শপিং মলের সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে বন্দুকবাজের ছবি।
শুক্রবারের সন্ধে নামছে তখন। আমেরিকার বার্লিংটন শহরের কাসকেড শপিংমলে জমজমাট ভিড়। দোকানের ট্রায়াল রুমে একের পর এক পোশাক পরে দেখছিলেন তারি কাসওয়েল। হঠাৎ শুনলেন বাইরে বেলুন ফাটার মতো তিন-চার বার আওয়াজ। তার পরেই মনে হল, যেন একটা ড্রিল মেশিন চালিয়ে দিল কেউ!
কয়েক মুহূর্তের স্তব্ধতা। তার পরেই সাহায্য চেয়ে এক মহিলার গলায় চিৎকার আর তাঁর আতঙ্ক মেশানো কান্না। শুনেই তারি বুঝতে পেরেছিলেন, একটা কিছু ঘটেছে। ট্রায়াল রুমের দরজাটা প্রাণপণ চেপে ধরে ভেতরে লুকিয়ে ছিলেন তিনি। কত ক্ষণ, মনে নেই। উদ্ধার হওয়ার পরে জানতে পারেন, সেই দোকানেই সন্ধে সাতটা নাগাদ হানা দিয়েছিল এক বন্দুকবাজ। তার এলোপাথাড়ি গুলিতে ঘটনাস্থলেই মারা গিয়েছেন চার মহিলা। পরে খবর আসে, হাসপাতালে মারা গিয়েছেন আহত এক ব্যক্তিও।
গুলি চালানোর খবর পেয়েই ওয়াশিংটন প্রদেশের এই শহর ছেয়ে ফেলেছিল পুলিশ। দ্রুত শপিং মলটি খালি করতে শুরু করে তারা। বিভিন্ন শো-রুম, সিনেমা হল, বাথরুমের আনাচে-কানাচে লুকিয়ে থাকা আতঙ্কে দিশেহারা মুখগুলোকে উদ্ধার করে পুলিশবাহিনী। আহতদের দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালেও পাঠায়।
কিন্তু হামলাকারী? নাহ্, তার কোনও হদিস নেই। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সে উধাও। সিসিটিভি ফুটেজ ঘেঁটে এক সন্দেহভাজনের ফুটেজ পেয়েছে পুলিশ। কালো টি-শার্ট পরা ওই যুবককে রাইফেল হাতে শপিং মল থেকে বেরিয়ে যেতে দেখা গিয়েছে বলে দাবি করেছেন স্থানীয় কয়েক জন। ছবি দেখে মনে করা হচ্ছে, ওই যুবক হিস্পানিক জাতিগোষ্ঠীর। হামলাকারীকে খুঁজে বের করতে এলাকা জুড়ে জারি হয়েছে সতর্কতা। বাড়ি থেকে বেরোতে বারণ করা হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। আকাশপথে হেলিকপ্টারে নজরদারিও শুরু হয়েছে। মাত্র এক সপ্তাহ আগেই মিনেসোটার এক শপিংমলে ১৭ জনকে কুপিয়ে শেষে পুলিশের গুলিতে নিহত হয় হামলাকারী। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই বার্লিংটনের এই হামলা। মিনেসোটার ঘটনায় হামলাকারীর পরিচয় উদ্ধারের পর তাতে পরিকল্পিত সন্ত্রাসের ছায়া দেখেছিল পুলিশ। এ দিনের ঘটনাতেও জঙ্গি যোগ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।