IL&FS Crisis

ইথিওপিয়ায় বেতন না পাওয়া কর্মীদের হাতে পণবন্দি IL&FS-এর ৭ ভারতীয়

নজর এড়িয়ে কোনওরকমে টুইটারের মাধ্যমে ভারত সরকারের কাছে বার্তা পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছেন পণবন্দিদের মধ্যে একজন। মোদী সরকারের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেছেন তিনি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

আদ্দিস আবাবা শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৮ ১৪:০৭
Share:

পণবন্দি ৭ জন ‘আইএল অ্যান্ড এফএস’-এর কর্মী।—ফাইল চিত্র।

বেতন দেয়নি ভারতীয় সংস্থা। তা নিয়ে বিক্ষোভ ইথিওপিয়ায়। কর্তৃপক্ষের নাগাল মেলেনি। তাই স্থানীয় কর্মীদের রাগ গিয়ে পড়েছে সংস্থার ভারতীয় কর্মীদের উপরই। সংস্থায় কর্মরত ৭ ভারতীয়কে ২৫ নভেম্বর থেকে পণবন্দি করে রেখেছে তারা। তাদের নজর এড়িয়ে কোনওরকমে টুইটারের মাধ্যমে ভারত সরকারের কাছে বার্তা পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছেন পণবন্দিদের মধ্যে একজন। মোদী সরকারের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেছেন তিনি। বিষয়টি নজরে পড়তেই নড়ে চড়ে বসেছে বিদেশমন্ত্রক। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছে তারা।

Advertisement

২৯ নভেম্বর রাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ এবং রাষ্ট্রপতি ভবনের উদ্দেশে টুইটারে জরুরি বার্তা পোস্ট করেন নীরজ রঘুবংশী নামের এক ব্যক্তি। পরিকাঠামো এবং অর্থনৈতিক পরিষেবা প্রদানকারী ভারতীয় সংস্থা ‘আইএল অ্যান্ড এফএস’ সংস্থার ইথিওপিয়া শাখার কর্মী হিসাবে নিজের পরিচয় দেন তিনি।

জানান, ‘আইএল অ্যান্ড এফএস সংস্থা বেতন দেয়নি। সেই কারণে আমাদের সাতজনকে পণবন্দী করে রেখেছে ইথিওপিয়ার স্থানীয় মানুষ। কিন্তু এতে আমাদের দোষ কোথায়? গত পাঁচ মাস ধরে আমরা নিজেরাই বেতন পাইনি। মারাত্মক কিছু ঘটে যাওয়ার আগে দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন।’

Advertisement

নীরজ রঘুবংশীর টুইট।

আরও পড়ুন: ‘অযোধ্যা চাই না, ঋণ মকুব করা হোক’, স্লোগান দিতে দিতে সংসদ অভিযানে হাজার হাজার কৃষক​

স্পেনীয় সংস্থা ‘এলসামে’ এবং ‘একোআসফা’-র সঙ্গে হাত মিলিয়ে সম্প্রতি ইথিওপিয়ায় মোটা অঙ্কের সড়ক নির্মাণ এবং মেরামত প্রকল্পের বরাত পেয়েছিল ‘আইএল অ্যান্ড এফএস’-এর সড়ক নির্মাণ বিভাগ। কিন্তু আচমকা সেই প্রকল্প বাতিল হয় যায়। এ দিকে আগে থেকেই ১২৬০ কোটি মার্কিন ডলার দেনার দায়ে ধুঁকছিল ‘আইএল অ্যান্ড এফএস।’ যে ঋণ আজও শোধ করেনি তারা। তাই কোটাক মহিন্দ্রা ব্যাঙ্কের ভাইস চেয়ারম্যান উদয় কোটাক তাদের নগদ জোগাতে গেলেও আটকে দেয় ভারত সরকার। এই পরিস্থিতিতে পাওনাদারদের বকেয়া টাকা মেটাতে ব্যর্থ হয় তারা। তাতেই নাকি ঝামেলার সূত্রপাত। সেই নিয়ে সংস্থার কর্মীদের তরফে ইতিমধ্যেই ভারতীয় এবং স্পেনীয় রাষ্ট্রদূতদের ইমেল করা হয়েছে। চিঠি দেওয়া হয়েছে ইথিওপিয়ার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রক, ‘আইএল অ্যান্ড এফএস’ কর্তৃপক্ষ এবং বিশ্বব্যাঙ্কের প্রতিনিধিদেরও। তাতে তাঁরা জানান, ‘‘বেশ কিছু প্রকল্প বাতিল হয়ে গিয়েছে। নাগাল মিলছে না সংস্থার উপর মহলের লোকজনেরও। তাতেই উত্তেজনা ছড়িয়েছে। কর্মীদের আটকে রাখলে সংস্থার কর্তৃপক্ষ তাঁদের পাওনা মিটিয়ে দিতে বাধ্য হবে বলে ধারণা জন্মেছে স্থানীয় মানুষের মনে। তাই ২৫ নভেম্বর থেকে ওরোমিয়া এবং আমহারার তিনটি আলাদা আলাদা জায়গায় তাঁদের আটকে রাখা হয়েছে।’’ সময়মতো পাওনা মিটিয়ে দেওয়া হবে বলে স্থানীয় কর্মীদের আশ্বাস দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি বলে জানিয়েছেন তাঁরা। লাভ হয়নি কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেও। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার বিধিনিষেধের জেরে এই মুহূর্তে টাকা পাঠানো সম্ভব নয় বলে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বেতন না মেলায় পণবন্দি করা হয়েছে ওই সাতজনকে। গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।

আরও পড়ুন: বড় ধাক্কা, প্রথম টেস্ট থেকে ছিটকে গেলেন পৃথ্বী​

এ ব্যাপারে পদক্ষেপ করা তো দূর, প্রশাসন এবং পুলিশ স্থানীয় মানুষেরই পক্ষ নিয়েছে বলে চিঠিতে দাবি করেছেন তাঁরা। বিশদ জানতে ওরোমিয়ার পুলিশ কমিশনার জেনারেল এবং ওরোমিয়া ও আমহারার সরকারি মুখপাত্রের সলঙ্গে যোগাযোগ করেছিল বিভিন্ন ভারতীয় সংবাদমাধ্যম। কিন্তু একবারও ফোন তোলেননি তাঁরা। জবাব দেননি মেসেজেরও। তাঁদের পক্ষে এই মুহূর্তে কোনও মন্তব্য করা সম্ভব নয় বলে দায় এড়িয়ে গিয়েছেন ইথিওপিয়ার রাজস্ব মন্ত্রকের মুখপাত্র আদিস ইরগা এবং অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসের মুখপাত্র জিনাবু টুনু। ‘আইএল অ্যান্ড এফএস’ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরাও মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে ইথিওপিয়া সরকার এবং ‘আইএল অ্যান্ড এফএস’ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে আদ্দিস আবাবায় ভারতীয় দূতাবাস। পণবন্দীদের উদ্ধার করতে সবরকম চেষ্টা চালাচ্ছে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন