দেশের ‘দ্বিতীয় ক্ষমতাশালী’ ব্যক্তি বলা হতো তাঁকে। কিম জং-উনের ঠিক পরেই ছিল তাঁর স্থান। সেই হোয়াং পিয়ং সো-কেই দেখা যাচ্ছে না প্রায় দু’মাস ধরে।
উত্তর কোরিয়ার শাসক কোনও সরকারি অনুষ্ঠানে গেলে তাঁর পাশে সব সময় দেখা যেত হোয়াংকে। দেশের রাজনৈতিক ছবি থেকে তাঁর আচমকা উধাও যাওয়া নিয়ে গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই চলছিল জল্পনা। এ বার দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদমাধ্যম জানাল, খুব সম্ভবত কিমের নির্দেশেই মেরে ফেলা হয়েছে হোয়াংকে।
খোঁজ মিলছে না হোয়াংয়ের সহকারী ওং-হংয়েরও। দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, তাদের দেশের গুপ্তচর বাহিনীর খবর অনুযায়ী, দল বিরোধী কাজের জন্য মেরে ফেলা হয়েছে হোয়াংকে। ১৩ অক্টোবর শেষ প্রকাশ্যে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। বয়স ষাটের কোঠায়। উত্তর কোরিয়ার ওয়াকার্স পার্টির সেন্ট্রাল কমিটির সদস্য ছিলেন হোয়াং। অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ লোক ছাড়া এই কমিটিতে কাউকে স্থান দিতেন না কিম। তাঁর পরে পরে দেশের সর্বোচ্চ সামরিক ক্ষমতাও ছিল হোয়াংয়ের হাতে। তিনিই ছিলেন উত্তর কোরিয়ার সেনা বাহিনীর ভাইস মার্শাল। এ হেন ‘ক্ষমতাবান’ হোয়াংয়ের বিরুদ্ধে সম্প্রতি ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। দলের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শনেও নাকি খামতি ছিল তাঁর। দক্ষিণ কোরিয়ার দৈনিকের খবর অনুযায়ী, দলের সঙ্গে প্রতারণাও নাকি করছিলেন হোয়াং।
দেশের একচ্ছত্র শাসক নেতা কিমের কানে সে খবর পৌঁছতে দেরি লাগেনি বিশেষ। আর খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নাকি হোয়াংকে সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন তিনি। হোয়াংয়ের সহকারী ওং হংকে সম্ভবত পাঠানো হয়েছে জেলে। সেখানে তাঁর উপরও নাকি চলছে অকথ্য নির্যাতন।
এর আগেও একাধিক বার এ ধরনের কাজ করতে দেখা গিয়েছে কিমকে। ২০১৪ সাল থেকে ’১৬ সালের মধ্যে অন্তত সাত জন ঘনিষ্ঠকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কিম। নিজের পিসেমশাইকে হিংস্র কুকুরের সামনে ফেলে দিতে পিছপা হননি তিনি। দেশের কোনও মন্ত্রী তাঁর বক্তৃতা চলাকালীন ঘুমিয়ে পড়লেও ফায়ারিং স্কোয়াডের সামনে পড়তে হয়েছে তাঁকে। খুব সম্প্রতি মালয়েশিয়ার বিমানবন্দরে রহস্যজনক ভাবে মারা যান কিমের সৎ ভাই কিম জং-নাম।