বাঁচল লন্ডনের ‘এক টুকরো ইতিহাস’

স্ট্র্যান্ডের বাড়িটির মালিক মার্স্টন প্রপার্টিজ় সম্প্রতি ওয়েস্টমিনস্টার প্ল্যানিং কমিটির কাছে আর্জি জানিয়েছিল, যাতে নীচের তলার ক্লাবটি ভেঙে ফেলা যায়। বাড়িটির দোতলায় একটি হোটেল রয়েছে। সেই হোটেলটির আধুনিকীকরণ ও আরও ঘর বাড়ানোর জন্যই ক্লাবের ঘরগুলো ভেঙে ফেলার আর্জি জানিয়েছিল তারা।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

লন্ডন শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৮ ০২:০১
Share:

ঐতিহাসিক: লন্ডনের ইন্ডিয়া ক্লাব। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

আপাতত রক্ষা পেল লন্ডনের ‘ইন্ডিয়া ক্লাব’। ক্লাবটি ভেঙে ফেলে সেই জায়গায় হোটেল বানানোর আবেদন খারিজ করে দিয়েছে ওয়েস্টমিনস্টার সিটি কাউন্সিলের প্ল্যানিং সাব-কমিটি। মঙ্গলবার এই কমিটির তরফে জানানো হয়, ঐতিহ্যশালী এই ক্লাব লন্ডনের ইতিহাস ও সংস্কৃতির অঙ্গ। তাই সেটি ভেঙে ফেলা যাবে না।

Advertisement

টেমস নদীর উত্তর পাড়ে, ১৪৩-১৪৫ নম্বর স্ট্র্যান্ডের একটি ছ’তলা বাড়ির নীচের তলা জুড়ে রয়েছে ইন্ডিয়া ক্লাব। ১৯২০-র দশকে লন্ডনের ভারতীয়দের মেলামেশার জন্য যে ‘ইন্ডিয়া লিগ’ তৈরি হয়েছিল, সেটিকেই ১৯৪৬-এ ‘ইন্ডিয়া ক্লাব’ নাম দেওয়া হয়। ক্লাবের প্রথম প্রেসিডেন্ট ছিলেন ব্রিটেনে ভারতের প্রথম রাষ্ট্রদূত ভি কে কৃষ্ণ মেনন। জওহরলাল নেহরু ও লেডি এডউইনা মাউন্টব্যাটেনও ছিলেন এই ক্লাবের প্রথম যুগের সদস্য। ১৯৬৪-এ স্ট্র্যান্ডের এই ঠিকানায় চলে আসে ক্লাবটি। তবে শুধু ঐতিহাসিক গুরুত্বই নয়, ‘খাঁটি’ ভারতীয় রান্নার জন্য ক্লাবটি এই প্রজন্মের লন্ডনবাসীর কাছেও যথেষ্ট জনপ্রিয়।

স্ট্র্যান্ডের বাড়িটির মালিক মার্স্টন প্রপার্টিজ় সম্প্রতি ওয়েস্টমিনস্টার প্ল্যানিং কমিটির কাছে আর্জি জানিয়েছিল, যাতে নীচের তলার ক্লাবটি ভেঙে ফেলা যায়। বাড়িটির দোতলায় একটি হোটেল রয়েছে। সেই হোটেলটির আধুনিকীকরণ ও আরও ঘর বাড়ানোর জন্যই ক্লাবের ঘরগুলো ভেঙে ফেলার আর্জি জানিয়েছিল তারা। ওয়েস্টমিনস্টার সিটি কাউন্সিলের কাছে পাল্টা আবেদন জানান ক্লাবের মালিক ইয়াদগার মার্কার ও তাঁর মেয়ে ফিরোজ়া। ‘সেভ ইন্ডিয়া ক্লাব’ নামে অনলাইনে একটি পিটিশন চালু করে সই সংগ্রহও শুরু করেন পার্সি বংশোদ্ভূত মার্কাররা। কয়েক দিনেই ২৬ হাজারের বেশি সই জমা পড়ে এই পিটিশনের মাধ্যমে।

Advertisement

সেই আবেদনে কাজ হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে এক বৈঠকে প্ল্যানিং কাউন্সিলের চার সদস্য এক সুরে জানিয়েছেন, ক্লাব ভাঙা চলবে না। প্ল্যানিং সাব-কমিটির চেয়ারম্যান কাউন্সিলর টনি ডেভেনিশের কথায়, ‘‘আমাদের শহরে যে ভারতীয় ও ভারতীয় বংশোদ্ভূতরা রয়েছেন, তাঁদের কাছে এই ক্লাবের ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। এক টুকরো ইতিহাসটি রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব।’’ কাউন্সিলকে ধন্যবাদ জানিয়ে ফিরোজ়া মার্কার বলেন, ‘‘এ শহরে ব্রিটিশ ও ভারতীয়দের বন্ধুত্বের প্রতীক এই ক্লাব। ওয়েস্টমিনস্টারের বহুজাতিক সংস্কৃতির পরিচায়কও বটে।’’ মার্স্টন প্রপার্টিজ়ের ক্যারোলাইন মার্স্টনের দাবি, হোটেলের আধুনিকীকরণ তাঁরা করবেনই। কী ভাবে ফের প্ল্যানিং কমিটির কাছে আবেদন করা যায়, এখন সেটাই ভাবছেন। নীচের তলাটি কুড়ি বছরের জন্য ভাড়া নিয়েছিলেন ফিরোজ়া মার্কাররা। ২০১৯-এই সেই লিজ়ের সময়সীমা শেষ হচ্ছে।

তবু আপাতত স্বস্তিতে ইন্ডিয়া ক্লাব। খুশি ক্লাবের অনুরাগীরাও। ব্রিটিশ পপ গায়িকা ফিয়োনা স্ট্যানিল্যান্ড টুইট করে জানান, ‘‘যাক বাবা। ইন্ডিয়া ক্লাবের অনবদ্য এগ কারি ছাড়া থাকব কী করে!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন