সুফিয়ান
পরনে হলুদ হুডি-কার্গো প্যান্ট। গালে হাল্কা দাড়ি। সংবাদমাধ্যমের সামনে বলছিলেন, ‘‘আমি জেহাদি জন নই।’’ সেই সঙ্গে চলছিল নিজের দেশে ফেরার আকুতিও!
২০১৪ সালে ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিগোষ্ঠীতে নাম লিখিয়েছিলেন জার্মানির সুফিয়ান। যদিও আসল নামটা জানাননি। শুধু জানান, দক্ষিণ-পশ্চিম জার্মানির স্টুটগার্টের বাসিন্দা তিনি।
আইএসের হয়ে লড়াই করার অভিযোগে যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়া থেকে কয়েকশো বিদেশিকে বন্দি করেছিল কুর্দিশ পিপলস প্রোটেকশন ইউনিটস (ওয়াইপিজি)। সেই তালিকায় ছিলেন সুফিয়ানও। গত বছর সুফিয়ানকে আটক করেছিল ওয়াইপিজি। সেখানে সংবাদমাধ্যমের কাছে সাক্ষাৎকার দেওয়ার জন্য বাছা হয় তাঁকেই।
সংবাদমাধ্যমের কাছে গত কয়েক বছরের হঠাৎ পাল্টে যাওয়া জীবনের গল্পই শোনাচ্ছিলেন তিনি। সুফিয়ান জানান, ইসলামিক নীতিতে পবিত্র জীবনযাপন করার জন্যই তিনি আইএসে যোগ দিয়েছিলেন। তুরস্ক পেরিয়ে ২০১৫ সালের মার্চে সিরিয়া পৌঁছন। সেখানে তিনি যুদ্ধের প্রশিক্ষণও পেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর দাবি, তিনি কখনও লড়াই করেননি। জীবনে কাউকে হত্যাও করেননি। রাকার একটি হাসপাতালে তাঁকে নিয়োগ করা হয়। কারণ ডাক্তারি জুতো তৈরিতে তাঁর ১২ বছরের অভিজ্ঞতা ছিল। এর পর ২০১৬ সালে উত্তর-পশ্চিম ইদলিবে গিয়ে বিয়ে করেন সিরিয়ার এক মহিলাকে। তাঁদের একটি ছেলে রয়েছে। সুফিয়ান বলে চলেন, আইএসের কার্যকলাপে বিরক্ত হয়ে সেখান থেকে পালানোর সিদ্ধান্ত নেন তিনি। সুফিয়ানের বক্তব্য, কাউকে হত্যা করার জন্য প্রস্তুত ছিলেন না তিনি। সকলেই পালাচ্ছিলেন।
এর এক বছর পরে স্ত্রী আর ছেলের থেকেও বিচ্ছিন্ন হয়ে যান সুফিয়ান। ফলে এখন ভীষণ ভাবে পরিবারকে ফিরে পেতে চাইছেন তিনি। আর বলেন, ‘‘আমি জেহাদি জন নই, আবু বকর আল বাগদাদিও নই, বা আদানিও নই।’’ এখন জার্মানির কাছে তাঁর করুণ আর্তি, দেশে ফেরানো হোক তাঁকে। এমনকি এ-ও বলেন, জার্মানি যদি তাঁকে শাস্তি দিতে চায়, তা হলে সেটাও মেনে নেবেন তিনি। শুধু স্ত্রী-ছেলের সঙ্গে নতুন করে আবার সব কিছু শুরু করতে চান সুফিয়ান।