ইরানের পরমাণু কেন্দ্র লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে ইজ়রায়েল। ছবি: সংগৃহীত।
ইরানের পরমাণু কেন্দ্র লক্ষ্য করে গত শুক্রবার সকালে হামলা চালিয়েছিল ইজ়রায়েল। তার পর থেকে ইরানের কোনও পরমাণুকেন্দ্রে ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেনি। রাষ্ট্রপুঞ্জ নিয়ন্ত্রিত আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ)-এর প্রধান রাফায়েল গ্রসি এমনটাই জানালেন। খবরটি প্রকাশিত হয়েছে ‘দ্য টাইমস অফ ইজ়রায়েল’-এ।
এর আগে গ্রসির সংস্থা রিপোর্ট দিয়ে জানিয়েছিল, ইরানের নানতানজ় পরমাণু কমপ্লেক্সে পাইলট প্ল্যান্ট ইজ়রায়েলের হামলায় ধ্বংস হয়েছে। সূত্রের খবর, সেটি মাটির উপরে রয়েছে। ইরানের যে তিনটি পরমাণু কেন্দ্র রয়েছেন, তার মধ্যে নানতানজ়েরটি ক্ষুদ্রতম। নানতানজ়ে মাটির নীচে যে পরমাণু কেন্দ্র রয়েছে, সেটি লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়নি বলেই জানানো হয়েছে রিপোর্টে। তবে এই কেন্দ্রের বিদ্যুৎ সংযোগ নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। এর ফলে কিছু প্রযুক্তিগত (ইউরেনিয়াম এনরিচিং সেন্ট্রিফিগার) সমস্যা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এই ইউরেনিয়াম এনরিচিং সেন্ট্রিফিগারস পরমাণু বিদ্যুৎ এবং অস্ত্র, দুই উৎপাদনের ক্ষেত্রেই জরুরি।
ইরানে পাহাড় খনন করে তৈরি করা হয় ফোরদো পরমাণুকেন্দ্র। সেটির কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলেই জানিয়েছে আইএইএর রিপোর্ট। বিবৃতি দিয়ে গ্রসি বলেন, ‘‘শুক্রবারের হামলার পর থেকে নানতানজ় ফুয়েল এনরিচমেন্ট প্ল্যান্টে কোনও অতিরিক্ত ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবে ওই প্রকল্পের যে অংশ মাটির উপরে ছিল, তা ধ্বংস হয়েছে।’’ ইরানের ইশফাহান পরমাণু কেন্দ্রের যে চারটি ভবনে শুক্রবার হানা চলেছে, তারও বিশদ বর্ণনা দিয়েছেন গ্রসি। তাঁর কথায়, ‘‘সেন্ট্রাল কেমিক্যাল ল্যাবরেটরি, ইউরেনিয়াম কনভারশন প্রকল্প, তেহরান রিয়্যাক্টর ফুয়েল ম্যানুফ্যাকচারিং প্ল্যান্ট, ইউএফ৪ (ইউরেনিয়াম টেট্রাফ্লুয়োরাইড) থেকে ইইউ মেটাল প্রসেসিং ফেসিলিটি (নির্মীয়মাণ)— এগুলিতে হানা চলেছে।’’
গ্রসি এ-ও জানিয়েছেন যে, ইরানে এখনও রাষ্ট্রপুঞ্জ নিয়ন্ত্রিত এই সংস্থা রয়েছে। আগামী দিনেও থাকবে। নিরাপত্তার স্বার্থে পর্যবেক্ষণও চলবে।
গত শুক্রবার ইরানের পরমাণুকেন্দ্রগুলি লক্ষ্য করে হামলা চালায় ইজ়রায়েলি সেনা। প্রত্যাঘাত করে ইরানও। তার পর থেকে দু’দেশের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। আন্তর্জাতিক বিধিনিষেধ ভেঙে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি চালানোর অভিযোগ উঠেছে ইরানের বিরুদ্ধে। ইজ়রায়েলের দাবি, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির দোরগোড়ায় পৌঁছে গিয়েছে। শীঘ্রই ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরি করে ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করছে ইজ়রায়েল। যদিও ইরানের দাবি, তারা বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং অন্যান্য শান্তিপূর্ণ কর্মকাণ্ডের জন্যই পারমাণবিক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে।