আছড়ে পড়তে পারে শরণার্থীর ঢেউ, ত্রস্ত ট্রাম্প

কেউ শুয়ে রয়েছে রেললাইনের উপরে। কেউ বা বাবার কাঁধে চেপে পার হচ্ছে নদী। ভিড়ে ঠাসা শরণার্থী শিবিরের মাটিতে বসে কেউ শুকনো রুটিতে কামড় দিচ্ছে।

Advertisement

 সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৮ ০১:১৩
Share:

অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ: মেক্সিকো-গুয়াতেমালা সীমান্তে হন্ডুরাসের শরণার্থী শিশুরা। এপি, রয়টার্স

কেউ শুয়ে রয়েছে রেললাইনের উপরে। কেউ বা বাবার কাঁধে চেপে পার হচ্ছে নদী। ভিড়ে ঠাসা শরণার্থী শিবিরের মাটিতে বসে কেউ শুকনো রুটিতে কামড় দিচ্ছে। কেউ বসে আছে খুদে ভাইকে কোলে নিয়ে। মাস দুয়েক থেকে বছর দশ-বারো— এই তাদের বয়স। এই শিশু আর তাদের মা-বাবারাই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে ‘বেআইনি ভিন্‌গ্রহের প্রাণী’!

Advertisement

মধ্য আমেরিকার হন্ডুরাস, গুয়াতেমালা এবং এল সালভাদর। ‘উত্তুরে ত্রিভুজ’ নামে পরিচিত এই দেশ তিনটি চিরকালই গোষ্ঠী সংঘর্ষের জন্য কুখ্যাত। আর গত কয়েক বছরে এই অঞ্চলে অপরাধের মাত্রা কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে। যার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে দেশছাড়াদের সংখ্যাও।

সব চেয়ে শোচনীয় পরিস্থিতি হন্ডুরাসে। রাষ্ট্রপুঞ্জের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর জানাচ্ছে, ২০১১ সালের আগে পর্যন্ত বছরে শ’দেড়েক মানুষ নিরাপত্তার খোঁজে হন্ডুরাস ছাড়তেন। ২০১৬ সালে সেই সংখ্যাটা বেড়ে হয় ৩ লক্ষ ৮৮ হাজার। অর্থাৎ ঘরছাড়া শরণার্থীর সংখ্যা পাঁচ বছরে আড়াই হাজার গুণ বেড়ে গিয়েছে। তার পর গত দু’বছরে সংখ্যাটা আরও লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে।

Advertisement

দেশ ছেড়ে কোথায় যাচ্ছেন হন্ডুরাসের শরণার্থীরা? দেখা যাচ্ছে, তাঁদের গন্তব্য, গুয়াতেমালা পেরিয়ে মেক্সিকো। গত কয়েক দিন ধরে মানুষের ঢল নেমেছে গুয়াতেমালা-মেক্সিকো সীমান্তে। মূলত, সুচিয়েত নদীর সেতু পেরিয়েই তাঁরা মেক্সিকোয় ঢুকছেন। অনেকে আবার সাঁতরে বা নৌকো করে নদী পেরোনোর চেষ্টা করছেন। শরণার্থীদের আটকাতে এই সীমান্তটি বন্ধ করে দিয়েছিল মেক্সিকো পুলিশ। শরণার্থীরাই সেই বেড়া ভেঙে ফেলেছেন। গত দু’দিনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত হন অনেক শরণার্থী। তবু এগিয়েই চলেছে মানব ক্যারাভান।

আর এটাই চিন্তায় ফেলে দিয়েছে ট্রাম্পকে। কয়েক লক্ষ শরণার্থী এক বার মেক্সিকোয় ঢুকে পড়লে তাঁদের আমেরিকা সীমান্তে পৌঁছনো শুধু সময়ের অপেক্ষা। গত কয়েক দিনে হন্ডুরাস, এল সালভাদর, গুয়াতেমালা ও মেক্সিকোর রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে বেশ

কয়েক বার কথা বলেন। জানান, শরণার্থীদের আটকাতে না পারলে ফল ভাল হবে না। কাল গুয়াতেমালায় জরুরি বৈঠকেও বসেছিলেন হন্ডুরাস ও গুয়াতেমালার প্রেসিডেন্ট। কিন্তু কী ভাবে শরণার্থীদের ফেরানো যায়, তার কোনও সমাধানসূত্র বেরোয়নি। বিরক্ত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কাল রাতে টুইট করেন, ‘‘দেশের দক্ষিণ সীমান্তে বেআইনি ভিন্‌গ্রহের প্রাণীদের অনুপ্রবেশ আমরা আটকাবই।’’

বলছেন ট্রাম্প। শুনছে কে! এগিয়েই চলেছে শরণার্থী-ক্যারাভান। মুখে জনপ্রিয় স্প্যানিশ গান— ‘সি সে পুয়েদো... হ্যাঁ, আমরা পারবই।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন