কাবুলের ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল। এই হোটেলেই হামলা চালায় বন্দুকবাজরা। ছবি: এএফপি।
টানা ১২ ঘণ্টা গুলির লড়াই শেষে কাবুলের ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে হামলাকারী চার বন্দুকবাজকে খতম করেছে আফগান সেনা ও পুলিশের যৌথবাহিনী। ১২৬ জন পণবন্দিকে উদ্ধার করা হয়েছে। যাঁদের মধ্যে ৪১ জন বিদেশি ছিলেন। আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রক সূত্রে এমনটাই জানানো হয়েছে।
তবে হোটেলে এখনও কত লোক আছে তা স্পষ্ট জানা যায়নি। সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে, বাকিদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
মুম্বইয়ের ২৬/১১-র কায়দায় কাবুলের ওই অভিজাত হোটেলে হামলা চালায় চার বন্দুকবাজ। হামলায় নিহত হন ছয় জন।
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের বর্ষপূর্তিতে ‘স্তব্ধ’ দেশ
শনিবার স্থানীয় সময় রাত ন’টা নাগাদ এই হামলা হয়। হোটেলের কোথাও ডিনার পার্টি চলছিল, কোথাও সরকারি বৈঠক তো কোথাও আবার বিয়ের পার্টি চলছিল। সেই সময়ই চার বন্দুকবাজ রকেট লঞ্চার, হ্যান্ড গ্রেনেড ও প্রচুর বিস্ফোরক নিয়ে হোটেল চত্বরে ঢুকে পড়ে। নিরাপত্তারক্ষীরা প্রথমে তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। দু’পক্ষের মধ্যে ব্যাপক গুলি বিনিময় হয়। বন্দুকবাজের গুলিতে নিহত হন এক নিরাপত্তারক্ষী।
এর পরই বন্দুকবাজরা সোজা হোটেলের ভিতরে ঢুকে এলোপাথারি গুলি চালাতে থাকে। হ্যান্ড গ্রেনেড ছুড়তে থাকে। হোটেলের কর্মী ও আবাসিক-সহ শতাধিক জনকে পণবন্দি বানায়। হোটেলের বিভিন্ন তলে আগুন লাগিয়ে দেয় হামলাকারীরা।
হামলার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশবাহিনী এবং নিরাপত্তারক্ষীরা পৌঁছয়। পুরো হোটেল ঘিরে ফেলে অভিযানে নামে তারা। নিরাপত্তারক্ষীদের লক্ষ্য করে গুলি চালাতে থাকে বন্দুকবাজরা। পাল্টা জবাব দেয় নিরাপত্তীরক্ষীরাও। দু’পক্ষের গুলির লড়াইয়ে রাতেই এক বন্দুকবাজের মৃত্যু হয় বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানানো হয়। তিন বন্দুকবাজ তখনও হোটেলের ভিতরে লুকিয়ে ছিল। রাতভর গুলির লড়াইয়ের পর রবিরার সকালে বাকি তিন জনকে খতম করে যৌথবাহিনী। হামলার দু’দিন আগেই কাবুলের মার্কিন দূতাবাস থেকে সতর্কতা জারি করা হয়েছিল।
তবে এটি জঙ্গি হামলার ঘটনা কি না তা নিয়ে নিশ্চিত করে জানা যায়নি। এখনও পর্যন্ত হামলার দায় নেয়ই কোনও জঙ্গি সংগঠনও। ২০১১-তেও এই হোটেলে আত্মঘাতী হামলা চালিয়েছিল জঙ্গিরা। সে বছরে ২১ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
কাবুলের দু’টি অভিজাত হোটেলের মধ্যে ইন্টারকন্টিনেন্টাল একটি। এখানে সরকারি সম্মেলনও হয়। বহু বিদেশি এই হোটেলে ওঠেন। এ দিন হামলার সময় বহু বিদেশি হোটেলেই ছিলেন।