সিয়াটল-ট্যাকোমা বিমানবন্দর। ফাইল চিত্র।
খালি যাত্রিবিমানটিকে রানওয়ের উপর দিয়ে গড়িয়ে যেতে দেখে অনেকেই ভেবেছিলেন ওড়ার আগে নিয়মমাফিক প্রস্তুতি। ভুল ভাঙল মুহূর্তেই। যাত্রীদের না নিয়েই রানওয়ে ছেড়ে সটান আকাশে উড়ান দিল আলাস্কা এয়ারলাইন্সের ৭৬ আসনের বিমানটি। তত ক্ষণে গোলমাল টের পেয়েছেন কন্ট্রোল রুমের কর্মীরা। তড়িঘড়ি চালকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। বোঝেন ছিনতাই হয়েছে বিমানটি। জানা যায়, ছিনতাইকারী বিমানবন্দরেরই এক কর্মী।
আমেরিকার ওয়াশিংটন প্রদেশের সিয়াটল-ট্যাকোমা বিমানবন্দরে তখন আতঙ্ক। শুক্রবার স্থানীয় সময় রাত আটটা। যদিও সে দেশে তখনও অন্ধকার নামেনি। একই সময়ে গোধূলির আলোটুকু ছুঁয়ে পুজেট হ্রদের ধারে সূর্যাস্ত উপভোগ করছিলেন কিছু পর্যটক। সিয়াটল-ট্যাকোমা বিমানবন্দর থেকে প্রায় ৪৫ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে পুজেট হ্রদ। আচমকা একটি বিমানকে অনেকটা নিচু দিয়ে উড়ে যেতে দেখে অনেকেই মহড়া বলে ভুল করেন। ভুল হবে না-ই বা কেন? পিছনে দু’টি সামরিক বিমানও যে ছিল। কয়েক মিনিটের মধ্যেই বিন্দুর মতো মিলিয়ে গেল তারা। আবার ফিরে এল বিমানটি। এ বার হ্রদের জলের খুব কাছাকাছি। তবে জল না ছুঁয়ে নিখুঁত ভাবে একটা বৃত্ত সম্পূর্ণ করে উড়ে গেল কেট্রন দ্বীপের দিকে। কয়েক সেকেন্ড। তার পরেই বিকট শব্দ করে ভেঙে পড়ল। আকাশে তখন পাক খেয়ে উঠছে ধোঁয়ার কুণ্ডলী।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানান, বছর ২৯-এর ছিনতাইকারী তাঁদেরই কর্মী। স্থানীয় বাসিন্দা। ঘটনায় তারও মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। যাত্রিবিমান ছিনতাই হয়েছে টের পেয়েই দুটি সামরিক বিমান সেটির পিছু নেয়। ভেঙে পড়ার আগে কন্ট্রোল রুমের কর্মীদের সঙ্গে ওই যুবকের কথাবার্তার একটি অডিয়ো রেকর্ড প্রকাশ্যে এসেছে। যেখানে তাকে রিচ বলে সম্বোধন করা হচ্ছিল। তবে ঘটনাটি সন্ত্রাসের নয় বলেই মনে করছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তের পর তারা জানায়, ওই যুবক মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত ছিল। কন্ট্রোল রুমের কর্মীদের কাছে সে কথা স্বীকারও করে সে। বিমানের জ্বালানি ফুরিয়ে আসছে বলে এক সময় আশঙ্কাও প্রকাশ করে। কর্মীদের বলে, ‘‘আমি কারও ক্ষতি চাই না। অনেকে আমায় ভালবাসেন। আমি এমন ঘটিয়েছি জানলে তাঁরা হতাশ হবেন। আমায় পাগল ভাববেন। আমি সত্যিই ভেঙে পড়েছি।’’