(বাঁ দিকে) আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যদি যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজ়া ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণে নিতে এবং সেখানকার বাসিন্দা প্যালেস্টাইনিদের অন্যত্র স্থানান্তরিত করার চেষ্টা করেন, তবে তা মানা হবে না বলে জানিয়ে দিল হামাস। সম্প্রতি কয়েকটি মার্কিন সংবাদমাধ্যমে এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। হামাসের তরফে বিষয়টি নিয়ে ট্রাম্পের নিন্দা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে দেওয়া হয়েছে প্রতিরোধের বার্তা।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট রবিবার ৩৮ পৃষ্ঠার একটি কূটনৈতিক প্রস্তাবনার উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছিল, হোয়াইট হাউস এমন একটি পরিকল্পনা বিবেচনা করছে, যার মাধ্যমে প্রায় ২০ লক্ষ প্যালেস্টাইনিকে গাজা অন্তত ১০ বছরের জন্য আমেরিকার নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় স্থানান্তরিত করা যাবে। তার পরেই ওই প্রতিক্রিয়া এসেছে হামাসের তরফে। ইতিমধ্যেই অভিযোগ উঠেছে, পর্যটনকেন্দ্র ও ‘হাই-টেক হাব’ হিসাবে রূপান্তরিত করার উদ্দেশ্যেই ভূমধ্যসাগরের তীরবর্তী গাজ়াকে প্যালেস্টাইনি শূন্য করতে চায় ওয়াশিংটন ও তেল আভিভ।
ঘটনাচক্রে, নিউ ইয়র্ক টাইম্সে দু’সপ্তাহ আগে প্রকাশিত একটি খবরে দাবি করা হয়েছিল, গাজ়ার বাসিন্দা প্রায় ২০ লক্ষ প্যালেস্টাইনিকে পাকাপাকি ভাবে আফ্রিকার দেশ দক্ষিণ সুদানে স্থানান্তরিত করতে সক্রিয় হয়েছে ইজ়রায়েল সরকার। যদিও বলপ্রয়োগ করে প্যালেস্টাইনিদের উৎখাতের অভিযোগ এড়াতে এই পরিকল্পনাকে ‘স্বেচ্ছায় অভিবাসন’ বলে চিহ্নিত করেছে তেল আভিভ। প্রসঙ্গত, গত ফেব্রুয়ারিতে গাজ়া দখলের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। জানিয়েছিলেন, সেখানকার প্যালেস্টাইনদের স্থায়ী ভাবে প্রতিবেশী দেশগুলিতে পুনর্বাসন দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। এ বার সেই ঘোষণাই নেতানিয়াহু সরকার কার্যকর করতে উদ্যোগী হয়েছে বলে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল। এর পরে গত শুক্রবার ইজরায়েলি অর্থমন্ত্রী বেজ়ালেল স্মোট্রিচ জানিয়েছিলেন, হামাস নিঃশর্তে অস্ত্রসমর্পণ না করলে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে গোটা গাজ়ার দখল নেবে ইজ়রায়েলি সেনা।
প্রসঙ্গত, গত ৮ অগস্ট ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু তাঁর মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা সংক্রান্ত কমিটির বৈঠকে পুরো গাজ়া দখলের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। বিনা প্রতিবাদে তা গৃহীত হয়েছিল। এর পরে গত ২৭ জুলাই গাজ়া সিটির উত্তরাংশের এবাদ-আলরহমান এলাকার দখল নেয় ইজ়রায়েলি সেনা। এবাদ-আলরহমান থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরে গাজা নগরীর জালা স্ট্রিট অবস্থিত। ওই এলাকায় লক্ষাধিক মানুষের বাস ছিল। কিন্তু ইজ়রায়েল সেনার গুলি এবং মর্টার বর্ষণের জেরে দলে দলে প্যালেস্টাইনি দক্ষিণ গাজ়ার দিকে চলে যেতে শুরু করেছেন। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইজ়রায়েলে হামলা চালিয়েছিল প্যালেস্টাইনি সশস্ত্র সংগঠন হামাসের আল কাশাম ব্রিগেড। তার পর থেকেই ধারাবাহিক ভাবে গাজ়ায় হামলা চালাচ্ছে ইজ়রায়েলি সেনা। এখনও পর্যন্ত তেল আভিভের অভিযানের বলি ৫৫ হাজারেরও বেশি প্যালেস্টাইনি সাধারণ নাগরিক।