পরমাণু অস্ত্র ট্রাম্পের জন্য নয়: হিলারি ক্লিন্টন

তাঁর হয়ে গত পরশুই গলা ফাটিয়েছেন স্বয়ং প্রেসিডেন্ট। হিলারি রডহ্যাম ক্লিন্টনকে কেন দেশের মানুষ পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে বেছে নেবেন, দীর্ঘ বক্তৃতায় তা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন বারাক ওবামা। ঠিক এক দিনের মাথায় মুখ খুললেন প্রাক্তন ফার্স্ট লেডি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ফিলাডেলফিয়া শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৬ ০২:৫৬
Share:

তাঁর হয়ে গত পরশুই গলা ফাটিয়েছেন স্বয়ং প্রেসিডেন্ট। হিলারি রডহ্যাম ক্লিন্টনকে কেন দেশের মানুষ পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে বেছে নেবেন, দীর্ঘ বক্তৃতায় তা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন বারাক ওবামা। ঠিক এক দিনের মাথায় মুখ খুললেন প্রাক্তন ফার্স্ট লেডি। এ বার হিলারি ক্লিন্টনও বোঝালেন, রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট দিলে সারা বিশ্বের জন্য সেটা কতটা মারাত্মক হতে পারে। জানালেন, পরমাণু অস্ত্র ভাণ্ডার ট্রাম্পের হাতে গেলে সেটা নিয়ে ক্ষতিকর কিছু করে বসতে পারেন এই ধনকুবের।

Advertisement

গত মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিক ভাবে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হয়েছেন প্রাক্তন মার্কিন বিদেশসচিব হিলারি। কাল রাতে ফিলাডেলফিয়ার ওয়েলস ফার্গো সেন্টারে আনুষ্ঠানিক ভাবে সেই মনোনয়ন গ্রহণ করলেন হিলারি। ভিড়ে ঠাসা ওই ফার্গো সেন্টারে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নাম না করে বিঁধে বললেন, ‘‘কিছু অশুভ শক্তি আমাদের পৃথিবী থেকে আলাদা করতে চায়। আমেরিকাকেও দ্বিখণ্ডিত করতে চায়। পুরো আত্মবিশ্বাস আর ভদ্রতার সঙ্গেই বলছি, আমেরিকার পরবর্তী প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে সেই চ্যালেঞ্জটা নিতে আমিও প্রস্তুত।’’

কালকের বক্তৃতায় দেশের অর্থনীতি থেকে পরমাণু নীতি—সাবলীল ভঙ্গিতে সব কিছুকেই ছুঁয়ে গিয়েছেন হিলারি। আর প্রতি পদে ঠুকেছেন ট্রাম্পকে। দর্শকদের প্রশ্ন করেছেন, ‘‘কম্যান্ডার-ইন চিফ-এর ভূমিকায় ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভাবতে পারছেন?’’ আগের বহু বিতর্ক সভায় সংযম হারাতে দেখা গিয়েছে ট্রাম্পকে। কাল সেই প্রসঙ্গে হিলারির প্রশ্ন, ‘‘বিতর্ক সভায় এক জন প্রতিবাদীকে দেখে যে এতটা রাগতে পারে, আসল সঙ্কটের সময় ওভাল অফিসে তার ছবিটা ভাবুন। যে টুইটারে টোপ ফেলতে পারে, তারই হাতে পরমাণু অস্ত্র

Advertisement

তুলে তাকে বিশ্বাস করা যায় কি?’’

ট্রাম্পের মুসলিম-বিরোধী নীতি নিয়েও কাল আগ্রাসী ছিলেন হিলারি। বলেছেন, ‘‘কোনও ধর্মকেই আমরা নিষিদ্ধ করতে চাই না। বরং আমেরিকার সব নাগরিককে নিয়ে লড়তে চাই। সন্ত্রাসবাদকে কাবু করতে চাই।’’ হিলারির সুরে সুর মিলিয়েছেন খিজর খান। পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত এই মার্কিন নাগরিক ইরাক যুদ্ধে নিজের ছেলেকে হারিয়েছেন। তাঁর ছেলে হুমায়ুন মার্কিন সেনায় ছিলেন। ২০০৪ সালে ইরাকে মারা যান হুমায়ুন। হিলারির সমর্থনে দাঁড়িয়ে খিজর ট্রাম্পকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন। বলেছেন, ‘‘ট্রাম্প, সারা জীবনে আপনি কোনও ত্যাগই করেননি। এই নির্বাচনটাকে হাল্কা ভাবে নেবেন না। এটা ঐতিহাসিক। আমার অনুরোধ, আমার সন্তানের ত্যাগকে আপনি সম্মান করুন।’’ এই অনুষ্ঠানের কনিষ্ঠতম সদস্যা ছিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত আঠারো বছরের শ্রুতি পালানিয়াপ্পান। বললেন, ‘‘এই ঐতিহাসিক নির্বাচনে অংশ নিতে পেরে আমি উচ্ছ্বসিত।’’

সপ্তাহ খানেক আগে মিশেল ওবামার বক্তৃতা টোকার অভিযোগ উঠেছিল ট্রাম্প-পত্নী মেলানিয়ার বিরুদ্ধে। এর পাল্টা ট্রাম্প-পুত্র আজ বারাক ওবামাকে বিঁধেছেন টুইটারে। তাঁর বক্তব্য, পরশু হিলারির সমর্থনে দেওয়া ওবামার বক্তৃতার কিছু অংশ তাঁর বক্তৃতা থেকে টোকা। এটা ঘটনা, ‘এই আমেরিকা আমার চেনা নয়,’ — বাক্যটি ওবামার মতো জুনিয়র ট্রাম্পও বলেছিলেন। আমেরিকার বহু প্রেসিডেন্টও কথাটা ব্যবহার করেছেন আগে। জুনিয়র ট্রাম্প এটিকে কী করে নিজের বলে দাবি করছেন, তাতেই বিস্মিত অনেকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন