প্যালেস্তাইনি এলাকা বাদ কেন মার্কিন সাইটে

গত শুক্রবার রাতে বস্টনের লোগান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমেছিল ইসমাইল আজ্জাওয়াই। তার পরে তাকে আট ঘণ্টা আটক করে রাখা হয়।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৯ ০৫:২৪
Share:

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়।—ছবি এপি।

সম্প্রতি মার্কিন বিদেশ দফতরের ওয়েবসাইটে দেশ ও বিভিন্ন এলাকার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে প্যালেস্তাইনি অঞ্চলকে— সে দেশের নেতাদের অভিযোগ এমনটাই। তা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছেন তাঁরা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ইজ়রায়েল-প্রীতি তাঁদের উদ্বেগের কারণ বলে জানিয়েছেন ওই নেতারা। যে দিন এই অভিযোগ উঠেছে, সে দিনই আবার ১৭ বছরের এক প্যালেস্তাইনি পড়ুয়ার মার্কিন ভিসা বাতিলের অভিযোগ উঠল। বস্টনের লোগান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পা দেওয়া মাত্রই ইসমাইল আজ্জাওয়াই নামে ওই ছেলেটিকে আটক করা হয়। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসেছিল। বিমানবন্দর থেকে লেবাননের বাড়িতে ফিরতে হয় তাকে।

Advertisement

বিদেশ দফতরের ওয়েবসাইটে ২০০৯-২০১৭ সাল পর্যন্ত (মূলত প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার শাসনকাল) ‘প্যালেস্তাইনি অঞ্চল’ তালিকায় ছিল। এখন আর তা নেই। মঙ্গলবার এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে বিদেশ দফতরের এক প্রতিনিধি বিষয়টিতে গুরুত্ব না দিয়ে বলেন, ‘‘ওয়েবসাইটটি আপডেট হচ্ছে। নীতিতে পরিবর্তন ঘটেনি।’’ ওয়েবসাইটের নকশা বদলের পরে আবার প্যালেস্তাইনি অঞ্চল তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবে কি না, তা নিয়ে কিছু বলেননি ওই প্রতিনিধি। কিন্তু এত সহজে মেনে নিতে পারছেন না প্যালেস্তাইনের নেতারা। এর আগেও কিছু মার্কিন তথ্যপঞ্জিতে ‘অধিকৃত এলাকা’ শব্দবন্ধ সরিয়ে নেওয়া হয়। ইজ়রায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু পশ্চিম ভূখণ্ডের অনেকটাই দখলে নেওয়ার কথা বলেন। এ সবের আন্তঃসম্পর্ক রয়েছে বলেই মনে করছেন প্যালেস্তাইনি নেতারা। ওবামার আমলে ইজ়রায়েলে যিনি মার্কিন দূত ছিলেন, সেই ড্যান শাপিরো মার্কিন ওয়েবসাইটের এই পরিবর্তন দেখে বিস্মিত। তাঁর টুইট, ‘‘প্যালেস্তাইনিরা কোথাও যাবেন না। আমেরিকাকে তাঁদের কথা ভাবতে হবে।’’ যদিও ট্রাম্প ‘নিলর্জ্জের’ মতো ইজ়রায়েল ও তার দক্ষিণপন্থী নেতাকে সমর্থন করায় সমালোচনা থামছে না।

তাই তাঁর প্রশাসনের লোকজন প্যালেস্তাইন থেকে আসা পড়ুয়াকেও আমেরিকায় ঢুকতে দিতে আপত্তি জানাচ্ছে। গত শুক্রবার রাতে বস্টনের লোগান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমেছিল ইসমাইল আজ্জাওয়াই। তার পরে তাকে আট ঘণ্টা আটক করে রাখা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং তার ফোন ও কম্পিউটার ঘেঁটে তার ভিসা বাতিল করে দেওয়া হয়। মার্কিন অভিবাসন দফতরের তরফে ইসমাইলকে জানানো হয়, ফেসবুক পোস্টে আমেরিকা-বিরোধী মতামত সমর্থন করার জন্য তার ভিসা বাতিল করে দেওয়া হচ্ছে। যদিও ওই পড়ুয়ার দাবি, সে নিজে আমেরিকা-বিরোধী কোনও পোস্ট করেছে, এমনটা খুঁজে পাননি অভিবাসন দফতরের অফিসার।

Advertisement

ইসমাইল বলেছে, ‘‘পাঁচ ঘণ্টা পরে অফিসার ঘরে ডেকে চিৎকার করে বলেন, আমার ফ্রেন্ড লিস্টে থাকা লোকজন আমেরিকা-বিরোধী কথাবার্তা পোস্ট করেছে। তার সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই। আমি সে সব লাইকও করিনি। অন্যের পোস্টের জন্য আমায় দায়ী করা হবে কেন!’’ তার কথা অবশ্য শোনা হয়নি। পত্রপাঠ ফিরে যেতে বলা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন