শেষ সম্বল: ভূমিকম্পে তছনছ হয়ে গিয়েছে বাড়ি। ধ্বংসস্তূপ ঘেঁটে মিলেছে টেডিবেয়ার ও সামান্য কিছু সামগ্রী। শনিবার ইন্দোনেশিয়ার পালুতে। এপি
আট দিন আগে সুনামি-কম্পনের জোড়া ধাক্কায় কেঁপে উঠেছিল ইন্দোনেশিয়া। প্রকৃতির রোষ ঠান্ডা হয়ে এলেও এ বার মাথাচাড়া দিচ্ছে নতুন নতুন বিপদ। বিশেষ করে রোগ, সংক্রমণ মহামারির আকার নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছে প্রশাসন।
সুলাবেসি দ্বীপের পালু শহরে শনিবার পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬৪৯। নিখোঁজ হাজারেরও বেশি। দুর্যোগের আট দিন পরে ধ্বংসস্তূপের তলায় চাপা পড়া কেউই আর বেঁচে নেই বলে মনে করছে প্রশাসন। তবে তাদের খোঁজ এখনই বন্ধ হচ্ছে না। ধসে পড়া কংক্রিটের চাঁইয়ের নীচ থেকে বেরিয়ে আসছে পচাগলা
দেহাবশেষ। আর তাতেই সংক্রমণের ভয় পাচ্ছে প্রশাসন। সে জন্য উদ্ধারকর্মীদের প্রয়োজনীয় টিকা দেওয়ার কাজও চলছে সমান তালে। ইন্দোনেশিয়ার মানচিত্র থেকে প্রায় মুছে যাওয়া বালারোয়া আর পেটোবোয় এমন শত শত দেহ থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন প্রশাসনের এক আধিকারিক। কিছু কিছু দেহ এতটাই বিকৃত যে চেনার কোনও উপায় নেই। উদ্ধারকাজে নেমে এমনই ভয়ানক অভিজ্ঞতা হয়েছে পালুর এক সেনা আধিকারিক, সার্জেন্ট সাফারুদ্দিনের।
বললেন, ‘‘একটা ধ্বংসস্তূপের সামনে দাঁড়িয়েছিলাম। হপ্তাখানেক আগেও এখানে একটা ইসলামি স্কুল ছিল। মৃতদেহ খুঁজতে সেনা জওয়ানরা একটা প্লাস্টিকের ব্যাগ নিয়ে ভিতরে ঢুকেছিল। ফিরল কেবল ধড় থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া তিনটে মাথা নিয়ে! তার মধ্যে একটা বাচ্চার।’’
পালুর কাছাকাছি শহরগুলির হাসপাতালে এখন উপচে প়ড়া ভিড়। ওষুধ নেই। সরঞ্জাম নেই। প্রয়োজনের তুলনায় চিকিৎসক, নার্সের সংখ্যাও অনেক কম। তবু তারই মধ্যে পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করছে প্রশাসন। পালু শহরে সেনার এক অস্থায়ী হাসপাতালে চার নবজাতকের জন্মের খবর হাসি ফুটিয়েছে চিকিৎসাকর্মীদের ক্লান্ত মুখে।