হ্যাকার-ফাঁদে ডেটিং সাইট, বিপদে ক্রেতা

প্রেমের ফাঁদ পাতা নেট-ভুবনে ঢুকে এমন ফাঁদে জড়িয়ে পড়তে হবে কে জানত! জীবনটা ছোট। প্রেম করুন! (‘লাইফ ইজ শর্ট, হ্যাভ অ্যান অ্যাফেয়ার’।) অনলাইন ডেটিং সাইটটির ক্রেতা টানার মূল মন্ত্র এটাই।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

টরন্টো শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৫ ২৩:১৪
Share:

প্রেমের ফাঁদ পাতা নেট-ভুবনে ঢুকে এমন ফাঁদে জড়িয়ে পড়তে হবে কে জানত!

Advertisement

জীবনটা ছোট। প্রেম করুন! (‘লাইফ ইজ শর্ট, হ্যাভ অ্যান অ্যাফেয়ার’।) অনলাইন ডেটিং সাইটটির ক্রেতা টানার মূল মন্ত্র এটাই। শুধু এ পাড়ার সুন্দরীর সঙ্গে ও পাড়ার সুঠাম পুরুষটির আলাপ করিয়ে দেওয়া নয়। একাকী পুরুষের জন্য পুরুষসঙ্গী, বিবাহিত মহিলার জন্য পুরুষ বা নারী, অবিবাহিতদের জন্য সঙ্গী— যেমনটি চান, একেবারে তেমনটি বেছে নিতে সাহায্য করে অ্যাশলে ম্যাডিসন নামে এই ডেটিং সাইট। এত দিন সব ভালই চলছিল। প্রেমের এই অন্তর্জাল ডালপালা শিকরবাকড় ছড়িয়ে পৌঁছে গিয়েছে দুনিয়ার বিভিন্ন অংশে। হু হু করে বেড়েছে ক্রেতার সংখ্যা।

কিন্তু এত প্রেম সইলে তো! বাদ সাধল হ্যাকার। আর তার জেরে এই সাইটে নাম লেখানো ৩ কোটি ৭০ লক্ষ ক্রেতার জীবন বিপন্ন। হ্যাকারদের হুমকি, এই ওয়েবসাইট অবিলম্বে বন্ধ না করলে সাইট থেকে ক্রেতাদের নগ্ন ছবি থেকে শুরু তাদের যৌন ফ্যান্টাসি— সব রকম তথ্য তারা প্রকাশ করে দেবে। অ্যাশলে ম্যাডিসনের টরন্টোর মূল সংস্থা ‘অ্যাভিড লাইফ মিডিয়া’ স্বীকার করেছে, তাদের ওয়েবসাইটে হানা দিয়ে হ্যাকাররা অনেক কিছুই হাতে পেয়েছে। কারা এই ঘটনার পিছনে রয়েছে, তা জানার চেষ্টা চলছে।

Advertisement

‘দ্য ইমপ্যাক্ট টিম’ বলে নিজেদের পরিচয় দিয়েছে হ্যাকাররা। ওয়েবসাইটে তাদের দাবি, অনলাইনে বিভিন্ন গোপন তথ্যের সামান্য কিছু অংশ মাত্র তারা ফাঁস করেছে। কিন্তু তাদের কথামতো সাইট বন্ধ করা না হলে ক্রেতার আসল নাম, প্রোফাইল, নগ্ন ছবি, ক্রেডিট কার্ডের সবিস্তার তথ্য— এ সবই তারা চাইলে প্রকাশ করতে পারে। কত তথ্য চুরি গিয়েছে, সে ব্যাপারে অবশ্য মুখে কুলুপ অ্যাভিড লাইফ-এর।

অ্যাশলে ম্যাডিসন অবশ্য এই বিপত্তির জন্য ক্ষমা চেয়েছে তার ক্রেতাদের কাছে। শুধু অ্যাশলে ম্যাডিসন নয়, অ্যাভিড লাইফ মিডিয়ার আরও একটি সাইট, ‘এস্টাবলিশড মেন’–ও বন্ধ করতে চায় হ্যাকাররা। তবে এই সংস্থারই আর একটি সাইট ‘কুগারলাইফ’-এ এখনও হাত পড়েনি তাদের। কুগারলাইফ-এ মহিলা ক্রেতারা তরুণ ছেলেদের খোঁজ করেন। এই তিনটি সাইট মিলিয়ে সংস্থার হাতে রয়েছে চার কোটি ক্রেতা।

মাত্র দু’মাস আগে এই রকম আরও একটি ডেটিং সাইট ‘অ্যাডাল্ট ফ্রেন্ডফাইন্ডার’-ও হ্যাকিং-হানার মুখে পড়েছিল। এই সাইটের ক্রেতার সংখ্যা অন্তত ৬ কোটি ৪০ লক্ষ।

এ বার অ্যাভিড লাইফ মিডিয়ার সাইটগুলির প্রতি হ্যাকারদের বার্তা: ‘সাইট দু’টি বন্ধ করলে আপনাদের ক্ষতি হবে। কিন্তু বন্ধ না করলে আরও ক্ষতি হবে।’ এই সাইট ব্যবহার করার পরে সব ব্যক্তিগত তথ্য সংস্থার মূল তথ্যভাণ্ডার থেকে মুছে দেওয়ার জন্য ক্রেতারা সংস্থাকে অর্থ দেন। কিন্তু হ্যাকাররা বলছে, সংস্থা সে সব রেকর্ড মোছেনি। আর এ ভাবেই তাদের হাতে এসেছে ক্রেডিট কার্ড সংক্রান্ত তথ্য।

তাই অ্যাভিড লাইফ মিডিয়ার চেয়েও এখন বেশি ভয়ে আছেন সেই ক্রেতারা। আসল পরিচয় ফাঁস হয়ে গেলে কী হবে, এখন সেই চিন্তায় ঘুম ছুটেছে তাদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন