‘জঙ্গি-উৎপাদনে’ যে দেশের ‘খ্যাতি’ এখন ভূবন-জোড়া, সেই পাকিস্তান এখন কৃষি ও শিল্পে উৎপাদনশীলতার নিরিখে দক্ষিণ এশিয়ার সবক’টি দেশের পিছনে পড়ে গিয়েছে। এমনকী, ২৪ বছর পর স্বাধীন হওয়া দেশ বাংলাদেশের চেয়েও অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে নওয়াজ শরিফের দেশ। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির তালিকায় পাকিস্তানের জায়গাটা এখন ১২২ নম্বরে। বাংলাদেশ ১০৬ নম্বরে! আর লাগাতার সন্ত্রাসের ঘটনা দিয়ে পাকিস্তান প্রতিবেশী দেশ ভারতের অর্থনীতিকে পঙ্গু করার চেষ্টা চালানোর পরেও ওই তালিকায় শরিফের দেশের চেয়ে আমরা এগিয়ে রয়েছি অন্তত ৮৩ ধাপ। ভারত রয়েছে তালিকার ৩৯ নম্বরে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ২০১৬-’১৭ অর্থবর্ষের ‘গ্লোবাল কমপিটিটিভনেস রিপোর্ট’ এ কথা জানিয়েছে।
পাকিস্তানে ব্যবসা করা বা তাকে ফুলিয়ে-ফাঁপানো বাড়ানো অথবা বিদেশি লগ্নির ক্ষেত্রে মূল বাধাগুলিকেও ওই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। সেই বাধাগুলি কী কী? ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের রিপোর্ট বলছে, সেই বাধাগুলির মধ্যে রয়েছে দুর্নীতি, চুরি, অপরাধ, কর-ব্যবস্থা, লাল ফিতের ফাঁস, সরকারের স্থায়ীত্বের অভাব ও স্থিতিশীল অর্থনীতির অভাব।
ওই রিপোর্ট জানাচ্ছে, উৎপাদনশীলতার (গ্লোবাল কমপিটিটিভনেস ইনডেক্স বা ‘জিসিআই’) নিরিখে শ্রীলঙ্কা রয়েছে ৭১ নম্বরে। ভূটান আর নেপাল রয়েছে যথাক্রমে ৯৭ এবং ৯৮ নম্বরে। দেশগুলির অর্থনীতির হাল-হকিকৎ কেমন আর ওই সব দেশ বিদেশি লগ্নির জন্য কতটা আদর্শ, তা মাপার জন্য ২০০৫ সালে ‘জিসিআই’ চালু করেছিল ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ)। আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতায় কোনও দেশ অন্য দেশকে কতটা টক্কর মারতে পারছে বা পারবে, দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলা বিশ্ব অর্থনীতির তালে তাল মেলানোর জন্য কোনও দেশের অর্থনীতি কতটা দড়, তা মাপতেই অর্থনীতির ১২টি ‘ক্যাটেগরি’ নিয়ে এই সূচক বা ইনডেক্স মাপার পদ্ধতি চালু করেছিল ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম।
ওই ১২টি ‘ক্যাটেগরি’র মধ্যে রয়েছে- প্রতিষ্ঠান (ইনস্টিটিউশন), পরিকাঠামো (ইনফ্রা-স্ট্রাকচার), ম্যাক্রো-ইকোনমিক এনভায়রনমেন্ট, স্বাস্থ্য (হেল্থ), প্রাথমিক শিক্ষা (প্রাইমারি এডুকেশন), উচ্চশিক্ষা ও প্রশিক্ষণ (হায়ার এডুকেশন ও ট্রেনিং), পণ্য বাজারের ক্ষমতা (গুড্স মার্কেট এফিশিয়েন্সি), শ্রমিকদের ক্ষমতা (লেবার মার্কেট এফিশিয়েন্সি), অর্থনেতিক বাজারের উন্নয়নের গতি (ফাইনান্সিয়াল মার্কেট ডেভেলপমেন্ট), প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও তা গ্রহণের ক্ষমতা (টেকনোলজিক্যাল রেডিনেস), বাজারের চেহারা (মার্কেট সাইজ), ব্যবসার আধুনিকীকরণ (বিজনেস সফিসটিকেশন) ও উদ্ভাবনী ক্ষমতা (ইনোভেশন)।
আরও পড়ুন- পাকিস্তানকে জঙ্গি রাষ্ট্র ঘোষণা করা হোক, চায় ঢাকা