সফররত ইরানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী। ফাইল চিত্র।
চাবাহার বন্দর হয়ে আফগানিস্তানে পৌঁছানোর স্বপ্ন বাস্তবতা পেয়েছে। ইরানের সঙ্গে এই কূটনৈতিক সাফল্যের পর রীতিমতো উৎসবের মেজাজে থাকার কথা সাউথ ব্লকের। কিন্তু ইরানকে ঘিরে যে মেঘ তৈরি হচ্ছে, তাতে সেই আনন্দ উপভোগের বিশেষ সুযোগ অবশ্য থাকছে না। কূটনৈতিক শিবিরের মতে, কী ভাবে আন্তর্জাতিক চাপ সামলে ইরানের সঙ্গে মৈত্রী অটুট রাখা যাবে, সেটাই এখন বড় কাঁটা হয়ে উঠতে চলেছে মোদী সরকারের।
সদ্য শেষ হয়েছে ইরানি প্রেসিডেন্ট হাসান রোহানির ভারত সফর। জঙ্গি দমনের ক্ষেত্রে দু’দেশের মতৈক্যে পৌঁছানো, বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও বাড়ানো, ভারতীয়দের জন্য ইরানি ভিসা শিথিল করার পাশাপাশি চাবাহার বন্দরটির একটি অংশ লিজ পেয়েছে নয়াদিল্লি। এতে পাকিস্তানকে এড়িয়ে মধ্য এশিয়ার পণ্য পৌঁছানো সম্ভব হবে ভারতের পক্ষে।
তবে এই সুবিধাগুলি পাওয়া সত্ত্বেও তা কত দিন ধরে রাখা যাবে তা নিয়ে উৎকন্ঠায় দেশের কূটনৈতিক কর্তারা। ঘটনাচক্রে রোহানির ভারত সফর শেষ হওয়ার ঠিক পরেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প টুইট করে হুঙ্কার ছেড়েছেন ইরানের প্রতি। তাঁর বক্তব্য, আর চার মাস সময় দেওয়া হচ্ছে। তার মধ্যে যদি আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের এড়িয়ে পরমাণু চুল্লি তৈরির চেষ্টা তেহরান বন্ধ না করে তা হলে ওবামা-জমানার আমেরিকা-ইরান পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাবে হোয়াইট হাউস। আর্থিক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে। ট্রাম্পের এই ঘোষণায় যথেষ্ট চাপে নয়াদিল্লিও। ভারতের কৌশলগত মিত্র আমেরিকা যদি ফের ইরানের উপরে আর্থিক নিষেধাজ্ঞা জারি করে, তা হলে অনিবার্য ভাবে ধাক্কা খাবে ভারত-ইরান বাণিজ্যিক লেনদেন। আমেরিকা এবং ইরানের মধ্যে ভারসাম্য রাখতে ইউপিএ জমানাতেও নাকানিচোবানি খেতে হয়েছিল। তার পুনরাবৃত্তি এই মুহূর্তে আদৌ অভিপ্রেত নয় মোদী সরকারের কাছে।