‘আস্থা’ ভোটে পরাজিত হলেন ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বেরু। ছবি: রয়টার্স।
‘আস্থা’ ভোটে পরাজিত হলেন ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বেরু। এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে এই নিয়ে দ্বিতীয় বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হারাচ্ছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ। ফ্রান্সের অর্থনৈতিক নিম্নগতিতে লাগাম পরাতে ব্যর্থ হওয়াকেই এর কারণ হিসাবে দেখছেন অনেকে।
সোমবার ফরাসি আইনসভার ৫৭৭ সদস্যের মধ্যে ৩৩১ জন সদস্য বেরুর প্রতি ‘অনাস্থা’ জানান। এর পরেই প্রেসিডেন্টের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেওয়া নিয়ে তাঁর উপর চাপ সৃষ্টি করা হয়। গত কয়েক বছর ধরেই ফ্রান্সে নাগরিকদের দৈনন্দিন খরচ বাড়ছে। মূলত এই অর্থনৈতিক সঙ্কটকে হাতিয়ার করেই সুর চড়িয়েছিল অতি দক্ষিণপন্থী ন্যাশনাল র্যালি। আর এই পরিস্থিতিতে বেরু নিজেই ভোটাভুটির দিকে যান। অনাস্থা ভোটের আগে, তিনি তাঁর আর্থিক এবং ভবিষ্যতের পরিকল্পনার কথা জানান ও তাঁকে সমর্থন করার আবেদনও করেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হল ফ্রান্স। সেখানেই সরকার পড়ে যাওয়ায় আর্থিক সঙ্কট বৃদ্ধি পাবে বলেই আশঙ্কা সকলের। গত বছরের ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রী হন বেরু। ন’মাসেরও কম সময়ের মধ্যে ‘আস্থা’ ভোটে হারলেন তিনি। তা নিয়ে জোর চর্চা শুরু ফ্রান্সে।
ফরাসি সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীকে মনোনীত করেন প্রেসিডেন্ট। কিন্তু আইনপ্রণেতারা যে কোনও সময়ে তাঁকে প্রত্যাখ্যান করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে হয়। এই নিয়ে দু’বার ‘অনাস্থা’ ভোটে পর পর দুই প্রধানমন্ত্রী পরাজিত হলেন।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৪ ডিসেম্বর ফরাসি পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ‘ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি’তে আস্থাভোটে পরাজিত হন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মাইকেল বার্নিয়ের। তাঁর বিরুদ্ধে এককাট্টা ছিলেন বামপন্থী এবং অতি দক্ষিণপন্থী সদস্যেরা। মাত্র দু’মাস ২৯ দিন আগে কুর্সি পান তিনি। ‘আস্থা’ ভোটের পর, প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁর কাছে পদত্যাগপত্র জমা করেন বার্নিয়ের। ১৯৫৮ সালে পঞ্চম ফরাসি প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর থেকে সবচেয়ে কম সময় টিকল সে দেশের সরকার।
মাইকেলের পদত্যাগের পরেই সে দেশে নতুন প্রধানমন্ত্রী হয়ে আসেন ফ্রাঁসোয়া বেরু।