United Nations

আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী কারা? এই তালিকায় মাসুদের অন্তর্ভুক্তিতে কী লাভ হল ভারতের?

যে নিয়মের ফাঁসে শেষ পর্যন্ত মাসুদকে সন্ত্রাসীর তালিকায় ঢোকান সম্ভব হল, তা হল রাষ্ট্রপুঞ্জের ১২৬৭ প্রস্তাব।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ মে ২০১৯ ১৪:১৭
Share:
০১ ১৫

বিশ্ব জুড়ে সন্ত্রাসের দাপট কমাতে এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই বিভিন্ন জঙ্গিগোষ্ঠীকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করে রাষ্ট্রপুঞ্জ। বিভিন্ন সংগঠনের পাশাপাশি কুখ্যাত জঙ্গিদের জন্যও আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী তালিকা আছে রাষ্ট্রপুঞ্জের। সেই তালিকাতেই এবার ঢুকে গেল মাসুদ আজহারের নাম।

০২ ১৫

কিন্তু কবে থেকে এই তালিকা বানাচ্ছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। এই প্রশ্নের উত্তরে লুকিয়ে আছে তালিবান আর আল কায়দা, এই দু’টি সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের নাম। ইসলামিক ধর্মযুদ্ধের নামে তারা সারা পৃথিবীতে সন্ত্রাসের শিকড় ছড়িয়ে দিচ্ছে , তা বোঝার পরই তৎপর হয় আন্তর্জাতিক দুনিয়া ।

Advertisement
০৩ ১৫

যে নিয়মের ফাঁসে শেষ পর্যন্ত মাসুদকে সন্ত্রাসীর তালিকায় ঢোকান সম্ভব হল, তা হল রাষ্ট্রপুঞ্জের ১২৬৭ প্রস্তাব। পৃথিবীতে আল কায়দা এবং তালিবানের বিষাক্ত সন্ত্রাস থেকে মুক্ত করতেই ১৯৯৯ সালের ১৫ অক্টোবর এই প্রস্তাব আনা হয় রাষ্ট্রপুঞ্জে, যা ছিল রাষ্ট্রপুঞ্জের নিয়মাবলীর ১২৬৭ নম্বর প্রস্তাব।

০৪ ১৫

শুরুতে অল কায়দা এবং তালিবানের ডানা ছাঁটাই ছিল এই কমিটির কাজ, যে কারণে এই কমিটির নাম দেওয়া হয়েছিল ‘আল কায়দা এবং তালিবান নিষেধাজ্ঞা কমিটি’। যদিও ২০১১ সালের ১৭ জুন তালিবানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য একটি আলাদা কমিটি তৈরি করে রাষ্ট্রপুঞ্জ।

০৫ ১৫

এই কমিটির নিষেধাজ্ঞার ফলেই তালিবান জমানায় আফগানিস্তানে সমস্ত সাহায্য পাঠানো বন্ধ করেছিল আন্তর্জাতিক দুনিয়া। যে কারণে অশেষ দুঃখকষ্টের মধ্যে দিয়ে গিয়েছিলেন সাধারণ আফগান নাগরিকেরা। এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে তখন সরব হয়েছিল বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন।

০৬ ১৫

এই আইনেরমাধ্যমেই পৃথিবী জুড়ে বিভিন্ন জঙ্গিদের আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী ঘোষণা করে রাষ্ট্রপুঞ্জ। এই তালিকায় কারও নাম উঠলে সেই সন্ত্রাসবাদীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাধ্য রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রতিটি সদস্য দেশ। তাই মাসুদ আজহারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা এখন নিতেই হবে পাকিস্তানকে।

০৭ ১৫

২০০৯ সাল থেকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদীর তালিকায় মাসুদ আজহারের অন্তর্ভুক্তির পক্ষে সওয়াল করে আসছে ভারত। কিন্তু ২০১৬ এবং ২০১৭ সালে নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য এবং পাকিস্তানের অন্যতম বন্ধু দেশ চিনের আপত্তিতে নাকচ হয়ে যায় সেই প্রস্তাব।

