজনীতিক ও ৯৬ জন ব্যবসায়ীর।

আমেরিকার দাবি, এঁরা প্রত্যেকেই রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ। ডেমোক্র্যাটদের অভিযোগ ছিল, ‘বন্ধু’ রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা চাপানো নিয়ে ট্রাম্প উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই টালবাহানা করে চলেছেন। তবে তালিকা বেরোলেও, এঁদের বিরুদ্ধে এখনই কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে প্রশাসন। কিন্তু আগামী দিনে যাতে তা হয়, এখন থেকেই কোমর বাঁধছে বিরোধী শিবির।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন