যৌন হেনস্থা রুখতে দাওয়াই আংশিক কার্ফু

ঘড়িতে রাত এগারোটা। রেস্তোরাঁয় খেতে ঢুকলেন এক মহিলা। রাতের শহর। সারা দিনের কাজ সেরে বাড়ি ফিরছেন অন্য এক মহিলা। কিংবা, রাত এগারোটার পরেও ইন্টারনেট ক্যাফেতে কাজ করে চলেছেন এক তরুণী। রাতবিরেতে মেয়েদের এই একলা চলাফেরার জন্য তাঁদের হামেশাই যৌন হেনস্থার শিকার হতে হয়। এমনটাই মনে করেন ইন্দোনেশিয়ার বান্দা আচের মেয়র ইলিজা সাদুদ্দিন জামাল।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

বান্দা আচে শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০১৫ ০২:৫৬
Share:

ঘড়িতে রাত এগারোটা। রেস্তোরাঁয় খেতে ঢুকলেন এক মহিলা।

Advertisement

রাতের শহর। সারা দিনের কাজ সেরে বাড়ি ফিরছেন অন্য এক মহিলা।

কিংবা, রাত এগারোটার পরেও ইন্টারনেট ক্যাফেতে কাজ করে চলেছেন এক তরুণী।

Advertisement

রাতবিরেতে মেয়েদের এই একলা চলাফেরার জন্য তাঁদের হামেশাই যৌন হেনস্থার শিকার হতে হয়। এমনটাই মনে করেন ইন্দোনেশিয়ার বান্দা আচের মেয়র ইলিজা সাদুদ্দিন জামাল। আর তা থেকে বাঁচাতে খোদ মহিলাদের উপরেই আংশিক কার্ফু জারি করে বিতর্কের শিরোনামে চলে এলেন তিনি।

গত ৪ জুন এই বিষয়ে একটি নির্দেশিকা জারি করেছে বান্দা আচে প্রশাসন। নির্দেশিকা অনুযায়ী রাত এগারোটার পর রেস্তোরাঁ, খেলার জায়গা, ইন্টারনেট ক্যাফে বা কোনও পর্যটন কেন্দ্রে একা কোনও মহিলার প্রবেশ নিষেধ। তাঁর সঙ্গে স্বামী বা তাঁর পরিবারের কোনও পুরুষ থাকা বাধ্যতামূলক। এমনকী রাত ১১টার পর ওই সব জায়গায় কোনও মহিলা কাজ করতে পারবেন না বলেও উল্লেখ করা হয়েছে ওই নির্দেশিকায়।

এই নতুন নিয়ম ঠিক ভাবে মেনে চলা হচ্ছে কি না, তার উপর নজর রাখতেই তৈরি হয়েছে পুলিশ বাহিনী। আসলে ইন্দোনেশিয়ায় বান্দা আচে-তেই একমাত্র শরিয়ত আইন মেনে চলা হয়। তবে শুধু এ বার নয়, আগেও নানা ভাবে শিরোনামে উঠে এসেছে বান্দা আচে। গত বছরই সমকামীদের বিরুদ্ধে নতুন আইন হয় এখানে। সেই আইন অনুযায়ী, শহরে সমকামীদের দেখা গেলেই তাঁদের প্রকাশ্যে বেত মারা হবে। শুধু সমকামী নয়, আঁটোসাটো পোশাক পরার ‘অপরাধে’ একই শাস্তি বিধান হয়েছে মহিলাদের জন্যও। কিংবা শুক্রবারের প্রার্থনা না করলে, বা মদ্যপান করলে প্রশাসনের মতে, বেতই জুটবে সকলের।

৪ জুনের নির্দেশিকায় মহিলা ছাড়াও শিশুদের গতিবিধি নিয়েও বিধিনিষেধ চাপানো হয়েছে। বলা হয়েছে, রাত ১০টার পর কোনও বাচ্চা একলা কোথাও ঘুরে বেড়াতে পারবে না। স্বভাবতই এই নির্দেশিকা ঘিরে দানা বেঁধেছে বিতর্ক। উঠেছে নানা প্রশ্ন। তবে নির্দেশিকার পক্ষে যুক্তি দিয়েছেন মেয়র। বলেছেন, ‘‘আমরা অনেক ভেবেচিন্তেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। মহিলাদের নিরাপত্তা দেওয়াই আমাদের মূল লক্ষ্য। বিশেষত যাঁরা বিনোদন জগতে কাজ করেন।’’

কিন্তু মেয়রের সঙ্গে একমত নন অনেকেই। ‘ইন্দোনেশিয়ান ইনস্টিটিউট ফর এমপাওয়ারমেন্ট অব উইমেন অ্যান্ড চিলড্রেন’-র পক্ষ থেকে নিনিক রাহায়ু বলেছেন, এই পদক্ষেপ একেবারেই বৈষম্যমূলক। এটি ইন্দোনেশিয়ার সংবিধান-বিরোধী বলেও মনে করেন তিনি। তাঁর মতে, মহিলাদের সুরক্ষা দিতে প্রশাসন অপরাগ। আর সেই গাফিলতির বেআব্রু ছবিটাই আসলে এই নির্দেশিকায় আরও স্পষ্ট হয়ে উঠল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন