আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।
আমেরিকার প্রেসিডেন্টের নয়া অস্ত্র ‘বড় সুন্দর বিল’ (ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল) কি বাস্তবায়িত হবে? রবিবার রাতে মার্কিন হাউস বাজেট কমিটি এই বিলের পক্ষেই ভোট দিয়েছে। যদি এই বিলটি আইনে পরিণত হয়, তবে বিপদে পড়তে পারেন আমেরিকায় বসবাসকারী লক্ষ লক্ষ ভারতীয় এবং অনাবাসী ভারতীয়! নতুন আইন কার্যকর হলে, আমেরিকা থেকে নিজ নিজ দেশে পরিবারের কাছে টাকা পাঠানো আরও ব্যয়বহুল হতে চলেছে আমেরিকায় বসবাসকারী অনাবাসীদের জন্য।
আমেরিকায় এই বিল চালু করার বিষয়ে বার বার মুখ খুলেছেন ট্রাম্প। কী বলা হয়েছে এই বিলে? ১,১১৬ পাতার এই বিলে জোর দেওয়া হয়েছে কর কাঠামোর উপর। আমেরিকায় যাঁরা এইচ-১বি এবং গ্রিনকার্ড নিয়ে বসবাস করেন, তাঁরাই বেশি সমস্যায় পড়বেন। আমেরিকার নাগরিক নন, অথচ কর্ম বা ব্যবসা সূত্রে সেই দেশে থাকেন, তাঁরা নয়া কর কাঠামোর আওতায় পড়বেন। বিলে প্রস্তাব করা হয়েছে, মার্কিন নাগরিক নন, এমন ব্যক্তিরা যদি আমেরিকায় উপার্জিত টাকা নিজের দেশে পাঠাতে চান, তবে তার উপর পাঁচ শতাংশ কর চাপানো হবে। করের ব্যাপারে কোনও ছাড় সীমার কথা উল্লেখ করা হয়নি। অর্থাৎ যে কোনও পরিমাণ মূল্য পাঠালেই তাঁকে কর দিতে হবে! তবে কেউ যদি আমেরিকার নাগরিক হন, তবে তাঁর ক্ষেত্রে এই আইন প্রযোজ্য হবে না।
নয়া বিল আইনে পরিণত হলে আমেরিকায় বসবসকারী প্রায় ৪৫ লক্ষ ভারতীয় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন, যার মধ্যে প্রায় ৩২ লক্ষ ভারতীয় বংশোদ্ভূতও রয়েছেন। প্রস্তাবিত কর কাঠামো কেবল একটি ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। বিনিয়োগ থেকে আয় বা শেয়ার বাজারের আয়ও করের আওতায় পড়বে। অর্থাৎ ওই আয় থেকে প্রাপ্ত অর্থ আমেরিকা থেকে স্থানান্তরিত করার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে!
গত মার্চ মাসে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের (আরবিআই) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ সালে বিদেশ থেকে আসা ১১ হাজার ৮৭০ কোটি ডলারের একটা বড় অংশই আমেরিকা থেকে এসেছে। আরবিআইয়ের মতে, বিদেশ থেকে আসা অর্থের মধ্যে ২৮ শতাংশ অর্থাৎ ৩ হাজার ২০০ কোটি ডলার আমেরিকা থেকে ভারতে ঢুকেছে।
বিলটি নিয়ে ট্রাম্পের দলের মধ্যেই মতভেদ রয়েছে। গত শুক্রবার বিলটি নিয়ে ভোটাভুটির সময় ডেমোক্র্যাটদের পাশাপাশি পার্লামেন্টের পাঁচ রিপাবলিকান সদস্য বিলের বিপক্ষে ভোট দেন! ফলে বিলটি পাস হওয়ার ব্যাপারে ধাক্কা খায় ট্রাম্প সরকার। বিলটি আস্থাভোটের জন্য পাঠানো হয়। তবে তার আগে মার্কিন হাউস বাজেট কমিটি বিলটির পক্ষে ভোট দেওয়ায় কিছুটা সুবিধাই হল ট্রাম্পের।