০৮ ১৫

রাষ্ট্রপুঞ্জের নিয়ম মাফিক, মাসুদ আজহারের সমস্ত স্থাবর এবং অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে হবে পাকিস্তানকে। এ ছাড়া যে সব সম্পত্তির কারণে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে তার কর্মকাণ্ডে সুবিধা হয়, তাও বাজেয়াপ্ত করতে হবে পাকিস্তানকে।

০৯ ১৫

পৃথিবীর কোনও দেশ মাসুদকে ঢুকতে বা বেরতে দেবে না। যে দেশে মাসুদ থাকবে, সেখানেও তার গতিবিধির উপর আগাগোড়া নজর রাখতে হবে পাকিস্তানকে। অর্থাৎ, কার্যত গৃহবন্দি হয়েই কাটাতে হবে মাসুদকে। সন্ত্রাসের নকশা তৈরিতে তার কার্যকারিতা কমবে অনেকটাই।

১০ ১৫

কোনও রকম অস্ত্র কেনাবেচায় অংশ নিতে পারবে না মাসুদ আজহার। কোনও ব্যক্তি, রাষ্ট্র বা কোম্পানি তাকে অস্ত্র দিলে বা তার থেকে অস্ত্র নিলে রাষ্ট্রপুঞ্জের কঠোর শাস্তির মুখে পড়বে। অর্থাৎ, সশস্ত্র জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদকে অস্ত্র দিয়ে কোনও সাহায্য করতে পারবে না পাকিস্তান বা কোনও কোম্পানি।

১১ ১৫

পাকিস্তানের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ বা মাদ্রাসা থেকে নিজেদের দলের সদস্য জোগাড় করে মাসুদ ও তার দলবল। গতিবিধিতে কড়া নজর রাখায় সেই কর্মকাণ্ডে প্রভাব পড়তে বাধ্য। কারণ, কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, সেই রিপোর্ট প্রতি বছর জমা দিতে হবে রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছে।

১২ ১৫

শুধু পাকিস্তান নয়, মাসুদ আজহার নিয়ে একই নিয়ম মানতে বাধ্য রাষ্ট্রপুঞ্জের সমস্ত সদস্য দেশ। তাই নিজে না করলেও অন্য দেশের হাত দিয়েও মাসুদকে কোনও রকম সাহায্য করতে পারবে না পাক সেনা বা পাক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই।

১৩ ১৫

পররাষ্ট্র বিশেষজ্ঞদের মতে, রাষ্ট্রপুঞ্জের এই সিদ্ধান্ত নিশ্চিত ভাবেই ভারতের বিরাট কূটনৈতিক সাফল্য। চিনের সঙ্গে আলোচনার পরিবেশ তৈরি এবং চিন-পাকিস্তান সম্পর্ককে প্রভাবিত করার মতো জায়গায় চলে গেল নয়াদিল্লি, যা ভারতের কূটনৈতিক রেকর্ডে বেনজির।

১৪ ১৫

কেউ কেউ বলছেন, চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর প্রকল্পে যাতে নিজেদের আপত্তি তুলে নেয় ভারত, সেই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বেজিং-এর তরফে। সে ক্ষেত্রেও কূটনৈতিক সাফল্য ভারতেরই। কারণ, নিজেদের প্রকল্পের সাফল্যের জন্য ভারতের উপর নির্ভর করছে চিন, এই ঘটনার নজিরও খুব বেশি নেই।

১৫ ১৫

চিনের এই সিদ্ধান্ত স্বাভাবিক ভাবেই ভাল চোখে দেখবে না পাকিস্তান,যা প্রভাব ফেলবে চিন-পাকিস্তান কূটনৈতিক সম্পর্কে। এমনিতেই চিনের ঋণের জালে জড়িয়ে পড়ছে ইসলামাবাদ, এই অভিযোগ উঠছে পাকিস্তানের অন্দরেই। কালকের পর সেই দেশে চিনবিরোধী আওয়াজ আরও জোরাল হতে পারে, যাতে লাভ ভারতেরই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
Advertisement
আরও গ্যালারি
Advertisement