শিখ তীর্থযাত্রীদের জন্য কর্তারপুর সাহিবের দরজা খুলে যেতে পারে শুনে আনন্দ হয়েছিল। পাকিস্তানি সেনাপ্রধান কমর জাভেদ বাজওয়াকে আলিঙ্গন সেই আনন্দেরই বহিঃপ্রকাশ বলে দাবি করলেন নভজ্যোৎ সিংহ সিধু। সেই সঙ্গে বিজেপিকে মনে করিয়ে দিলেন, প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শান্তি উদ্যোগের কথা। সিধুকে সমর্থন করে নয়া পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান জানালেন, সিধু ‘শান্তির দূত’ হয়ে এসেছিলেন।
ইমরানের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে পাক সেনাপ্রধানকে আলিঙ্গন করে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছেন সিধু। বিজেপি, অকালি দল, শিবসেনা এমনকি কংগ্রেসের নেতারাও তাঁকে নিশানা করেছেন। আজ সমালোচনার জবাব দিতে চণ্ডীগড়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন সিধু। তিনি বলেন, ‘‘আমি রাজনৈতিক কারণে পাকিস্তানে যাইনি। এক বন্ধুর ডাকে গিয়েছিলাম। এমন এক বন্ধু যিনি কঠোর পরিশ্রমের পরে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে নির্বাচিত হয়েছেন।’’
সিধু জানিয়েছেন, ক্রিকেটজীবনের বন্ধু ইমরানের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে সামনের সারিতে বসেছিলেন তিনি। পাক সেনাপ্রধান তাঁকে দেখতে পেয়ে উচ্ছ্বসিত হয়ে এগিয়ে আসেন। জানান, গুরু নানকের ৫৫০তম জন্মবার্ষিকীতে ভারতের ডেরা বাবা নানক থেকে পাকিস্তানের কর্তারপুর সাহিব পর্যন্ত একটি করিডর খোলার চেষ্টা করছে পাক সরকার। দু’টি তীর্থস্থানের মধ্যে দূরত্ব মাত্র তিন কিলোমিটার। সিধুর কথায়, ‘‘কর্তারপুর সাহিবে যেতে আগ্রহী ভারতের কোটি কোটি শিখ তীর্থযাত্রী। পাক সেনাপ্রধানের কথা শুনে আমার আনন্দ হয়েছিল। আলিঙ্গন তারই বহিঃপ্রকাশ।’’ সিধু স্পষ্ট জানান, শপথগ্রহণের পরে তাঁর সঙ্গে পাক সেনাপ্রধানের আর কোনও বৈঠক হয়নি। সিধুর কথায়, ‘‘অটলজি পাকিস্তান গিয়েছিলেন। তার পরে কার্গিল যুদ্ধ হয়। ২০১৫ সালে আচমকা পাকিস্তানে চলে যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে আলিঙ্গনও করেছিলেন। কেউ তো প্রধানমন্ত্রীর দেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন না? এই দ্বিচারিতা কেন?’’
সিধুর সাংবাদিক বৈঠকের কয়েক ঘণ্টা পরেই তাঁর পাশে দাঁড়ান ইমরান। ইমরানের কথায়, ‘‘সিধু শান্তির দূত হয়ে পাকিস্তানে এসেছিলেন। ভারতে যাঁরা তাঁর সমালোচনা করেছেন তাঁরা শান্তি ফেরানোর চেষ্টাকেই আঘাত করেছেন।’’ তাঁর মতে, আলোচনা করে কাশ্মীর-সহ সমস্যা না মেটালে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধি সম্ভব নয়।