আপনার ফ্ল্যাটের জানলা দিয়ে কী সুন্দর সমুদ্র দেখা যায়, তাই না। কিন্তু কী আশ্চর্য সকালে ঘুম থেকে উঠে আর সমুদ্রের চিহ্ন দেখতে পেলেন না। জানলার বাইরে তখন সবুজের সমারোহ। ধরুন, আরও ঘণ্টা দু’য়েক গেল। এ বার সমুদ্র আর সবুজের সমারোহ ছাড়িয়ে আপনি ঢুকে পড়েছেন কোনও এক যান্ত্রিক শহরে।
অবাক লাগছে? ভাবছেন এত দ্রুত প্রকৃতি বদলে যাচ্ছে কী ভাবে? প্রকৃতি বদলাচ্ছে না। আসলে বদলে যাচ্ছে আপনার অবস্থান। আপনি যে ফ্ল্যাটে রয়েছেন, আদপে অবস্থান বদল করছে সেই ফ্ল্যাটটিই।
ঘুরন্ত স্কাইস্ক্র্যাপার। খুব তাড়াতাড়ি এমনই একটি আবাসন উপহার দিতে চলেছে দুবাই। এটাই হবে পৃথিবীর প্রথম ঘুরন্ত স্কাইস্ক্র্যাপার। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে ২০২০ সালেই এটি চালু হয়ে যাবে। বুর্জ খলিফা (৮২৮ মিটার) এবং মারিনা (৪৩২ মিটার)-র পর এটাই বিশ্বের তৃতীয় উচ্চতম বিল্ডিং হতে চলেছে বলে দাবি নির্মাতাদের। এর উচ্চতা হবে ৪২০ মিটার।
ডায়নামিক গ্রুপ নামে দুবাইয়ের একটি আর্কিটেকচারাল ফার্ম এই অত্যাধুনিক স্কাইস্ক্র্যাপারটি তৈরি করছে। ৮০ তলার এই স্কাইস্ক্র্যাপারের প্রত্যেকটি তলাই স্বতন্ত্রভাবে ঘুরতে সক্ষম। এবং প্রতি নিয়ত তা ঘুরে চলবে।
ফ্লোরগুলো কত গতিতে ঘুরবে এবং কোন অভিমুখে ঘুরবে, তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন বাসিন্দারাই। যার ফলে সব সময়ই নিজের আকৃতির পরিবর্তন করবে এই স্কাইস্ক্র্যাপার।
ঘুরন্ত স্কাইস্ক্র্যাপার বানাতে কী ভাবে প্রযুক্তির ব্যবহার করা হয়েছে? ডায়নামিক গ্রুপ নামে ওই আর্কিটেকচারাল ফার্ম জানিয়েছে, এর জন্য প্রথমে একটি কলাম বানানো হয়। নির্দিষ্ট অবকাশে ৮০ তলার ফ্ল্যাটের জন্য কলামকে ৮০টি ভাগে ভাগ করা হয়। ফ্লোরগুলির নড়াচড়ার জন্য ওই ভাগগুলিতে চ্যানেল বানানো হয়।
আলাদা আলাদা করে প্রতিটা অ্যাপার্টমেন্ট বানানো হবে কারখানায়। পরে প্রতিটা অ্যাপার্টমেন্টকে তুলে এনে চ্যানেলের সঙ্গে যুক্ত করা হবে। এর ফলে প্রতিটা ফ্লোরই স্বতন্ত্রভাবে ঘুরতে সক্ষম হয়ে উঠবে, জানিয়েছে ওই সংস্থা।
এ ছাড়াও এই স্কাইস্ক্র্যাপারের আরও একটি বৈশিষ্ট্য হল এই বিল্ডিংয়ের পুরোটাই সোলার এনার্জি এবং বায়ুশক্তির মাধ্যমে চলবে। এর জন্য প্রতিটা ফ্লোরের মধ্যে ৭৯টি টারবাইন লাগানো হবে। প্রতিটা ফ্লোরের ছাদে বসবে সোলার প্যানেলও।