ইমরান খান।—ফাইল চিত্র।
ইসলামাবাদ সন্ত্রাসে মদত জোগাচ্ছে বলে বার বার অভিযোগ তুলছে দিল্লি। তার জেরে আটকে গিয়েছে ভারত-পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক বৈঠক। নাশকতায় ইন্ধন জোগানো বন্ধ না করলে শান্তিপূর্ণ বৈঠক সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিয়েছে ভারত। কিন্তু দুই দেশের মধ্যে আলোচনা না এগনোর দায় একা ভারতের ঘাড়েই চাপিয়ে দিলেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তাঁর দাবি, সামনে লোকসভা নির্বাচন। তাই আলোচনায় বসতে চায় না মোদী সরকার। ভোট হাতছাড়া হওয়ার ভয় রয়েছে ওদের।
সম্প্রতি তুরস্কের সংবাদ সংস্থা টিআরটি ওয়ার্ল্ডকে সাক্ষাত্কার দেন পাক প্রধানমন্ত্রী। সোমবার রাতে সেটি সম্প্রচারিত হয়। তাতেই এমন মন্তব্য করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। দুই পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র যুদ্ধে জড়ালে পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হতে পারে বলেও সতর্কবার্তা দিতে দেখা যায় তাঁকে। ইমরান বলেন, “আগেও বলেছি, আবারও বলছি, দুই পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রের মধ্যে যুদ্ধ কখনওই কাম্য নয়। তা আত্মঘাতী হওয়ার সমান। ঠাণ্ডা যুদ্ধও চালিয়ে যাওয়া উচিত নয়। কারণ যে কোনও মুহূর্তে বিপদ ঘনিয়ে আসতে পারে। বিরোধ যত গুরুতরই হোক না কেন, একমাত্র দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের মাধ্যমেই তার সমাধান সম্ভব।”
বৈঠক না হওয়ার জন্য সরাসরি ভারতকে দায়ী করেন ইমরান। তিনি বলেন “একাধিকবার আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়েছি আমি। কিন্তু তাতে সাড়া দেয়নি ভারত। বরং সন্ত্রাস এবং আলোচনা একসঙ্গে চলতে পারে না বলে বারবার অজুহাত দেখিয়েছে। শান্তির দিকে এককদম এগোতে বলেছিলাম ওদের। পরিবর্তে দু’কদম এগোতে রাজি ছিলাম। কিন্তু বারবার সেই প্রস্তাব খারিজ করেছে তারা। এপ্রিলে আবার নির্বাচন ভারতে। এই মুহূর্তে বৈঠকের প্রশ্নই ওঠে না। পাকিস্তান বিরোধী মনোভাব বজায় রাখলে তবেই না ভোট মিলবে!”
আরও পড়ুন: পাতালেও ধুন্ধুমার! নজিরবিহীন ভাবে ময়দানে মেট্রো আটকালেন ধর্মঘট সমর্থকরা
আরও পড়ুন: নাগরিকদের লাঠিপেটা করে তাড়াচ্ছেন ‘মোদী’! মুখোশ পরে ‘নাটকীয়’ প্রতিবাদ তৃণমূলের
ভারতের বিরুদ্ধে অজুহাত দেখানোর অভিযোগ তুলেছেন বটে ইমরান, তবে ভারত একা নয়। কারণ সন্ত্রাসের জেরেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকেছে। আফগানিস্তান সমেত প্রতিবেশী দেশগুলিতে ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসে মদত জোগানোর অভিযোগ তুলেছে ওয়াশিংটন। যে কারণে সামরিক অনুদানও বাতিল করেছে। তবে অভিযোগ মানতে নারাজ ইমরান। তাঁর দাবি, আফগানিস্তানে শান্তি ফিরিয়ে আনার পক্ষে ইসলামাবাদও। তবে আর অন্যের হয়ে যুদ্ধ লড়বে না তারা। এতদিন মার্কিন সরকারের হয়ে লড়তে গিয়ে চরম মূল্য চোকাতে হয়েছে পাকিস্তানকে, যা আজও কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা চলছে।
মার্কিন সরকারের সমালোচনা করলেও চিনের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন ইমরান খান। সে দেশে উইঘুর মুসলিমদের উপর অত্যাচারের সমালোচনা তো দূর, বরং উল্টে সাফাই দিতে দেখা যায় তাঁকে। তিনি বলেন, ‘‘প্রকাশ্যে চিনের সমালোচনা করতে পারব না আমি। বিষয়টি অন্যভাবে দেখব। পাকিস্তানকে অন্ধকার থেকে বের করে আনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ওদের।’’