Deportation Case in UK

‘ব্রিটেন থেকে চলে যান’! গবেষণার জন্য নিয়মভঙ্গে অভিযোগ, বিপদে অক্সফোর্ডের বাঙালি গবেষক

৩৭ বছর বয়সি মণিকর্ণিকা দত্ত অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করেছেন। তাঁর গবেষণার বিষয় ছিল, ঔপনিবেশিক শাসনে ভারতের বিভিন্ন শহরের মানুষের স্বাস্থ্য সম্পর্কে অধ্যয়ন করা। প্রশ্ন উঠছে, মেধাবি এক ইতিহাসবিদকে কেন তাড়িয়ে দিতে চাইছে ব্রিটেন প্রশাসন?

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২৫ ১৫:৪৪
Share:

ভারতীয় ইতিহাসবিদ মণিকর্ণিকা দত্ত। ছবি: পিটিআই।

গবেষণার জন্য ভারতে ‘অতিরিক্ত সময়’ ব্যয় করেছেন তিনি! অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারতীয় ইতিহাসবিদকে এ বার ব্রিটেন থেরে ‘বিতাড়িত’ করার ভাবনাচিন্তা শুরু হল। সেই দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ওই ইতিহাসবিদকে ১০ বছরের জন্য নির্বাসিত করার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে বলে খবর।

Advertisement

৩৭ বছর বয়সি মণিকর্ণিকা দত্ত অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করেছেন। তাঁর গবেষণার বিষয় ছিল, ঔপনিবেশিক শাসনে ভারতের বিভিন্ন শহরের মানুষের স্বাস্থ্য সম্পর্কে অধ্যয়ন করা। গবেষণা শেষ করে বর্তমানে তিনি ‘ইউনিভার্সিটি কলেজ ডাবলিন’-এর অধ্যাপিকার দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। প্রশ্ন উঠছে, এত মেধাবি এক ইতিহাসবিদকে কেন বিতাড়ন করতে চাইছে ব্রিটিশ প্রশাসন? সেই দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নিয়ম অনুযায়ী, যাঁরা ১০ বছর এবং তার বেশি সময় ধরে ব্রিটেনে থাকেন, তবে তারা সেখানে স্থায়ী ভাবে বসবাসের আবেদন করতে পারেন। তবে সেই ১০ বছরে তিনি সর্বাধিক ৫৪৮ দিন ব্রিটেন ছেড়ে অন্য দেশে থাকার অনুমতি পান। ব্রিটেনে স্থায়ী ভাবে বসবাসের জন্য অভিবাসীদের সেই ‘শর্ত’ মানতে হয়। তবে ‘গার্ডিয়ান’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, মণিকর্ণিকা মোট ৬৯১ দিন ব্রিটেনের বাইরে ছিলেন।

মণিকর্ণিকা, তাঁর স্বামী শিক্ষাবিদ সৌভিক নাহার সঙ্গে দক্ষিণ লন্ডনে বসবাস করতেন। কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী, তিনি আর ব্রিটেনে থাকতে পারবেন না। ব্রিটেন ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য একটি ইমেল পেয়েছেন মণিকর্ণিকা। তিনি বলেন, ‘‘আমি ব্রিটেনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করেছি। সেখানে ১২ বছর ধরে বাস করছি। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পর থেকে ব্রিটেনে থাকছি।’’ এমন ইমেল পাওয়ায় তিনি হতবাক। তাঁর কথায়, ‘‘আমি কখনও ভাবিনি যে আমার সঙ্গে এমন ঘটবে।’’ মণিকর্ণিকার আইনজীবী জানান, গবেষণার জন্য ভারতে যাওয়া তাঁর নিজের ইচ্ছায় নয়। শিক্ষাগত প্রয়োজনে এবং প্রাতিষ্ঠানিক বাধ্যবাধকতা পূরণের জন্য তাঁর ভারতে যাওয়া অপরিহার্য ছিল। তা না হলে, তিনি তাঁর গবেষণাপত্র শেষ করতে পারতেন না।

Advertisement

মণিকর্ণিকা ২০১২ সালে সেপ্টম্বর মাসে পড়ুয়া ভিসা নিয়ে ব্রিটেনে যান। তার পর বিয়ের পর সৌভিক এবং মণিকর্ণিকা, দু’জনেই স্থায়ী দীর্ঘ দিন ধরে বসবাসের ভিসা পান। তাঁদের ১০ বছরের বৈবাহিক জীবন। দীর্ঘ দিন ধরে থাকার কারণে গত বছরের অক্টোবরে ব্রিটেনে অনির্দিষ্টকাল বসবাসের আবেদন করেন স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই। সৌভিকের আবেদন মঞ্জুর হলেও, মণিকর্ণিকার আবেদন খারিজ হয়। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনিক পর্যালোচনা করতে পুনরায় তিনি আবেদন করেছিলেন। কিন্তু সেই দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক তা প্রত্যাখ্যান করে। বলা হয়, ‘‘আপনাকে এখনই ব্রিটেন ছেড়ে চলে যেতে হবে। আপনি যদি স্বেচ্ছায় যেতে না চান, তবে ১০ বছর ব্রিটেনে আসার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি হতে পারে।’’ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন মণিকর্ণিকা। বিষয়টি এখনও আদালতে বিচারাধীন। বর্তমানে ব্রিটেনে বসবাস করলেও মণিকর্ণিকা কলকাতারই কন্যা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement